রাঙ্গুনিয়ায় হাইব্রিড মরিচচাষে কৃষকের বাড়তি লাভ

1

মাসুদ নাসির, রাঙ্গুনিয়া

সবুজ মরিচ গাছে থোকায় থোকায় মরিচ। ডাল পালায়ও মরিচের ভারে গাছ যেন নুয়ে পড়ছে। পাতার চেয়ে মরিচের সংখ্যা বেশি। কৃষক যে মরিচ চাষে স্বপ্ন বুনেছেন তাতে শতভাগ সফল। চাষ করতে যা খরচ হযেছে তার তিন গুণ উঠে আসবে বলে জানালেন বেতাগীর মরিচ চাষি আহম্মদ হোসেন। তিনি জানান, অসাধারণ ফলন হয়েছে হাইব্রিড মরিচের। আমাদের হাই ব্রিড মরিচ চাষ এখন এলাকায় একটি লাভের ফসল।
যেখানে স্থানীয় মরিচের চাষ করে কৃষকরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন, সেখানে হাইব্রিড মরিচ চাষ করে অধিক লাভের মুখ দেখেছেন রাঙ্গুনিয়ার শতাধিক হাইব্রিড মরিচ চাষি। বাজারে এ মরিচের চাহিদাও বাড়ছে।
জানা যায়, এখন প্রতিটি মরিচ গাছেই ১.৫-২ কেজি পরিমাণ মরিচ ধরেছে। তিনি আশা করছেন প্রতিটি গাছে আরো অনেকদিন পর্যন্ত নতুন করে ফলন আসবে। তিনি এক বিঘা জমিতে হাইব্রিড (শুকনা মরিচ) জাতের চাষ করেছেন।
রাঙ্গুনিয়া উপজেলার বেতাগী ইউনিয়ের রামগতি হাট সংলগ্ন কৃষক দিদারুল আলম জানান, স্থানীয় জাতের মরিচের চাষাবাদ করে তার ফলনও কম হযেছে। এতে আমরা অনেক চাষি অর্থনেতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। এমনি মৌসুমে বাজারে মরিচের দাম পাওয়া যাচ্ছেনা। আমরা রাঙ্গুনিয়া কৃষি অফিসের পরামর্শে হাইব্রিড মরিচের চাষ করেছি। তাতে ফলনও ভালো পেয়েছি। মরিচের দামও পেয়েছি। আমাদের দেখাদেখিতে এলাকায় হাইব্রিড জাতের মরিচের চাষ করার আগ্রহ দেখাচ্ছে অনেকে।
তিনি জানান, সাধারণত ৫ কেজি কাঁচা মরিচ শুকালে এক কেজি শুকনা মরিচ পাওয়া যায়। হাইব্রিড জাতের মরিচ থেকে চার কেজি কাঁচা মরিচ শুকালে এক কেজি শুকনা মরিচ পাওযা যায়। হিসেবে প্রতি গাছ থেকে ৫শ গ্রাম শুকনা মরিচ পেতে পারে। তার জমি থেকে শুকনা মরিচ পেতে পারে প্রায় ৮শ থেকে ১ হাজার কেজি পর্যন্ত। যার বাজার মূল্য ৩২ হাজার- থেকে ৪০ হাজার টাকা পর্যন্ত (প্রতি কেজি ৪০০ টাকা হিসেবে)।
রাঙ্গুনিয়া পৌরসভার ঘাটচেক এলাকার কৃষক মো. নাছের জানান, আমিও রাঙ্গুনিয়ার কর্ণফুলী বালুচর এলাকায় হাই ব্রিড মরিচের চাষ করেছিলাম গত বছর অনেক ফলন হযেছে। হাইব্রিড মরিচ চাষ করে অর্থনৈতিক ভাবে লাভবান হয়েছি। সামনের মৌসুমে আবারও চাষ করার পরিকল্পনা আছে। অনেক সাথী ফসলের সাথে হাই ব্রিড মরিচ চাষ করা যায়।
উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা উত্তম কুমার শীল বলেন, কৃষক দিদারুল আলম চৌধুরী তার এলাকায় একজন আদর্শ কৃষক হিসেবে সুপরিচিত। তার আশেপাশে যারা স্থানীয় জাতের মরিচের চাষাবাদ করেছেন এ চাষাবাদে তারা খুবই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ইমরুল কায়েস জানান, হাইব্রিড মরিচ চাষ অল্প সময়ে কম পুঁজিতে অধিক লাভবান হওয়া যায়। এখানে অনেক জায়গায় হাই ব্রিড মরিচ চাষ করছে কৃষকরা। আমরা তাদেরকে সার্বিক পরামর্শ ও সহযোগিতা দিয়ে আসছি।