মাসুদ নাসির রাঙ্গুনিয়া
রাঙ্গুনিয়া উপজেলার কর্ণফুলী নদীর চরে বুজ সবজি চাষের অঢেল ফলন হয়েছে। যেদিকে চোখ যায় সবজি আর সবজির চাষাবাদ। এখানে সব ধরনের সবজি চাষাবাদ করছে পৌরসভার ৯ ওয়ার্ডের শতাধিক কৃষক। শুধু সবজি চাষ করে বছরে লাভবান হয়েছে অর্থনেতিকভাবে। অনেকে বিদেশ থেকে চলে এসেছে শুধুমাত্র সবজি চাষ করার জন্য । অনেকে আগাম সবজি চাষ করে সবজির দাম পেয়েছেন এবং ভালো ফলন হয়েছে।
প্রবাস ফেরত ঘাটচেক এলাকার কৃষক মো. নাছির বলেন, ১০ হাজার টাকা খরচে ২০ শতক জমিতে হাইব্রিড মূলার চাষ করেছি। ফলনের ৩০ শতাংশ বিক্রি করেই খরচের দ্বিগুণ লাভ পেয়েছি। পুরোপুরি বিক্রি হলে প্রায় দেড় লাখ টাকা পাওয়ার আশা রয়েছে। আগামী মৌসুমে চাষ আরও বাড়ানোর পরিকল্পনা করছি।
উপজেলার চন্দ্রঘোনা কদমতলী এলাকার কৃষক আবদূল সাত্তার বলেন, শুধু এই কৃষি জমিতে আরও ২০ জন চাষি আগাম মূলার চাষ করেছেন এবং বাজারে বিক্রি করে বেশ লাভবান হয়েছেন।
রাঙ্গুনিয়ায় শীতের সবজি মূলা এবার আগেভাগে বাজারে চলে এসেছে। উপজেলার পোমরা, পদুয়া, পারুয়া, পৌরসভা, ইসলামপুর, রাজানগর ইউনিয়নসহ বিভিন্ন এলাকার চাষিরা মূলাসহ বিভিন্ন সবজির আগাম চাষ করে ভালো ফলন পেয়েছেন। বেশি দামে বিক্রি করতে পেরে খুশি তারা।
উপজেলা কৃষি কার্যালয় সূত্র জানায়, রাঙ্গুনিয়ায় ২২৫০ হেক্টর জমিতে শীতকালীন সবজি আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল। ইতিমধ্যেই ১৭০ হেক্টর জমিতে আগাম সবজি চাষাবাদ হয়েছে। এরমধ্যে আগাম জাতের মূলা এখন বাজারে বিক্রি হচ্ছে।
সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন কৃষি মাঠে গিয়ে দেখা গেছে, ক্ষেত থেকে মূলা তোলায় ব্যস্ত চাষিরা। অনেকে ক্ষেত থেকে তোলা মূলা ধুয়ে আঁটি বাঁধছেন বাজারে নিয়ে যাওয়ার জন্য। এসময় চাষিরা জানান, প্রতি একর মূলা চাষে ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত খরচ পড়ে। আর বাজার মূল্য অনুযায়ী প্রতি একর ক্ষেতের মূলা বিক্রি করে পাওয়া যায় এক থেকে দেড় লাখ টাকা।
রাজানগর এলাকার আরেক চাষি স্বপন দাশ জানান, তিনি ১৫ শতক জমিতে আগাম মূলা চাষাবাদ করেছেন। বীজ রোপণের ৩৫ থেকে ৪০ দিনের মধ্যে বর্তমানে ফলন এসে বিক্রির উপযুক্ত হয়েছে। মূলার আবাদের মধ্যেই এখন বারোমাসি মরিচ রোপণের প্রস্তুতি নিয়েছেন তিনি। মূলা বিক্রি শেষ হলে এরপর থেকে তিনি বাজারে আগাম মরিচ তুলতে পারবেন বলে আশা করেন।
ইসলামপুর রৈস্যাবিলি এলাকার কৃষক আবদুর করিম বলেন, ৫০ শতক জমিতে মূলা চাষ করে এখন বিক্রি শুরু করেছি। প্রতি কেজি ৮০ টাকা করে পাইকারি বিক্রি হচ্ছে। ইসলামপুর পুলিশ ক্যাম্প এলাকার কৃষক আবদুর জব্বার জানান, মূলার পাশাপাশি তিতকড়লা, লাউ, বরবটি আবাদ করে বাজারজাত করেছেন তিনি। ইতিমধ্যেই চাষাবাদের খরচ উঠে গেছে। খরচের কয়েকগুণ লাভ হবে বলে আশাবাদী তিনি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ইমরুল কায়েস বলেন, মূলার পাশাপাশি রাঙ্গুনিয়ায় আগাম জাতের অনেক সবজি আবাদ হয়েছে। আমরা কৃষকদের উৎসাহিত করে এবং মাঠে থেকে তাদের সহায়তা করে যাচ্ছি। আগাম এসব সবজির ফলনও হয়েছে ভলো। ভালো দাম পেয়ে চাষিরা অনেক খুশি।