বান্দরবান প্রতিনিধি
রঙ বেরঙের টসটসে রসালো আম ঝুলে আছে গাছে গাছে। দেখতে যেমন আকর্ষণীয়, তেমনি খেতেও রসালো মজাদার। এমন আমের বাম্পার ফলন হয়েছে বান্দরবানের রোয়াংছড়ি উপজেলা ওয়াগাপাড়ার চাষী মাওসেতুং তঞ্চঙ্গ্যা’র বাগানে। নিজের ১০ একর পরিমাণ পাহাড়ি জমিতে তিনি গড়ে তুলেছেন নানা প্রজাতির সারি সারি আমের গাছ। প্রতিটি গাছে আমের ফলন দিতে শুরু করেছে। এখনও বাগানে ব্যাপক ফলন হয়েছে। এছাড়া রয়েছে দার্জিলিং কমলা, লিচু, পাহাড়ের প্রিয় রসালো ফল আনারস, পেয়ারা, কলা, জাম্বুরা, মাল্টা, তেঁতুল, লটকন, লেবু ও নানা প্রজাতির বড়ই মিশ্র ফলজ গাছ। পরিবেশ ও আবহাওয়া অনুক‚লে থাকায় প্রথমবারে মতো আমের বাম্পার ফলন হওয়ায় চাষিদের মুখে হাসির ঝিলিক দেখা গেছে।
আমের বাগানটি দেখতে বিচিত্র হওয়ায় প্রতিনিয়ত মানুষের ঢল নামে বাগানে। রোয়াংছড়ি উপজেলায় মাওসেতুং তঞ্চঙ্গ্যা’র বাগানে গাছে ঝুলছে দেশি-বিদেশি আম বাড়িফুল, রেডফার্মা, সেমাই, বেনানা, রেফ লেডি, সূর্য ডিম, কিউজাই, কিংস চাপা পাত, আম্রপালি, রাংগৈ। এসব জাতের আমের আবাদ করে আসছেন তিনি। মাটির ঊর্বরতার কারণে ব্যাপক হারে আম উৎপাদিত হয়েছে। মিশ্র ফলের এই বাগানের মালিক মাওসেতুং তঞ্চঙ্গ্যা জানান, প্রায় ১৫ বছর আগে সেগুন বাগান করেছিলাম। কিন্তু দেখা যায় সেগুন বাগান থেকে আয় হতে দীর্ঘ সময় লাগে। এই ১০ একর জাায়গাতে ১১ হাজার সেগুন ছিল। সেই গাছগুলো স্বস্তা দামে বিক্রি করে ২ বছর আগে এ মিশ্র ফলের বাগান গড়ে তুলেছি। এখন আমার বাগানে ১৮টি জাতে আমের গাছ আছে। এর পাশাপাশি সব মিলে ৩ থেকে ৪ হাজার মিশ্র ফলের গাছ আছে। ইতোমধ্যে ৫ একর জায়গায় আমের ফলন দিতে শুরু করেছে। আগামি মৌসুমে আরো বেশি আমের ফলন দিতে পারে।
তিনি আরো বলেন উৎপাদিত কাঁচা ও পাকা আমের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে সারা দেশেই। এসব বিষমুক্ত আম সংগ্রহ করে বিক্রির মৌসুম এখন। সড়কের দুইপাশে এবং পাহাড়ের পাদদেশে পাহাড়ি জমিতে সৃজিত আম বাগানে বিপুল পরিমাণ আমের ফলন হয়েছে। প্রতিদিন এসব দেখতে চলে আসেন অনেকেই। আর দুই সপ্তাহ পর বাগান থেকে আম সংগ্রহ কাজে ব্যস্ত থাকব। রেডফার্মা, সেমাই, বেনানা, রেফ লেডি , সূর্য ডিম, কিউজাই, কিংস চাপা পাত নামের আমগুলো খুচরা বিক্রি করলে প্রতি কেজিতে সাড়ে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা পাবো। আবহাওয়া অনুক‚লে থাকলে প্রথমবারের মতো বাগান থেকে উৎপাদিত আম বিক্রি করে কিছুটা হলেও লাভবান হবো।
তিনি বলেন, আমার বাগানে যা কিছু দেখছেন সব আমার নিজের প্রচেষ্টায় হয়েছে। সরকারি ও বেসরকারি কোনো প্রতিষ্ঠান থেকে সহযোগিতা পাইনি। এমন কী উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর থেকে পর্যন্ত কোনো খবর নেননি।
রোয়াংছড়ি উপজেলা সদর বøকের দায়িত্বরত উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা নুসিং মারমা বলেন, আমি মাঝে মধ্যে মাওসেতুং তঞ্চঙ্গ্যা’র আম বাগানে গিয়ে দেখে আসি এবং যতটুকু পারি পরামর্শ প্রদান করেছি। তিনি খুব সুন্দরভাবে মিশ্রফলের বাগান করেছেন। ফিলিপাইন জাতের ৬০০টি আনারসের চারা দেওয়া হয়েছে।