মারিশ্যা সাব স্টেশনে গ্রাহকদের অতিরিক্ত ও ভূতুড়ে বিদ্যুৎ বিলের অভিযোগ

1

রাঙামাটি ও বাঘাইছড়ি প্রতিনিধি

রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার মারিশ্যা সাব স্টেশনে শতাধিক বিদ্যুৎ গ্রাহক নিয়মবহির্ভূত অতিরিক্ত ও ভূতুড়ে বিলের অভিযোগ করেছেন। তাদের দাবি- মিটার রিডিং যথাযথভাবে না নিয়েই প্রতি মাসে অতিরিক্ত ইউনিট দেখিয়ে বিল করা হয়, যা জনসাধারণের মাঝে চরম অসন্তোষ ও ক্ষোভ প্রকাশ করে।
ভুক্তভোগিরা অনেকেই জানান, নিয়মিত বিল পরিশোধ সত্তে¡ও তারা সেবা পাচ্ছেন না। যেহেতু অতিরিক্ত বিলের বোঝা বহন করতে বাধ্য হচ্ছে গ্রাহকেরা।
অভিযোগ রয়েছে, কোনো পূর্বঘোষণা ছাড়াই বারবার বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে হচ্ছে, যা ভোগান্তি আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে।
সন্তোষ দাস নামে এক গ্রাহক বলেন, চলতি মাসে তার বিল করা হয়েছে ৭,৯৭০ ইউনিট ব্যবহার দেখিয়ে। অথচ বাস্তবে মিটারে রিডিং রয়েছে ৫,০৫৬ ইউনিট। অর্থাৎ, অতিরিক্ত ২,৯১৪ ইউনিটের হিসাব সংযুক্ত করা হয়েছে।
আরেকজন ভুক্তভোগী সুশীল জীবন চাকমা বলেন, ১৮ মে তার মিটারে রিডিং ছিল ৫,১৫৬ ইউনিট, কিন্তু প্রাপ্ত বিলে উল্লেখ করা হয়েছে ৫,৩৬৫ ইউনিট। এতে ২০৯ ইউনিটের অতিরিক্ত বিল আদায়ের চেষ্টা করা হয়েছে।
গ্রাহক সিদ্দিক আলী অভিযোগ করে বলেন, তিনি পিডিবির কাছে প্রায় ৭০০ ইউনিট বিদ্যুৎ বিল পাওনা আছে। তার দাবি, মিটার যাচাই না করেই অনুমান ভিত্তিক অতিরিক্ত বিল করা হয়েছে। তিনি বলেন, আমরা গরিব খেটে খাওয়া মানুষ, এই বাড়তি বিল কি ভাবে পরিশোধ করবো।
তিনি আরো বলেন, অফিসে বসেই বাড়তি বিল তৈরি করে মাস শেষে বাসায় কাগজ পাঠিয়ে দেয়। বিদ্যুৎ বিভাগ কেন আমাদের কাছ থেকে অতিরিক্ত বিল নেবে? তিনি অভিযোগ করে বলেন, সরকারের নাম ব্যবহার করে কিছু কর্মচারী ইচ্ছেমতো অতিরিক্ত বিল করে সেই অর্থ তারা আত্মসাৎ করে।
তিনি পিডিপির সংশ্লিষ্ট দপ্তরের হস্তক্ষেপ কামনা করে বলেন, আমাদের মতো সাধারণ মানুষের যেন এমন হয়রানি থেকে রক্ষা নিশ্চিত করা হয়।
এছাড়া আব্দুল রাজ্জাক নামের আরেক গ্রাহক জানান, তার মিটারে রিডিং-এর চেয়েও অতিরক্তি ইউনিটের বিল দেয়া হয়েছে। মারিশ্যা সাব স্টেশনে সরেজমিনে পরিদর্শন করে এসব অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে।
রবিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে মারিশ্যা দায়িত্বপ্রাপ্ত সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তাকে অফিসে পাওয়া যায়নি। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে দ্বিতীয় বার গিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি। তার সহকর্মীদের কাছে জানতে চাইলে তারা জানান,(আর ই) বর্তমানে রাঙামাটিতে অফিসিয়াল কাজে গেছেন। ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তিনি একবার রিসিভ করেন। সাংবাদিক পরিচয় দেওয়ায় সাথে সাথে মোবাইল কেটে দেন। পরে তাকে একাধিক বার ফোন করলে তার মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়।
অফিসের হিসাবরক্ষক মোঃ ইদ্রিস বলেন, সরকারি নির্দেশ অনুযায়ি অতিরিক্ত বিল করা হচ্ছে। আমাদের ব্যক্তিগতভাবে কিছু করার নেই, আমরা কেবল ঊর্ধ্বতন নির্দেশ পালন করছি। এ বিষয়ে এলাকাবাসী অতিরিক্ত বিল নিয়ে যেন যথাযথ তদন্ত করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হয় প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করেন।
তারা আরো বলেন, এভাবে দায়িত্বহীন আচরণ চলতে থাকলে জনগণের ক্ষোভ আরও বেড়ে যাবে, যা পরিস্থিতিকে জটিল করে তুলতে পারে।
ভুক্তভোগীরা নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ এবং সঠিক মিটার রিডিং নিশ্চিত করার জন্য বিদ্যুৎ বিভাগের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করেন।