নিজস্ব প্রতিবেদক
যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা গমের প্রথম চালান হিসেবে ৫৬ হাজার ৯৫৯ মেট্রিক টন গম নিয়ে পানামার পতাকাবাহী ‘মাই নর্স স্ট্রাইড’ নামে জাহাজটি গতকাল শনিবার দুপুরের দিকে চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছেছে। খাদ্য মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশ সরকারের মধ্যে স্বাক্ষরিত সমঝোতা স্মারকের (এমওইউ) মাধ্যমে প্রথমবারের মতো যুক্তরাষ্ট্র থেকে গম আমদানি কার্যক্রম শুরু করছে। জি-টু-জি ভিত্তিতে মোট ৪ লাখ ৪০ হাজার মেট্রিক টন গম আমদানি করা হবে। এর প্রথম চালান হিসেবে ৫৬ হাজার ৯৫৯ মেট্রিক টন গম নিয়ে ‘মাই নর্স স্ট্রাইড’ নামে জাহাজটি শনিবার চট্টগ্রাম বন্দরের বহিঃনোঙরে পৌঁছেছে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশের খাদ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন খাদ্য অধিদপ্তর ও যুক্তরাষ্ট্রের ডিপার্টমেন্ট অব অ্যাগ্রিকালচারের (ইউএসডিএ) মধ্যে সম্পাদিত চুক্তি মোতাবেক এই গম আমদানি কার্যক্রমটি চলমান রয়েছে। জাহাজে রক্ষিত গমের নমুনা পরীক্ষার কার্যক্রম ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে। গমের নমুনা পরীক্ষা শেষে দ্রুত গম খালাসের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। ৫৬ হাজার ৯৫৯ মেট্রিক টন গমের মধ্যে ৩৪ হাজার ১৭০ মেট্রিক টন চট্টগ্রামে এবং অবশিষ্ট ২২ হাজার ৭৮৯ মেট্রিক টন গম মোংলা বন্দরে খালাস করা হবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে মন্ত্রণালয়।
জানা যায়, সরকার দীর্ঘদিন ধরে রাশিয়া, ইউক্রেন, ভারতসহ বিভিন্ন দেশ থেকে গম আমদানি করে আসছে। স¤প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে দেশটি থেকে গম আমদানির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। যুক্তরাষ্ট্রের ইউএস হুইট অ্যাসোসিয়েশনের অনুমোদিত প্রতিষ্ঠান অ্যাগ্রোক্রপ ইন্টারন্যাশনালের কাছ থেকে জি-টু-জি পদ্ধতিতে এই গম কেনা হচ্ছে।
চুক্তি অনুযায়ী, প্রতি টন গমের মূল্য ধরা হয়েছে ৩০২ মার্কিন ডলার। মোট ২ লাখ ২০ হাজার টন গম আমদানির প্রস্তাব গত ২৩ জুলাই ক্রয়-সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটি অনুমোদন করে। তবে চুক্তিতে ১০ শতাংশ কমবেশির শর্ত থাকায় মোট ২ লাখ ৪২ হাজার টন গম আসবে বলে জানা যায়।
বর্তমানে দেশে বছরে গড়ে ৮০ লাখ টনের বেশি গমের চাহিদা রয়েছে। দেশে উৎপাদন হয় মাত্র ১১ লাখ টন গম। বাকিটা আমদানি করতে হয়। বাংলাদেশ তার মোট গম আমদানির অর্ধেকের বেশি রাশিয়া থেকে নিয়ে থাকে। গত অর্থবছরে রাশিয়া থেকে ৫৪ শতাংশ গম আনা হয়। এরপরই রয়েছে ইউক্রেন, যেখান থেকে ১৪ শতাংশ গম আমদানি করা হয়।
চট্টগ্রাম খাদ্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, অতিরিক্ত সচিব এ এইচ এম কামরুজ্জামানের নেতৃত্বে কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে জাহাজ থেকে গমের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। এরপর পরীক্ষাগারে নমুনা ‘খাওয়ার উপযোগী’ বলে প্রতিবেদন এলে খালাস কার্যক্রম শুরু হবে। ইতিমধ্যে কাস্টমসের কাগজপত্র প্রস্তুত করা হচ্ছে।











