নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকৃতিকন্যা হেমন্তকাল ভরা যৌবনে পা দিতেই গ্রামীণ জনপদ ও নদী অববাহিকায় ভোরের কুয়াশা উঁকি দিচ্ছে। আর এতেই টের পাওয়া যাচ্ছে শীতের আসতে খুব বেশি দেরি নেই। হিমেল হাওয়ার দুলুনিতে সাত সকালে স্বল্প সময়ের জন্য ঠান্ডা অনুভূত হলেও পুরোপুরি শীত কবে নাগাদ নামতে পারে, তা জানার আগ্রহ অনেকের। আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, চলতি নভেম্বরের শেষ দিকে নামতে পারে শীত। এছাড়া এবারের পুরো শীত মৌসুমে মৃদু, মাঝারি ও তীব্র মিলে দশটির মতো শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের গতকাল শনিবার দেওয়া দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাসে এ তথ্য জানিয়ে বলা হয়েছে, চলতি মাসের শেষ থেকে আগামী জানুয়ারি পর্যন্ত দেশে আট থেকে দশটি মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে। তবে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল, উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও মধ্যাঞ্চলে দুই থেকে তিনটি তীব্র শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে। এ সময় দেশের সর্বনি¤œ তাপমাত্রা চার থেকে ছয় ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে যেতে পারে।
প্রসঙ্গত, তাপমাত্রা আট থেকে দশ ডিগ্রি সেলসিয়াস হলে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ, ছয় থেকে আট ডিগ্রি সেলসিয়াসে নামলে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ আর চার থেকে ছয় ডিগ্রি সেলসিয়াস হলে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। আর তাপমাত্রা চার ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নেমে গেলে হয় অতি তীব্র শৈত্যপ্রবাহ।
এ বিষয়ে অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ একেএম নাজমুল হক বলেন, এবার ডিসেম্বর এবং জানুয়ারি মাসে শৈত্যপ্রবাহ চলতে পারে। তবে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাবে ডিসেম্বরের শেষ ও জানুয়ারি মাসের শুরুতে। বর্তমানে সকালের দিকে উত্তরবঙ্গের লোকজন শীতের অনুভূতি পাওয়ার কথা বলছেন। তবে এ মাসের শেষ পক্ষে শীতের অনুভূতি তৈরি হবে দেশের উত্তর-পূর্ব ও উত্তর-পঞ্চিমাঞ্চলে। এবার মোটামুটি শীত পড়তে পাওে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
আবহাওয়া পূর্বাভাস বলছে, ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় লেগে যেতে পারে তীব্র শীত অনুভূত হতে। উত্তরাঞ্চলে এ সময় থেকে ঘন কুয়াশার সঙ্গে শীত অনুভূত হতে পারে। যদিও এরই মধ্যে গ্রামাঞ্চল ও নদী তীরবর্তী এলাকায় কুয়াশা পড়তে শুরু করেছে। তবে ডিসেম্বরের মাঝামাঝি থেকে গ্রামীণ জনপদেও মত নগর জীবনেও শীত অনুভূত হতে পারে। হঠাৎ করেই টানা তিন থেকে চার দিন তীব্র শীতে জবুথবু অবস্থা থাকে। সাধারণত পৌষ ও মাঘ এই দুই মাসে এরকম দেখা যায়। গত মৌসুমে খুব বেশি তীব্র শৈত্যপ্রবাহ ছিল না, কিন্তু কুয়াশার কারণে পরিবেশ অস্বাভাবিক ছিল।
অবশ্য এবার শীত মৌসুমে দেশে আট থেকে দশটি মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে। আর দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল, উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও মধ্যাঞ্চলে দুই থেকে তিনটি তীব্র শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। যদিও তীব্র শীতের আগে আভাস রয়েছে দেশে স্বাভাবিক বৃষ্টিপাতের।
এ সময় বঙ্গোপসাগরে দুই থেকে পাঁচটি লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে, যার মধ্যে এক থেকে দুটি নিম্নচাপ ও ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে। এ সময়ে দিন ও রাতের তাপমাত্রা ক্রমান্বয়ে কমতে পারে। তবে দিন ও রাতের তাপমাত্রা স্বাভাবিক অপেক্ষা কিছুটা বেশি থাকতে পারে।