মূত্রকে পানযোগ্য করবে নাসার নতুন স্পেসস্যুট

5

ভবিষ্যতে হয়ত নাসার বিভিন্ন মিশনের নভোচারীদেরকে নিজেদের স্পেসস্যুটের ভেতরই মূত্রকে পুনর্ব্যবহার করে পানি হিসেবে পান করতে দেখা যেতে পারে। সেই লক্ষ্যে, বর্জ্য ব্যবস্থাপনার এক অভিনব পন্থা তৈরি করেছেন গবেষকরা। যুক্তরাষ্ট্রের ‘কর্নেল ইউনিভার্সিটি’র বিজ্ঞানীরা একটি ‘প্রোটোটাইপ ফিলট্রেশন’ বা পরিগ্রাবণ সিস্টেম উন্মোচন করেছেন, যা মাত্র ৫ মিনিটের মধ্যে বর্জ্য পানিকে পানযোগ্য পানিতে ফিল্টার করে।
সাই-ফাই সিরিজ ডিউন-এর ‘স্টিলস্যুট’-এর আদলে তৈরি এ স্পেসস্যুটটি নাসার ‘আর্টেমিস’ প্রোগ্রামে ব্যবহার করা যেতে পারে, যার লক্ষ্য ৫০ বছরের বেশি সময় পর চাঁদের পৃষ্ঠে প্রথমবারের মতো মানুষের প্রত্যাবর্তন ঘটানো।
স্পেসস্যুট পরা অবস্থায় মানব বর্জ্য মোকাবেলার প্রচলিত বিভিন্ন পদ্ধতি একইসঙ্গে অস্বস্তিকর ও অস্বাস্থ্যকর। কারণ এগুলো প্রাপ্তবয়স্ক ডায়াপার-ধাঁচের পোশাক দিয়ে তৈরি হয়ে থাকে। তবে নতুন পদ্ধতিটি মূত্র থেকে বিভিন্ন দূষিত পদার্থ পরিশোধনে ও একে পানযোগ্য পানিতে রূপান্তরে এক ধরনের অভিগ্রবণ প্রক্রিয়া ব্যবহার করে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে ব্রিটিশ দৈনিক ইন্ডিপেনডেন্ট।
‘নতুন স্পেসস্যুটের নকশায় একটি ভ্যাকুয়ামভিত্তিক ক্যাথিটার যুক্ত রয়েছে, যা পরবর্তীতে ‘কম্বাইন্ড ফরোয়ার্ড-রিভার্স অসমোসিস ইউনিট’ প্রক্রিয়ায় সমন্বিত হয়। এতে করে নিরবচ্ছিন্ন পানযোগ্য পানি সরবরাহের সুযোগ মেলে, যেখানে একাধিক সুরক্ষা ব্যবস্থার মাধ্যমে নভোচারীর সুস্থতার বিষয়টিও নিশ্চিত করা যাবে’- বলেছেন ‘ওয়েইল কর্নেল মেডিসিন অ্যান্ড কর্নেল ইউনিভার্সিটি’র গবেষণা কর্মী সোফিয়া এটলিন।
তিনি বলেন, ‘নভোচারীরা এখন নিজেদের স্যুটের মধ্যে থাকা ড্রিংক ব্যাগে মাত্র এক লিটার পানি পান করার সুযোগ পান, যা চাঁদে পরিকল্পিত দীর্ঘমেয়াদী স্পেসওয়াক করার মতো যথেষ্ট নয়, যার স্থায়িত্ব ১০ ঘণ্টা এমনকি জরুরি পরিস্থিতিতে ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত হতে পারে’।
নতুন স্পেসস্যুটটি আসল মহাকাশ মিশনে পাঠানোর আগে এর নকশাটি কৃত্রিম মাধ্যাকর্ষণওয়ালা পরিস্থিতিতে পরীক্ষা করার পরিকল্পনা করছেন গবেষকরা।
‘ইভিএ অর্থাৎ মহাকাশযানের বাইরে বিভিন্ন কার্যক্রম চলাকালীন নভোচারীরা ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যবিধি, কর্মক্ষমতা ও কাজের দক্ষতা নিয়ে যে সমস্যার মুখোমুখি হন, তা সমাধানে আমরা পরবর্তী প্রজন্মের বিভিন্ন স্পেসস্যুটের জন্য একটি অভিনব মূত্র সংগ্রহ ও পরিগ্রাবণ সিস্টেম নকশা করেছি’, গবেষণাপত্রে লিখেছেন গবেষকরা। এতে তারা আরো লিখেছেন, ‘এইসব স্পেসস্যুটের জায়গা ও ব্যাটারি ক্ষমতার বিভিন্ন সীমাবদ্ধতা বোঝার ক্ষেত্রে আমাদের যুক্তি হচ্ছে, উন্নত কার্যকারিতা ও আকস্মিক পরিস্থিতিতে পর্যাপ্ত পানি সরবরাহের বেলায় এ পদ্ধতি খুবই উপযুক্ত’। খবর বিডিনিউজের