মাসুদ নাসির, রাঙ্গুনিয়া
রাঙ্গুনিয়ার বাণিজ্যিক কেন্দ্র চন্দ্রঘোনা লিচুবাগান, পা পেললেই মৌসুমের নানা বাহারি ফলের মৌ মৌ গন্ধে আপনাকে মৌসুমি ফল কেনার আবেদন জানাবে। কোনটা বাদ দিয়ে কোনটা কিনবেন সবগুলো সুস্বাধু। পরিবারের কথা চিন্তা করে আগত ক্রেতাদের লিচু কিংবা আম, আনারস, পেয়ারা কিনতে দেথা যায়। অনেকে অভিযোগ করেছেন, গত বছরের তুলনায় এবারে দাম বেশি নেওয়া হচ্ছে। এজন্য নি¤œ আয়ের মানুষ মৌসুমি ফল কিনতে সাহস করছেন না।
গত এপ্রিল থেকে রাঙ্গুনিয়ার বিভিন্ন হাট-বাজারে উঠতে শুরু করেছে মৌসুমি ফল আম, লিচু, কাঁঠাল, আনারস, তাল, পেঁপে, পেয়ারা, জাম তরমুজ ও বাঙ্গি। দোকানগুলোতে রয়েছে ব্যাপক মিষ্টি ফলমূল, যা চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে। তবে দাম বেশি হওয়ায় স্বল্প আয়ের মানুষের ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়ে গেছে এ ফলগুলো।
এদিকে আবহাওয়া রাতে ঠান্ডা, দিনে গরম হওয়ায় বিক্রি হচ্ছে কম। তবে বিক্রির পরিমাণ দিন দিন বাড়ছে বলে বলে জানান বিক্রেতারা। সরেজমিনে দেখা গেছে, রাঙ্গুনিয়ার ১৫টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভায় কিংবা সড়কের পাশের দোকানগুলোতে বিক্রি হচ্ছে আম জাম আনারস লিচু, তাল, পেয়ারা, আপেল, কমলা, কাঁঠাল, আঙ্গ্রু, মাল্টা, আনারসসহ মৌসুমি ফল বাঙ্গি ও তরমুজ। পাহাড়ের লেংড়া, হাড়ি ভাঙা, চোষা, ফজলী, আ¤্রপালিসহ নানা জাতের আম বাজারে উঠছে। আনারস, কাঁঠাল পেয়ারা, জাম সাথে রয়েছে। দেশি আম ৭০/৮০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। জাম কেজি ২শ টাকা, পেয়ারা ১৩০ টাকা থেকে দেড়শ টাকা আনারস ১ জোড়া ১শ থেকে ১২০ টাকা তরমুজ এর মিষ্টি কম হওয়ায় প্রতি তরমুজ এথনও ২শ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। আপেল, মোচাম্বি, আঙ্গুর ২শ থেকে আড়াইশ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, লিচু প্রতিশত ২শ থেকে আড়াইশ টাকা, তাল ১ জোড়া ৬০ থেকে ৭০ টাকা। তবে চড়া মূল্যের কারণে অনেকেই তা কিনতে পারছেন না। চন্দ্রঘোনা রিকশাচালক মো. রবি জানান, বাজারে নতুন ফল উঠলে মন চায় তা খেতে। কিন্তু ইচ্ছে থাকলে আর কী হবে। আমাদের আয় বুঝে ব্যয় করতে হয়। এতো দাম দিয়ে ফল কিনে খাওয়া সম্ভব হচ্ছে না।
চন্দ্রঘোনা পাঠান পাড়া গ্রামের রাজমিস্ত্রী সাদ্দাম হোসেন বলেন, চোখের সামনে নতুন ফল দেখে ছেলে-মেয়েদের জন্য কিনতে ইচ্ছা করে। কিন্তু দাম বেশি হওয়ায় কিনতে পারছি না। দাম কমলে তখন কিনবো।
লিচুবাগানের পাইকারী ব্যবসায়ী মো. মহি উদ্দিন জানান, স্থানীয়ভাবে বাঙ্গির তরমুজ লিচু আমের চাষাবাদ হয় না। আমরা দেশের নানা স্থান থেকে এসব মৌসুমি ফল কিনে আনি। তাই বিক্রিও করতে হচ্ছে বেশি দামে। নানা জাতের আম, জাম, লিচু, আনারস আর কয়েকদিন গেলে দাম কমে যাবে।
রোয়াজার হাটের খুচরো ফর ব্যবসায়ী মো. আনোয়ার জানান, এখানে নানা জাতের লিচু আসে। যেমন চায়না লিচু অত্যন্ত মিষ্টি ও সুস্বাধু। ১ শত লিচু ৩ শত টাকা। আবার কিছু লিছু আছে ১শত লিচু ১২০ টাকা। এগুরো টক, মিষ্টি কম। আমের প্রকারভেদ আছে, ল্যাংড়া, হাড়িভাঙা কেজি আড়াইশ টাকা। আবার দেশি আম ৮০ থেকে ৯০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে।
চন্দ্রঘোনা খ্রিষ্টিয়ান হাসপাতালের পরিচালক ডাক্তার প্রবীর খিয়াং জানান, মৌসুমি ফল স্বাস্থের জন খুবই উপকারী। রোগ প্রতিরোধে কাজ করে। রাঙ্গুনিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ইমরুল কায়েস জানান, রাঙ্গুনিয়ায় ব্যাপকভাবে আমের চাষ করা হলেও তা বাণিজ্যিকভাবে বিক্রি করছে না কৃষক। সামনে এখানে সব ফলের বাগান করার জন্য অনেকে এগিয়ে আসছেন। তখন বাহিরের ফল কিনতে হবে না।