রাঙ্গুনিয়ায় পাহাড়ি-বাঙালিদের মিলনমেলা

25

মাসুদ নাসির, রাঙ্গুনিয়া

রাঙ্গুনিয়ায় প্রচন্ড গরমেও শতবর্ষী ক্ষেত্রপাল মেলায় উপচেপড়া জনসমাগম ঘটেছে। বাংলা বছরের শেষদিন উপজেলার স্বনির্ভর রাঙ্গুনিয়া ইউনিয়নের সাবেক রাঙ্গুনিয়া ক্ষেত্রপাল বাড়ি এলাকায় মেলাটি বসে প্রতিবছর। দুই দিনব্যাপি এই মেলায় চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে হাজার হাজার মানুষের সমাগম ঘটে। এই সমাগমে পাহাড়ি-বাঙালিদের মিলনমেলায় পরিণত হতে দেখা গেছে। কথিত আছে শত বছর আগে ক্ষেত্রপাল ঠাকুরকে স্বপ্নে দেখার পর ঠাকুরের মূর্তির সন্ধান পান। ওখানে মন্দির স্থাপনের পর দূর-দূরান্ত থেকে ভক্তরা পূজা দিতে আসলে কালক্রমে এটি মেলায় রূপ নেয়। তখন থেকে এটি ক্ষেত্রপাল মেলা নামে পরিচিতি পায়। অনেকেই এটিকে চৈত্র সংক্রান্তি মেলাও বলে থাকেন।
গত শনিবার দুপুরে সরেজমিনে মেলায় গিয়ে দেখা যায়, প্রচন্ড গরম আর তপ্ত রোদেও প্রচুর মানুষের সমাগম ঘটেছে। মেলায় ঢুকতে চোখে পড়ে বিনামূল্যে শরবত বিতরণ। ছোট ছোট দোকানিরা তাদের পসরা সাজিয়ে বসেছেন, ব্যস্ততা বেড়ে তা বিক্রিতেও। কেউ কেউ ক্ষেত্রপাল ঠাকুরের মন্দিরে পূজা দিতে ব্যস্ত।
ফটিকছড়ি উপজেলা থেকে এসেছেন তরুণ ঋত্বিক সাহা। তিনি বলেন, কয়েক বছর ধরে মেলায় নিয়মিত আসছি। প্রাচীন এই মেলায় বিপুল সংখ্যক মানুষের সমাগম ঘটে। এখানে আসলে মনে আলাদা শান্তি লাগে।
কথা হয় মেলার আয়োজক কমিটির প্রধান উপদেষ্টা নির্মল কান্তি দাশের সাথে। তিনি বলেন, শত বছর আগে থেকে শুরু হওয়া এই মেলায় ভক্তরা এসে মনোষ্কামনা পূরণ হওয়ার জন্য মন্দিরে রেশম (সূতা) বেঁধে দিয়ে যান। মনোবাসনা পূর্ণ হলে অনেকেই পরের বছর এসে সূতা খুলে দিয়ে যান। অনেকেই এখানে এসে কবুতর, ছাগল নিয়ে এসে ছেড়ে দেন। প্রতি বছর রাঙ্গুনিয়া ছাড়াও চট্টগ্রাম, পার্বত্য চট্টগ্রাম ও দেশের অন্যান্য অঞ্চল থেকে ভক্তরা আসেন; পূজো দেন। পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সনাতন ধর্মে বিশ্বাসী ত্রিপুরা সম্প্রদায় আসেন দলবল নিয়ে। এছাড়া মুসলিমসহ অন্যান্য ধর্মের লোকজন মেলায় এসে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বন্ধনকে মজবুত করেন। মেলার আয়োজক কমিটির সাধারণ সম্পাদক নিউটন বিশ্বাস বলেন, মেলায় আগত দর্শণার্থী ও ভক্তদের সুবিধার জন্য নানা পদক্ষেপ নেয়া হয়।
স্বনির্ভর রাঙ্গুনিয়া ইউপির চেয়ারম্যান মো. নুর উল্লাহ বলেন, মেলা সুশৃঙ্খল, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে শেষ করতে আমরা সার্বিক সহায়তা দিচ্ছি। পুলিশের বিশেষ তদারকিও রয়েছে মেলাজুড়ে।