নিজস্ব প্রতিবেদক
আগামী ৩ নভেম্বর চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের নির্বাচিত ‘মেয়র’ ডা. শাহাদাত হোসেনের শপথ অনুষ্ঠান দিনক্ষণ ঠিক করা হয়েছে। স্থানীয় সরকার উপদেষ্ঠা এ এফ হাসান আরিফ শপথবাক্য পাঠ করাবেন। গতকাল বৃহস্পতিবার স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-সচিব মাহবুবা আইরিন স্বাক্ষরিত পত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
এতে বলা হয়েছে, ‘আগামী ৩ নভেম্বর ২০২৪ তারিখ রবিবার সকাল ১১.৩০ ঘটিকায় স্থানীয় সরকার বিভাগের সম্মেলন কক্ষে (কক্ষ নং-৬০১, ৭নং ভবন, ৭ম তলা) চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের নির্বাচিত মেয়র এর শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় উপদেষ্ঠা, জনাব এ এফ হাসান আরিফ, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় এবং ভ‚মি মন্ত্রণালয়ে নির্বাচিত মেয়রকে শপথবাক্য পাঠ করাতে সানুগ্রহ সম্মতি জ্ঞাপন করেছেন।’
‘মেয়র’ হিসাবে নগর বিএনপির সাবেক সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেনের শপথ অনুষ্ঠানের আগে চসিক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে এ সংক্রান্ত কোনো আইনি জটিলতা আছে কিনা সেটা জানতে চাওয়া হয়েছে। জরুরি ভিত্তিতে ‘আদালতের কোন স্থগিতাদেশ বা আইনগত কোন জটিলতা আছে কিনা তা’ জানাতে মাহবুবা আইরিন স্বাক্ষরিত পত্রে বলা হয়েছে।
এদিকে শপথ অনুষ্ঠানের তারিখ নির্ধারিত হলেও সেটা এগিয়ে নিয়ে আসার সম্ভাবনার কথাও বলছেন কেউ কেউ। চসিক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার কাছ থেকে আইনি জটিলতা না থাকার বিষয়ে মন্ত্রণালয় নিশ্চিত হওয়ার পর এ তারিখ এগিয়ে নিয়ে আসতে পারে মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়ের চিঠি ইস্যু থেকে শপথ অনুষ্ঠানের মাঝে ৯দিন সময় রয়েছে। প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার পত্র পাওয়ার সাপেক্ষে এ সময় এগিয়ে আসতে পারে। এতে চলতি মাসেও শপথ অনুষ্ঠান হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
ডা. শাহাদাত হোসেনের একান্ত কর্মকর্তা মারুফুল হক চৌধুরী বলেন, ৩ নভেম্বর শপথ অনুষ্ঠানের চিঠি ইস্যু করেছে মন্ত্রণালয়। এখন কিছু আনুষ্ঠানিকতা আছে, এসব জরুরিভাবে শেষ হলে সময় আরো একটু এগিয়ে আসতে পারে।
গত ১ অক্টোবর চট্টগ্রাম নগর বিএনপির সাবেক সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেনকে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র হিসেবে ঘোষণা করে রায় দিয়েছিলেন আদালত। আদালত রায় ঘোষণার ১০ দিনের মধ্যে প্রজ্ঞাপন জারির জন্য নির্দেশ দিয়েছিলেন। রায় ঘোষণার সাত দিন পরেই ৮ অক্টোবর শাহাদাত হোসেনকে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ঘোষণার সংশোধিত প্রজ্ঞাপন জারি করে নির্বাচন কমিশন। এরপর ১৭ অক্টোবর স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় গত ১৯ আগস্ট মেয়রদের অপসারণের প্রজ্ঞাপনের সংশোধন করে একটি সংশোধিত প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মাহবুবা আইরিন স্বাক্ষরিত সংশোধিত প্রজ্ঞাপনে ৩ নম্বর ক্রমিক বিলুপ্ত করা হয়েছে। ৩ নম্বরে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ছিলেন। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, স্থানীয় সরকার (সিটি করপোরেশন) (সংশোধন) অধ্যাদেশ ২০২৪-এর ১৩ (ক) প্রয়োগ করে বাংলাদেশের সিটি করপোরেশনের মেয়রদের নিজ নিজ পদ থেকে অপসারণ করে স্থানীয় সরকার বিভাগ প্রজ্ঞাপন জারি করে। এখন ওই প্রজ্ঞাপনের ক্রমিক নম্বর ৩ বিলুপ্ত করে সংশোধন করা হলো।
২০২১ সালের ২৭ জানুয়ারি চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। দিনভর গোলাগুলি, সংঘর্ষ, হামলার ঘটনার মধ্যে ভোটগ্রহণ শেষে আওয়ামী লীগের প্রার্থী রেজাউল করিম চৌধুরীকে বিজয়ী ঘোষণা করেন রিটার্নিং অফিসার। এ সময় নির্বাচনের ফলাফল প্রত্যাখান করে ফলাফল বাতিল ও পুনরায় নির্বাচনের দাবি করেছিলেন বিএনপির প্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেন। ২০২১ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে ওই নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগে ৯ জনকে বিবাদী করে মামলা করেন নগর বিএনপির সাবেক সভাপতি শাহাদাত হোসেন।