রক্তছড়ি খাল দখলমুক্ত করার প্রক্রিয়া শুরু

61

রাঙ্গুনিয়া উপজেলার দক্ষিণ রাজানগর ইউনিয়নের শতবছরের পুরানো রক্তছড়ি খাল। একসময়ের খরস্রোতা এ খালটি সংস্কারের অভাবে দখল-দূষণে বিলুপ্তির হওয়ার উপক্রম হয়। এরফলে অল্প বৃষ্টি হলেই পানি উপচে লোকালয় প্লাবিত হয়ে জনদুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করে। সম্প্রতি খালটি দখলমুক্ত করে খনন করার কার্যক্রম হাতে নিয়েছে দক্ষিণ রাজানগর ইউনিয়ন পরিষদ। এতে স্বস্তি প্রকাশ করেছেন এলাকার জনসাধারণ। স্থানীয় ইউপি সদস্য মোহাম্মদ ইউসুফ উদ্দিন বলেন, রক্তছড়ি খালটি ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের আওতাধীন পশ্চিম নিশ্চিন্তাপুর মৌজার শতবছরের পুরানো একটি খাল। খালটি দখল-দূষণের কবলে পড়ে প্রভাবশালী মহলের ছত্রছায়ায় এটি বিলুপ্তির পথে চলে যায়। এছাড়াও এলাকার প্রায় অর্ধশতাধিক খোলা পায়খানা স্থাপন হয় এ খালের পাড়কে কেন্দ্র করে। এতে সারা বছর পরিবেশ দূষণ তো লেগেই আছে, সাথে সামান্য বৃষ্টি হলে পুরা এলাকা প্লাবিত হয়ে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগের অন্ত থাকে না। আমরা ইউনিয়ন পরিষদ থেকে উদ্যোগ নিয়ে সম্প্রতি খালটি দখলমুক্ত করে ড্রেজিং করার কার্যক্রম শুরু করেছি। ইতিমধ্যে প্রায় সাড়ে ১২শত ফুট খাল খনন করা হয়েছে। এতটুক খনন করতে উপেক্ষা করতে হয়েছে প্রভাবশালী মহলের রক্তচক্ষু। ভাঙতে হয়েছে ২০/৩০টি খোলা পায়খানা। আরও প্রায় ২ হাজার ফুট খালের জায়গা উদ্ধার করা গেলে এতদ অঞ্চলের হাজার হাজার মানুষ উপকৃত হবে। দক্ষিণ রাজানগর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আহমদ ছৈয়দ তালুকদার জানান, রক্তছড়ি খাল দিয়ে শত বছর আগে থেকেই ধামাইরহাট সহ এতদ অঞ্চলের পানি নিস্কাষণ হয়ে থাকে। বর্ষাকালে অতিবৃষ্টি হলেও এ খালের কারণে প্লাবন থেকে রক্ষা পেতো মানুষ। কিন্তু কিছু স্বার্থস্বেষী মহল খালটি দখল করে ভরাট করে ফেলে হাজার হাজার মানুষকে দুর্ভোগে ফেলেছে। তাই ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে এটি পুনরায় দখলমুক্ত করে খননের ব্যবস্থা করা হয়েছে। তবে খালটি দিয়ে মানুষের যাতায়াতের জন্য ৩টি কালভার্ট, পার রক্ষায় দুইপাশে গাইডওয়াল দেওয়া প্রয়োজন। খনন প্রক্রিয়া শেষ হলে এসব কাজেও হাত দেওয়া হবে। ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক জামাল উদ্দিন বলেন, ভূয়া কাগজপত্র দিয়ে লিজ নিয়ে এখনো বেদখল থাকা বাকী খালের জায়গা উদ্ধারে প্রশাসনের জরুরী হস্তক্ষেপ প্রয়োজন। এদিকে রক্তছড়ি খাল পুনরুদ্ধার হওয়ায় এলাকার মানুষ স্বস্তি প্রকাশ করেছেন। দীর্ঘদিনের দুর্গন্ধ ও পানি নিস্কাষণের সমস্যা সমাধাণ হওয়ায় উৎপুল্ল সাধারণ মানুষ। স্থানীয় জগদিশ কর্মকার জানান, খালটি ভরাট হয়ে যাওয়ায় গত কয়েকবছর ধরে বৃষ্টি এলেই পুরা এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়তো। খালের উপর নির্মিত বিভিন্ন অস্বাস্থ্যকর পায়খানার বর্জ্য লোকালয়ে প্রবেশ করে জনদুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করতো। এখন খালটি খনন হওয়ায় এসব সমস্যার সমাধান হবে।