মিয়ানমারের দুই পক্ষের সঙ্গেই যোগাযোগ রাখছি সীমান্ত সম্পূর্ণ আমাদের নিয়ন্ত্রণে

2

পূর্বদেশ ডেস্ক

মিয়ানমার সীমান্তে যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় বাংলাদেশ পুরোপুরি প্রস্তুত রয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। তিনি বলেন, সীমান্তে এখনো মাঝে-মধ্যে গোলাগুলির শব্দ শোনা যায়। তবে সীমান্তবাসীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিজিবি ও কোস্টগার্ড পেশাদারিত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছে। এতে আতঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ নেই। সীমান্ত সম্পূর্ণ আমাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
গতকাল সোমবার কক্সবাজারের টেকনাফের সীমান্ত এলাকা পরিদর্শনকালে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, মিয়ানমারের সীমান্ত এলাকা নিয়ন্ত্রণে রয়েছে আরাকান আর্মির। ফলে সীমান্ত পরিস্থিতি নিয়ে মিয়ানমার সরকার ও আরাকান আর্মি উভয় পক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হচ্ছে বাংলাদেশের। উভয় পক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ রয়েছেও। সম্প্রতি সরকারের এক উপদেষ্টা সাংবাদিকদের জানান, মিয়ানমারের সশস্ত্র বিদ্রোহী সংগঠন আরাকান আর্মির সঙ্গে জান্তা বাহিনীর সংঘাত ও সহিংসতার জেরে এই সময়ে আরো ৬০ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা উখিয়া ও টেকনাফের বিভিন্ন ক্যাম্পে আশ্রয় নিয়েছেন। সীমান্তে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করছেন আরো অনেক রোহিঙ্গা।
এই অবস্থার মধ্যে সীমান্ত পরিস্থিতি দেখতে টেকনাফে যান উপদেষ্টা। বেলা ১১টার দিকে হেলিকপ্টারে টেকনাফের বিজিবি-২ নম্বর ব্যাটালিয়ন সদরে অবতরণ করেন তিনি। সেখানে বিজিবি সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা শেষে তিনি যান দমদমিয়ার নাফ নদীর মোহনায়। সেখানে দাঁড়িয়ে সীমান্তের ওপারের পরস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেন।
তখন রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশের বিষয়টি নজরে আনলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, নতুন আসা রোহিঙ্গাদের নিবন্ধন হয়নি। তাদের নতুন করে নিবন্ধিত করা হবে কি হবে না তা নিয়ে সরকারের উচ্চ পর্যায়ের সিদ্ধান্ত জরুরি। তা নিয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। নতুন অনুপ্রেবশ করা রোহিঙ্গারা মানবিক সমস্যায় পড়ে এসেছেন। অনেকেই এসেছেন গুরুতর আহত হয়ে। ফলে তাদের ফেরত পাঠানোও খুবই জটিল হয়ে পড়েছে। নতুন আসা রোহিঙ্গাদের বিভিন্ন মাধ্যমে খাবারের প্রয়োজনীয় সহযোগিতা পাচ্ছেন।
এরই মধ্যে মিয়ানমার ও রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে একজন গ্রহণযোগ্য ও বিশেষজ্ঞ ব্যক্তি খলিলুর রহমানকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তিনি বিষয়টি সার্বক্ষণিকভাবে নজর রাখছেন। সীমান্ত এলাকায় আমাদের কোনো সমস্যা নেই। বিজিবিসহ সব বাহিনীর সদস্যরা সর্বোচ্চ সর্তকতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছেন। এখানে যেন আইনশৃঙ্খলা সবসময় স্বাভাবিক থাকে তার জন্য গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।
মিয়ানমারের যুদ্ধ পরিস্থিতির কারণে নাফ নদীতে সাধারণ জেলেদের মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, নাফ নদীতে মাছ ধরা ও গরু আমদানির করিডোর চালুর বিষয়টি মিয়ানমারের পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করছে। বিভিন্ন সময় গোলাগুলির শব্দ এপারে শোনা যায়। গোলাবরুদও এপারে এসে পড়ে। ফলে নাফ নদীতে মাছ ধরা এখন নিরাপদ না। পরিস্থিতির উন্নতি হলে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গ্রহণ সম্ভব হবে।
আর গরু আমাদানি বন্ধ থাকায় দেশের খামারিরা খুশি এবং পশু সংকটও নেই। পরিস্থিতির উন্নতি হলে উভয় পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করেই করিডোরের ব্যাপারে কথা বলা যাবে।