লংগদু প্রতিনিধি
রাঙামাটির লংগদুতে এক আইনজীবী দম্পতির বিরুদ্ধে চেক জালিয়াতি ও প্রতারণার অভিযোগ তুলেছেন স্থানীয় এক ঠিকাদার। শুধু তাই নয়, ভুক্তভোগীর দাবি- প্রতারণার পাশাপাশি মিথ্যা মামলার মাধ্যমে তাকে হয়রানি করা হচ্ছে। অভিযুক্তরা হলেন- রাঙামাটি জেলা দায়রা জজ আদালতে আইনজীবী দম্পতি অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম অভি ও তার স্ত্রী অ্যাডভোকেট রুমানা খানম। অভিযুক্ত সাইফুল ইসলাম অভি আওয়ামী লীগ সরকার আমলে রাঙামাটি নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনালের সাবেক পিপি ছিলেন। স্থানীয়ভাবে প্রভাবশালী এই দম্পতির বিরুদ্ধে একাধিক ব্যক্তিকে ফাঁদে ফেলে প্রতারণার অভিযোগও করেছেন ভুক্তভোগীরা। তাদের দাবি, ক্ষমতার অপব্যবহার করে এই দম্পতি দীর্ঘদিন ধরে সাধারণ মানুষকে ফাঁদে ফেলে অর্থ আদায় করে আসছেন। ভুক্তভোগীরা বলছেন, ওই আইনজীবী দম্পতি দীর্ঘদিন ধরে আইনের পেশাকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে সাধারণ মানুষকে হয়রানি করে আসছেন।
২২ জুন লংগদু প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত তুলে ধরেন ভুক্তভোগী মো. সাইফুল ইসলাম (সাইফুল কন্ট্রাক্টর) ও তার পরিবার।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, এডভোকেট সাইফুল ইসলাম অভি ও তার স্ত্রী এডভোকেট রুমানা খানমের সঙ্গে তার ব্যবসায়িক সম্পর্ক কিংবা পারস্পরিক কোনো লেনদেন ছিল না। তবে আমি ব্যবসায়িক কাজে অভির মা’র থেকে ৮ লাখ ১০ হাজার টাকা নিয়েছিলাম। আমাদের লেনদেনের সম্পর্ক ২০২০ সাল পর্যন্ত ভালোই ছিলো।
পরে সাইফুল ইসলাম ওর বৃদ্ধ মাকে ভয় দেখিয়ে চেকগুলো নিয়ে নেয়। আমি ওর মাকে তিনটি চেক দিয়েছিলাম ৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা, ১ লাখ ২০ হাজার এবং ৬০ হাজার টাকার। অর্থাৎ মোট ৭ লক্ষ ৩০ হাজার টাকার চেক প্রদান করি। অভি এই চেকগুলো সংগ্রহ করে জালিয়াতির মাধ্যমে ১৮ লাখ ৫০ হাজার টাকা দেখিয়ে আমার নামে একটি মিথ্যা মামলা দায়ের করেন।
তিনি আরও জানান, তার ও পরিবারের সম্মানহানির জন্য উদ্দেশ্যে প্রণোদিতভাবে এই প্রতারণা ও হয়রানিমূলক মামলা করা হয়েছে। তিনি অভিযোগ করেন, সাইফুল ইসলাম ও তার সহধর্মিণী দুজনেই এডভোকেট হওয়ায় একই কৌশলে উপজেলার অনেক নিরীহ মানুষকে চেকের মাধ্যমে প্রতারণার ফাঁদে ফেলেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে উপজেলার আরেক ভুক্তভোগী সরোয়ার হোসেন বলেন, ওমর ফারুক তিনি এডভোকেট সাইফুল ইসলাম অভির বোনের জামাই হওয়ায় তার ক্ষমতা বলে আমার নামে একটি মিথ্যা মামলা দায়ের করে দীর্ঘদিন যাবত হয়রানি করছে। মামলাটি এখনো চলমান। এমতাবস্থায় আমি সাংবাদিকদের মাধ্যমে প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করছি।
সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে মোঃ সাইফুল ইসলাম স্থানীয় প্রশাসন ও গণমাধ্যমের দৃষ্টি আকর্ষণ করে প্রতারক চক্রের বিরুদ্ধে সুষ্ঠু বিচার দাবি করেছেন।
অভিযোগের বিষয়ে এডভোকেট সাইফুল ইসলাম অভি বলেন, আসলে সত্যকে আড়াল করার জন্য তিনি সংবাদ সম্মেলন করেছেন। তিনি টাকা নিয়েছে এবং চেক দিয়েছে সবই সত্যি। এটার সকল প্রকার তথ্য প্রমাণ দেখে মহামান্য আদালত চার বছর পর তার বিরুদ্ধে রায় দিয়েছে। এমন কি তিনি কিছু টাকা আমাদের দিয়েছেও। তার আজকের সংবাদ সম্মেলন শুধুমাত্র সত্যকে আড়ালের উদ্দেশ্য।