পটিয়া প্রতিনিধি
পটিয়ায় ভুয়া জন্মসনদ তৈরি করে নাবালিকা মেয়েকে (কিশোরী) সাবালিকা দেখিয়ে গত ৫ জানুয়ারি সামাজিকভাবে বিয়ে দেন তার মা-বাবা। ৬ মাস না যেতেই গত ২৭ জুলাই যৌতুক দাবির অপরাধে বরের বিরুদ্ধে আদালতে একটি মামলা করেছিলেন কিশোরীর মা বুলু আক্তার। মামলাটির শুনানিকালে কিশোরীর জন্মসনদ পর্যালোচনা করে আদালত জানতে পারে বিয়ের সময় প্রদত্ত জন্মসনদটি ভুয়া। প্রকৃতপক্ষে কিশোরী বিয়ের উপযুক্ত ছিল না। এরপর আদালতের বিচারক তাররাহৃম আহমেদ বরের বিরুদ্ধে কনের মায়ের দায়ের করা মামলাটি খারিজ করে দেন। সেই সাথে আদেশ দেন নাবালিকা হওয়ার পরও ভুয়া জন্মসনদ তৈরি করে সাবালিকা দেখিয়ে বিয়ে দেয়ার সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা দায়েরের জন্য।
আদালতের নির্দেশ পেয়েই পটিয়া থানা পুলিশ কনের বাবা পটিয়া পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডস্থ হাবিবুর পাড়ার বাসিন্দা ফরিদ উদ্দিন ও তার স্ত্রী বুলু আক্তারের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন। বরের বাড়ি উপজেলার হাইদগাঁও ইউনিয়নের আমির আলী ফকিরের বাড়িতে। বর মোহাম্মদ মামনুর রশিদ ওই এলাকার বাসিন্দা ফজল আহমদের ছেলে, পেশায় তিনি ব্যাংকার।
আদালত সূত্রে জানা যায়, যাচাই-বাছাই ছাড়া কিশোরীর বিয়ে রেজিস্ট্রি করার অপরাধে রেজিস্ট্রার (কাজী) সোলাইমান চৌধুরীকেও আদালতে তলব করা হয়। গত ২৪ জুলাই কাজী আদালতে হাজির হয়ে কনের পিতা ও মাতার উত্থাপন করা জন্মসনদ মোতাবেক বিয়ে নিবন্ধন করা হয় বলে জানান। আদালত ভুয়া জন্মসনদ তৈরিতে কাজীর সংশ্লিষ্টতা না পাওয়ায় তাকে অব্যাহতি দেন।
একই দিন আদালত ভুয়া জন্মসনদ তৈরি করে নাবালিকাকে বিবাহ দেয়ার সাথে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা দায়েরের আদেশ দিলে পুলিশ কিশোরীর বাবা ফরিদ উদ্দিন ও মা বুলু আক্তারের বিরুদ্ধে এসআই আকরাম হোসেন বাদী হয়ে গত ১৯ আগস্ট মামলা দায়ের করেন।
কিশোরীর বাবা ফরিদ উদ্দিন জানান, আমার মেয়ে নাবালিকা কিনা সেটা মোবাইলে জানানো যাবে না। বিয়ের পর কাবিনের টাকা ও তালাক দেয়ার জন্য বর পক্ষের সাথে কথা চ‚ড়ান্ত হয়েছে। টাকা পেলে বর পক্ষের সাথে সবকিছু চুকে যাবে।
বর মামুনুর রশিদ জানান, চলতি বছরের ৫ জানুয়ারি সামাজিকভাবে তাদের বিয়ের পর মাত্র ১৬ দিন তাদের সংসার হয়েছে। তার স্ত্রী বাবার বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিলেন। এরপর হয়রানির জন্য যৌতুক দাবির মিথ্যা মামলা করেন।