রানিং স্টাফদের সংকট ৩ বছরেও কাটেনি

1

নিজস্ব প্রতিবেদক

পেনশন ও আনুতোষিক প্রদান নিয়ে সৃষ্ট সংকট না কাটলে আগামী ২৮ জানুয়ারি থেকে কর্মবিরতি চালানোর হুঁশিয়ারী দিয়েছে রেলওয়েতে কর্মরত রানিং স্টাফরা। গত রবিবার রেল স্টেশনের বিক্ষোভের পর গতকাল সকাল ১১টায় চট্টগ্রাম রেলওয়ে ব্যবস্থাপক (ডিআরএম) বরাবরে স্মারকলিপি প্রদান করেছে তারা। এসময় রানিং স্টাফরা আগামী ২৭ জানুয়ারির মধ্যে পার্ট অফ পে রানিং এলাউন্স এবং রানিং এলাউন্স যোগ করে পেনশন ও আনুতোষিক প্রদানে অর্থ মন্ত্রণালয় কর্তৃক সকল অসম্মতি প্রত্যাহার এবং নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত রানিং স্টাফদের নিয়োগপ্রাপ্ত রানিং স্টাফদের নিয়োগপত্রের বৈষম্যমূলক ১২ ও ১৩নং শর্ত বাতিল করে আদেশ জারি করার দাবি জানায়।
রানিং স্টাফরা জানান, রানিং কর্মচারীদের রানিং এলাউন্স যা মূল বেতনের অংশ, তা যোগ করে পেনশন নির্ধারণের বিধান ১৬০ বছরেরও বেশি সময় যাবত চলমান। অথচ গত সরকারের আমলে নিজেদের দুর্নীতি ও অর্থ অপচয় ঢাকতে অর্থ মন্ত্রণালয় ২০২১ সালের ৩ নভেম্বর এক পত্রে রেলওয়ের রানিং স্টাফদের রানিং এলাউন্স কিছু ক্ষেত্রে রহিত ও কিছু ক্ষেত্রে খর্ব করে। যা রেলের কোড ও বিধি বিধানের সাথে সাংঘর্ষিক।
রানিং স্টাফদের আন্দোলনের মুখে ২০২২ সালের ২৪ জানুয়ারি রেলওয়ে সংস্থাপন কোডের বিধান অনুযায়ী রানিং এলাউন্স প্রদানের সিদ্ধান্দ দেয়। কিন্তু রানিং এলাউন্স যোগ করে পেনশন ও আনুতোষিক প্রদানে অসম্মতি জ্ঞাপন করে অর্থ মন্ত্রণালয়। ২০২২ সালের ১০ এপ্রিল আবারও অনাপত্তি দিলে ট্রেন চলাচল বন্ধ করে আন্দোলনে নামে রানিং স্টাফরা। পরবর্তীতে আদেশ প্রত্যাহার করে রানিং এলাউন্স যোগ করে পেনশন ও আনুতোষিক প্রদান করার কথা থাকলেও আগের অসম্মতি প্রত্যাহার হয়নি মর্মে জটিলতা সৃষ্টি করা হচ্ছে। লিখিতভাবে কোন পত্র জারি না করায় রানিং স্টাফরা হতাশায় ভুগছেন। সর্বশেষ গত ৩১ অক্টোবর ও ৯ ডিসেম্বর দুই দফা সমস্যা সমাধানের প্রতিশ্রুতি দিলেও তা বাস্তবায়ন করেনি। যে কারণে পুনরায় আন্দোলনে নামে রানিং স্টাফরা।
রেলওয়ে সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘ কর্মঘণ্টার কারণে রানিং স্টাফরা পর্যাপ্ত বিশ্রাম পাচ্ছেন না, যা ট্রেন চলাচলের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা তৈরি করছে। এ কারণে অনেক রানিং স্টাফ চাকরি ছেড়ে চলে যাচ্ছেন। দুই হাজার ২৩৫ জন রানিং স্টাফ পদ থাকলেও বর্তমানে এক হাজার ১৩৫ জন কাজ করছেন। এর আগেও মাইলেজের দাবিতে রানিং স্টাফরা আংশিক কর্মবিরতি পালন করেন। এতে ট্রেনের সময়সূচিতে বিপর্যয় ঘটে এবং যাত্রীরা চরম ভোগান্তিতে পড়েন। চলতি ডিসেম্বর মাসেও রানিং স্টাফদের কর্মসূচির কারণে বেশ কয়েকটি মেইল ও কমিউটার ট্রেন চলাচল বন্ধ ঘোষণা করতে হয়েছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষকে।
বাংলাদেশ রেলওয়ে রানিং স্টাফ ঐক্য পরিষদ চট্টগ্রাম বিভাগের আহব্বায়ক মো. মজিবুর রহমান ভুঁইয়া পূর্বদেশকে বলেন, ‘মিমাংসিত একটি বিষয় নিয়ে বারবার জটিলতা সৃষ্টি করা হচ্ছে। নতুন রানিং স্টাফদের নিয়োগপত্রের বিধি বহির্ভূত ও বৈষম্যমূলক ১২ ও ১৩নং শর্ত বাদ দিতে হবে। এই বেআইনী শর্ত দিয়ে ২০২২ সাল থেকে নিয়োগকৃত এবং বিভাগীয় পদোন্নতি প্রাপ্ত রানিং স্টাফদের রানিং এলাউন্স প্রাপ্তিতে বঞ্চিত করা হচ্ছে।’