মে মাসের মধ্যেই শেষ হচ্ছে ৬ লেনের কাজ

78

আগামী মে মাসের মধ্যে শাহ আমানত (র) সেতু সংযোগ সড়কের কাজ শেষ হবে। এরপর ওই মাসেই সড়কটি সড়ক ও জনপথ বিভাগের কাছে হস্তান্তর করা হবে। এছাড়া আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের পর চলাচলের জন্য তা জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হবে।
জানা গেছে, নগরী প্রান্তে ৪টি সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ না হওয়ায় এবং কাজ ঢিমেতালে চলানোয় নগরীর প্রান্তে শাহ আমানত সংযোগ সড়কের কাজ এখনো দৃশ্যমান হয়নি। তবে দক্ষিণ প্রান্তে মইজ্জ্যারটেক থেকে শিকলবাহা ক্রসিং পর্যন্ত সড়কটি পুরোপুরি দৃশ্যমান হয়েছে। এখন চলছে ফিনিশিংয়ের কাজ। তবে এরই মাঝে শাহ আমানত (র.) সেতুর দক্ষিণ প্রান্তে নির্মিতব্য সড়ক দিয়ে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের যাত্রীরা সুফলপেতে শুরু করেছেন। মইজ্জ্যারটেক থেকে নির্বিঘ্নে তারা গন্তব্যে যেতে পারছেন এবং চার লেন সড়কের সুযোগ পাচ্ছেন।
সড়ক বিভাগের তথ্য মতে, নগর প্রান্তে ৬০ ভাগ এবং শাহ আমানত সেতুর দক্ষিণ প্রান্তে ৯০ ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। শাহ আমানত সেতুর উত্তর প্রান্তে (নগর প্রান্তে) বহদ্দারহাট থেকে কর্ণফুলী সেতু পর্যন্ত ৫ কিলোমিটার সড়ক হচ্ছে ৬ লেনে ও নদীর দক্ষিণ প্রান্তে ৩ কিলোমিটার সড়ক হচ্ছে চার লেনে। প্রকল্পের কাজ গত বছরের সেপ্টেম্বরে সম্পন্ন করার কথা থাকলেও তা সম্ভব না হওয়ায় আগামী মে মাসের মধ্যে কাজ সম্পন্ন করার লক্ষ্য নিয়ে কাজ চলছে। বাংলাদেশ ও কুয়েত সরকারের যৌথ অর্থায়নে প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয় ২৭০ কোটি টাকা। প্রকল্পের মোট বাজেটের মধ্যে বাংলাদেশ সরকার ৬০ দশমিক ৩ শতাংশ এবং কুয়েত ফান্ড থেকে ৪৯ দশমিক ৭ শতাংশ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, এ প্রকল্পের কাজ শুরু থেকে শাহ আমানত সেতুর উত্তর প্রান্তে ৬ লেন সংযোগ সড়কের নগরী প্রান্তে আবর্জনা আর স্থাপনা অপসারণেই সময় লেগেছে বেশি। এ ক্ষেত্রে দক্ষিণ প্রান্তে ৩ কিলোমিটার ৪ লেন সড়ক নির্মাণের কাজ বেশি এগিয়েছে। ২০১০ সালে সেপ্টেম্বরে তৃতীয় কর্ণফুলী সেতু উদ্বোধনের পর বরাদ্দের অবশিষ্ট টাকা দিয়ে এ সড়কটির উন্নয়নের প্রস্তাব করা হয়। পরবর্তীতে বহদ্দারহাট-কর্ণফুলী সেতু পর্যন্ত প্রায় পাঁচ কিলোমিটার সড়ক প্রথম পর্যায়ে তিন লেন, পরবর্তীতে তা পরিবর্তন করে পাঁচলেন করার সিদ্ধান্ত নেয় সওজ।
সর্বশেষ এই পরিকল্পনা পরিবর্তন করে ৬ লেন সংযোগ সড়ক এবং সেতুর দক্ষিণ পাশে মইজ্জ্যারটেক থেকে শিকলবাহা ক্রসিং পর্যন্ত তিন কিলোমিটার সড়কের চার লেনে উন্নীত করার প্রকল্প গ্রহণ করে সড়ক ও জনপথ বিভাগ। গত বছরের মার্চে প্রকল্পের কাজ চূড়ান্তভাবে শুরু করা হলেও বর্ষা এবং সড়কের উভয় পাশে আবর্জনার ভাগাড় আর বিভিন্ন স্থাপনার কারণে পুরোদমে শুরু করা যায়নি। এ কারণে মাধে মধ্যে কাজে ছন্দপতন ঘটে।
সড়ক বিভাগের প্রকৌশলীরা জানান, শাহ আমানত সেতুর দক্ষিণ প্রান্তে ৪টি কালভার্ট ও একটি সেতু নির্মাণের কাজ শেষ করে সড়কের কাজও প্রায় শেষ পর্যায়ে। দক্ষিণ প্রান্তে বড় কোন ঝামেলা না থাকায় কাজ দৃশ্যমাণ হয়েছে। বহদ্দারহাট-কর্ণফুলী সেতু ৬ লেন সংযোগ সড়ক প্রকল্পের ৫ কিলোমিটার এলাকায় কালভার্ট নির্মাণ শেষ। ৪টি সেতু নির্মাণের কাজ পুরোদমে চলছে। শাহ আমানত সেতুর দক্ষিণ প্রান্তে রাস্তা দৃশ্যামন এবং এর সুফল পেলে শুরু করেছে যাত্রীরা।
সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী ও প্রকল্পের অতিরিক্ত প্রকল্প পরিচালক আশিক কাদির জানান, নগরী প্রান্তে সড়কের কাজ করতে গিয়ে ময়লা আর আবর্জনা অপসারণের দীর্ঘ সময় ব্যয় হয়েছে। এ কারণে সময় লেগেছে বেশি। নগরী প্রান্তে একটি সেতুর কাজ শেষ পর্যায়ে। অপর ৩টি সেতুর কাজও চলমান। সেতু গুলোর কাজ সম্পন্ন হলে কাজ আরো দৃশ্যমান হবে এবং সড়কের কাজ দ্রুত সম্পন্ন হবে। সেতুর নগরী প্রান্তে সড়কের উভয় পাশে আবর্জনার স্তুপ অপসারণ করে মাটির পরিবর্তন করতে সময় লেগেছে বেশি। এখন সব আবর্জনা ও সমস্যা দূর হয়েছে। এখন নগরী প্রান্তে ৬ লেনের কাজ গতি পেয়েছে। দক্ষিণ প্রান্তে চার লেনের কাজ দৃশ্যমান হয়েছে।
তিনি বলেন, নির্মাণাধীন সড়কের কাজ সেতুর দক্ষিণ প্রান্তে ৯০ ভাগ আর নগরী প্রান্তে ৬ লেনের কাজ ৬০ সম্পন্ন হয়েছে। আগামী মে মাসের মধ্যে কাজ সম্পন্ন করে সড়ক ও জনপথ বিভাগের কাছে হস্তান্তর ও উন্মুক্ত করে দেয়া হবে।