যেকোনো পরিস্থিতিতে আগামী বছর জুনের মধ্যেই নির্বাচন

7

পূর্বদেশ ডেস্ক

বাংলাদেশে আগামী বছরের জুনের মধ্যেই একটি অবাধ ও সুষ্ঠু সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রতিশ্রæতির কথাও আবারও বলেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। গতকাল বুধবার টোকিওর ইম্পেরিয়াল হোটেলে জাপানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও জাপান-বাংলাদেশ পার্লামেন্টারি ফ্রেন্ডশিপ লিগের (জেবিপিএফএল) প্রেসিডেন্ট তারো আসোর সঙ্গে সাক্ষাতে তিনি বলেছেন, যেকোনো পরিস্থিতি ডিসেম্বর থেকে আগামী বছরের জুনের মধ্যে বাংলাদেশে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। খবর বিডিনিউজের।
দেশে হঠাৎ করেই তৈরি হওয়া রাজনৈতিক অস্থিরতার প্রেক্ষাপটে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামীসহ বিভিন্ন দলের সঙ্গে সংলাপ করেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। গত রোববার শেষ হওয়া সংলাপের পর সংবাদ সম্মেলনে এসে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব নির্বাচন প্রসঙ্গেও কথা বলেন।
ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন করা নিয়ে বিএনপির দাবির বিষয়ে সেদিন তিনি বলেন, উনি (প্রধান উপদেষ্টা) এক কথার মানুষ। আমি কালও (শনিবার) বলেছি, আজও বলছি-উনি এক কথার মানুষ। তিনি বারবার বলেছেন, ডিসেম্বর থেকে আগামী বছরের ৩০ জুনের মধ্যে নির্বাচন হবে। জুলাইয়ের এক তারিখ পার হবে না।জাপানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী তারো আসোর সঙ্গেও বৈঠকের আলোচনাতেও বাংলাদেশের নির্বাচন প্রসঙ্গ স্থান পায় বলে প্রধান উপদেষ্টার দপ্তরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়।
‘নিক্কেই ফোরাম ফর এশিয়া’-তে অংশ নিতে এবং জাপানি নেতাদের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের জন্য স্থানীয় সময় দুপুর ২টার দিকে টোকিও পৌঁছান প্রধান উপদেষ্টা।
সাক্ষাতে তারো আসো প্রধান উপদেষ্টা ইউনূসকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, বাংলাদেশকে একটি স্থিতিশীল রাজনৈতিক ব্যবস্থার পথে নিয়ে যেতে তার ভূমিকা প্রশংসনীয়। তিনি সুষ্ঠু গণতান্ত্রিক উত্তরণের জন্য অবিলম্বে নির্বাচনের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার তিনটি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রকে অগ্রাধিকার দিয়ে কাজ করে যাচ্ছে- সংস্কার, ছাত্র-জনতার খুনিদের বিচার এবং সাধারণ নির্বাচন।
তিনি আরো বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ব্যাংকিং খাতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার পাশাপাশি বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বৃদ্ধি এবং বৈদেশিক ঋণ পরিশোধসহ অর্থনৈতিক খাতে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে।
পূর্ববর্তী সরকার আমাদের দেশের প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে দিয়েছে, তরুণদের এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে বাধ্য করেছে। যে ভয়াবহ বাজে পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে, তা ঠিক করার জন্য তরুণরা আমাকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে, বলেন মুহাম্মদ ইউনূস।
জাপানের অব্যাহত সহায়তা প্রসঙ্গে ইউনূস বলেন, জাপান গত দশ মাসে আমাদের প্রয়োজনীয় সব ধরণের সহায়তা দিয়েছে। আমি জাপানকে এই সহায়তার জন্য ধন্যবাদ জানাতে চাই। এক অর্থে ধন্যবাদ জানানোর জন্যই এবারের এই সফর।
মুহাম্মদ ইউনূস আসোকে চলমান সংস্কার কার্যক্রমগুলো সরাসরি দেখার জন্য বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান।
জেবিপিএফএল প্রেসিডেন্টের সাথে বৈঠকে অংশ নেওয়া জাপানি আইনপ্রণেতারা বলেন, দু’দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক অংশীদারত্ব চুক্তি (ইপিএ) স্বাক্ষর বাংলাদেশে আরও জাপানি বিনিয়োগ আকর্ষণের ক্ষেত্রে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন, আন্তর্জাতিক বিষয়ক বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী, এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক (সিনিয়র সচিব) লামিয়া মোর্শেদ।