মালয়েশিয়া নেওয়ার কথা বলে ৩ মাস ধরে যুবককে জিম্মি

4

ঈদগাঁও প্রতিনিধি

সাগরপথে অবৈধভাবে মালয়েশিয়া যাওয়ার পথে বার্মার সামিলা নামক স্থানে আটকে রেখে মো. আলী জোহার (১৯) নামের এক যুবককে নির্যাতন ও মুক্তিপণ দাবির অভিযোগ উঠেছে রাশেল নামের এক মানবপাচারকারীর বিরুদ্ধে। মো. আলী জোহার চকরিয়া উপজেলার খুটাখালী ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডস্থ হরইখোলা গ্রামের আবুল ফয়েজ ও জোবাইরা বেগমের ছেলে।
বিগত ৩ মাস পূর্বে একই ইউনিয়নের নয়াপাড়া গ্রামের আলতাজ মিয়ার পুত্র রাশেল ফুসলিয়ে সাগরপথে জোহারকে মালয়েশিয়া নিয়ে যাওয়ার কথা বলেন। ৪ দিন পর বার্মার সামিলায় আটকে রেখে জোহারের ওপর শুরু হয় শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন। এসময় ছেলে বাবা-মাকে ফোন করে ১ লক্ষ টাকা রাশেলের মাধ্যমে একটি বিকাশ নম্বরে পাঠাতে অনুরোধ করে। নইলে তার জান রক্ষা পাবে না। ছেলেকে ফিরে পেতে এবং দালাল চক্রের সদস্য রাশেলের কথামত বাবা আবুল ফয়েজ ধারদেনা করে ঐ বিকাশ নম্বরে (০১৫৭৬৯২৪৭৬৯) দালাল রাশেলের সহযোগিতায় প্রথমে ৫০ হাজার টাকা পাঠান। পরদিন আরো ৩০ হাজার টাকা এবং ছেলের কাপড়ের জন্য ৫ হাজারসহ সর্বমোট ৮৫ হাজার টাকা পরিশোধ করার ৩ মাস অতিবাহিত হলেও জোহারের কোন খোঁজ মিলছে না।
এ ঘটনায় চকরিয়া থানায় লিখিত অভিযোগ প্রক্রিয়াধীন বলে জানান জিম্মি জোহারের মা জোবাইরা বেগম। আলী জোহারের মা জোবাইরা বেগম অভিযোগ করে বলেন, ‘আমার একমাত্র ছেলে জোহার রাশেলের সাথে কাজ করত। সে সুবাধে গত জানুয়ারি মাসে জোহারকে বাড়ি থেকে কাজে যাওয়ার কথা বলে বের করে। পরে আমার ছেলেকে ভালো বেতনে মালয়েশিয়ায় চাকরির প্রলোভন দেখায় রাশেল। একপর্যায়ে রাশেল আমার ছেলেকে মালয়েশিয়ার নামে বার্মার সামিলায় আটকে রেখে জিম্মি করে নির্যাতন শুরু করে মুক্তির জন্য ১ লাখ টাকা দাবি করেন। টাকা না দেওয়ায় ছেলের সঙ্গে আমাদের কোনো যোগাযোগ করতে দিচ্ছে না। কিছুদিন আগে আমাকে ফোন দিয়ে ছেলেকে মারধর করে। ছেলের কান্নায় আমার বুকটা ফেটে গেছে। আর এসব কিছুর সঙ্গে রাশেল জড়িত। রাশেলের বুদ্ধি পরামর্শে বার্মায় দালালরা আমার ছেলেকে জিম্মি করে নির্যাতন করতেছে।’
ছেলেকে ফিরে পেতে আকুতি জানিয়ে জোবাইরা বলেন, ‘আমার স্বামী পঙ্গু, কোন কাজ করতে পারে না। অসুস্থ স্বামীকে নিয়ে বাকি জীবন সুখে থাকব। কিন্তু আমাদের সব স্বপ্ন শেষ। রাশেল আমার ছেলেকে বিদেশ নিয়ে নির্যাতন করছে। আমাদের সঙ্গে কথাও বলতে দিচ্ছে না। ছেলেকে ফিরিয়ে আনতে সরকারের কাছে সহযোগিতা ও দোষীদের বিচার দাবি করছি।’
জিম্মি জোহারের নিকটাত্মীয়রা বলেন, দালাল রাশেল সহজ-সরল লোকদের অবৈধভাবে মালয়েশিয়া নেওয়ার নামে বার্মায় আটকে নির্যাতন করে এবং মুক্তিপণ চায়।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে রাশেলের মোবাইলে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি তা রিসিভি করেননি। এ বিষয়ে চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।