মামুনুল হকের বিষয়টি ব্যক্তিগত : বাবুনগরী

13

কথিত ‘দ্বিতীয় স্ত্রী’ ও সোনারগাঁয়ের রয়েল রিসোর্টকান্ডে বিতর্কিত হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হকের ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি সংগঠনটির শীর্ষ নেতৃবৃন্দ। ঘটনাটি মামুনুল হকের ‘ব্যক্তিগত বিষয়’ বলে আখ্যায়িত করেছেন হেফাজতের কেন্দ্রীয় আমির আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী।
গতকাল রবিবার হাটহাজারী মাদ্রাসায় হেফাজতের কেন্দ্রীয় কমিটির শীর্ষ পর্যায়ের জরুরি বৈঠকের পর সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি। মামুনুল হকের অব্যাহতির বিষয়ে তিনি বলেন, আজকের বৈঠকে কাউকে বহিষ্কার বা অব্যাহতির বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত হয়নি।
বৈঠক থেকে হেফাজত নেতাদের বিরুদ্ধে মামলা ও গ্রেপ্তারকৃত নেতাকর্মীদের মুক্তি এবং দেশের বিভিন্ন মাদ্রাসা ও মাদ্রাসার ছাত্র-শিক্ষকদের পুলিশি হয়রানি বন্ধের দাবি করা হয়। এছাড়া আগামী ২৯ মে হাটহাজারী মাদ্রাসায় ওলামা-মাশায়েখ সম্মেলন হবে বলে সিদ্ধান্ত হয়।
এর আগে দুপুর ১২টায় হেফাজতের কেন্দ্রীয় কমিটির শীর্ষ নেতাদের বৈঠক শুরু হয়, যা চলে বিকাল ৩টা পর্যন্ত। এতে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনটির প্রধান উপদেষ্টা মাওলানা মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী। এতে হাতেগোনা হেফাজতের শীর্ষ পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠক শেষে আগামী ২৯ মে জাতীয় ওলামা মাশায়েখ সম্মেলন ঘোষণা করা হয়। এছাড়া দেশের বিভিন্ন স্থানে নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মামলা ও গ্রেপ্তারের নিন্দা জানান বাবুনগরী। দেশে লকডাউনের নামে রমজান মাসে মাদ্রাসা, মক্তব, হিফজ বিভাগ বন্ধের আদেশ প্রত্যাহারের জন্য সরকারের কাছে দাবি জানান তিনি।
বাবুনগরী বলেন, কোরআন তিলাওয়াত এবং দোয়ার মাধ্যমে বালা-মুসিবত দূর হয়ে যায়। সেই হিসেবে দেশের স্বার্থে কওমি মাদ্রাসার কোরআন তিলাওয়াতের পরিবেশ অব্যাহত রাখার অনুমতি প্রদান করা হোক।
তিনি বলেন, আমরা সরকারের পতন চাই না। তাদের কোনো অনুদানও আমরা গ্রহণ করি না। সরকারের সাথে আমাদের কোনো বিরোধ নেই। সরকার প্রয়োজনে ২০০ বছর রাজত্ব করুক কোনো সমস্যা নাই। তবে ইসলাম ও কওমি অঙ্গনের বিরুদ্ধে কোনো হঠকারী পদক্ষেপ গ্রহণ করলে আমরা মেনে নিব না।
তিনি আরও বলেন, বর্তমান কার্যক্রম দেখে মনে হচ্ছে কওমিদের সাথে সরকার যুদ্ধ ঘোষণা করেছে। তবে আমাদের দাবি যদি সরকার মেনে না নেয়, আমরা কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দদের সাথে পরামর্শক্রমে কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবো।
সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদীর সঞ্চালনায় বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন হেফাজতের নায়েবে আমির মাওলানা আব্দুল আউয়াল, মাওলানা সালাউদ্দিন নানুপুরী, মাওলানা ইয়াহইয়া, মাওলানা ওমর মেখলি, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা জুনায়েদ আল হাবিব, অর্থ সম্পাদক মুনির কাসেমী, হাটহাজারী উপজেলা শাখার সভাপতি মাওলানা শোআইব জমিরী, সহকারী সম্পাদক মাওলানা খুরশিদ আলম কাসেমী, যুগ্ম মহাসচিব নাসির উদ্দিন মুনির, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা মীর ইদরিস, প্রচার সম্পাদক জাকারিয়া নোমান ফয়জী, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আতাউল্লাহ, মুফতি সাখাওয়াত হোসাইন রাজি, সহ প্রচার ওলানা ফয়সাল আহমদ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ড. নুরুল আবসার আজহারী, সহকারী দাওয়াত বিষয়ক সম্পাদক মাওলানা ইলিয়াস হামিদী এবং সহ অর্থ সম্পাদক আহসান উল্লাহ প্রমুখ।
প্রসঙ্গত, গত ৩ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে রয়েল রিসোর্টে হেফাজত নেতা মামুনুল হককে এক নারীসহ ঘেরাও করে স্থানীয় লোকজন। তখন মামুনুল দাবি করেন, ওই নারী তার দ্বিতীয় স্ত্রী। এ নিয়ে অনেক হেফাজত নেতা বিব্রত বলে জানালেও কেন্দ্রীয়ভাবে তার ব্যাপারে কোন অবস্থান জানায়নি সংগঠনটি।