রাঙামাটিতে যুব মহিলা লীগ নেত্রী মনিকা গ্রেপ্তার

1

রাঙামাটি প্রতিনিধি

স্থায়ী বাসিন্দা না হয়েও ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দাপটের সাথে রাঙামাটি শহরে চলাফেরা করতেন ‘মনিকা আপা’। রাঙামাটিতে ‘মনিকা আপা’ বললেই সবাই একনামে চেনেন তাকে। এই ‘মনিকা আপা’ ছিলেন অনেক ক্ষমতাধর। পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দাপটের সাথেই প্রশাসন থেকে রাজনীতির মাঠস- সব জায়গায় বিচরণ ছিল ‘মনিকা আপা’র। তার হাতের মুঠোয় থাকতেন তৎকালীন শীর্ষ আওয়ামী লীগ নেতারাও। সেই ‘মনিকা আপা’ গত সোমবার দুপুরে রাঙামাটি শহরের কলেজগেট এলাকায় অনৈতিক কাজে যুক্ত থাকার সময় জনতার হাতে ধরা পড়েন। জনতা তাকে পুলিশের হাতে তুলে দেন।
গত সোমবার দুপুরে জনস্মুখে কলেজগেট থেকে পুলিশের গাড়িতে তুলে কোতোয়ালী থানায় নিয়ে যাওয়া হয় মনিকা আক্তার প্রকাশ ‘মনিকা আপা’কে। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে বেশ কয়েকটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে এই যুব মহিলালীগ নেত্রীকে আদালতে সোপর্দ করা হয়।
জেলা মহিলা দলের আহব্বায়ক নুর জাহান মুঠোফোনে জানান, দীর্ঘ দিন ধরে মনিকা বিএনপি’র নেতা-কর্মীদের বিভিন্নভাবে হয়রানি করে আসছিল। এছাড়াও সে যে এলাকায় বসবাস করে সেখানে অনৈতিক কাজ করে। স্থানীয়রা সেটার প্রতিবাদ করলে মনিকা মামলা-হামলার হুমকি দেয়, হয়রানি করে। আওয়ামী যুব মহিলালীগের নেত্রী এমন ছিল যে- তাকে মানুষ খুব ভয় পেতো। অবশেষে জনগন ক্ষিপ্ত হয়ে পুলিশের হাতে তুলে দেন মনিকাকে। আমি নিজেও বাদী হয়ে তার বিরুদ্ধে মামলা করেছিলাম।
সূত্রে জানা যায়, গত ৫ আগস্টের আগে মনিকা আক্তার সাবেক মেয়র আকবর হোসেন চৌধুরীসহ জেলার শীর্ষ পর্যায়ের বেশ কিছু নেতাকে কব্জায় রাখতেন। সাবেক জেলা ছাত্রদল সভাপতি সাব্বির ফারুককে জেলেও পাঠিয়েছেন তিনি- এমন অভিযোগ স্থানীয় ছাত্রদল কর্মীদের। বিভিন্ন জনকে হুমকি-ধমকি দিয়ে তার আয়ত্তে¡ রাখতেন। নানান অসামাজিক কাজের নেতৃত্ব দিতেন। নিজেও নেতাদের খুশী করে চলতেন। তার ভয়ে আতংকে কেউ মুখ খুলতেন না। ৫ আগস্টের পরে নিজেকে পাল্টে ফেলেন মনিকা। অনলাইন ব্যবসার আড়ালে অনৈতিক কার্যকলাপে জড়িয়ে পড়েন পুরোদমে। সেই সাথে বিভিন্ন সংগঠনের কর্মসূচিতে গিয়ে নিজেকে এখন ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সৈনিক ও বিএনপিপন্থী হিসেবে জাহির করতে শুরু করেন। আওয়ামী লীগের আমলে খুব পাওয়ারফুল নেত্রী মনিকা আওয়ামী লীগ সরকারের ক্ষমতাবান মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের খুব কাছের লোক হিসেবে পরিচয় দিতেন।
বিভিন্ন মাধ্যমে জানা গেছে, মনিকা একাধারে পার্বত্য চট্টগ্রামের বাঙালি সংগঠন সমঅধিকার নেত্রী, এই মনিকা রাঙামাটি পৌরসভায় আ’লীগের সমর্থনে কাউন্সিলর পদেও নির্বাচন করেন। ৫ আগস্টের আগে নিজেকে সাংবাদিক পরিচয় দিতে শুরু করেন। তাকে বিএনপির জয়নাল আবেদীন ফারুকের পাশেও দেখা গেছে।
রাঙামাটির কোতয়ালী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ সাহেদ উদ্দিন মুঠোফোনে বলেন, জেলা মহিলা দলের আহব্বায়ক নুর জাহান বাদী হয়ে মনিকার বিরুদ্বে থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় পুলিশ মনিকাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে সোপর্দ করে।