অসম্মতি বা বিলম্ব না করে দ্রæত অভিযোগ গ্রহণে থানাগুলোকে নির্দেশ দিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। কিছু থানা সাধারণ ডায়েরি, এফআইআর বা মামলা গ্রহণে অনীহা বা দেরি করছে, এমন অভিযোগ ও গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরের ভিত্তিতে এমন নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। গতকাল শুক্রবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য অফিসার ফয়সল হাসান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত বুধবার এ সংক্রান্ত এক পরিপত্র জারি করেছে মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের পুলিশ-৩ শাখা। খবর বিডিনিউজের
এতে বলা হয়, জননিরাপত্তা বিভাগ অবহিত হয়েছে যে, কোনো কোনো ক্ষেত্রে কোনো কোনো থানায় জিডি/এফআইআর/মামলা গ্রহণে অসম্মতি জ্ঞাপন/বিলম্ব করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে দ্রুত প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে; পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও তদন্ত কার্যক্রম দীর্ঘায়িত করা যাবে না। তীব্র গণ আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদ ছেড়ে ভারতে চলে যাওয়ার পর তার ও তার সরকারের মন্ত্রী, সংসদ সদস্য, কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় পর্যায়ের নেতা এবং আওয়ামী লীগের জোটের শরিকদের বিরুদ্ধে একের পর এক হত্যা মামলা হচ্ছে। পাশাপাশি মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের জন্য গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালেও একাধিক অভিযোগ জমা পড়েছে।
পরিপত্রে বলা হয়, বাংলাদেশ পুলিশ জননিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান। এই প্রতিষ্ঠান তার মর্যাদা পুনঃপ্রতিষ্ঠাকল্পে জনসাধারণের বিভিন্ন অভিযোগ দ্রæত তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালে আলোকচিত্রী তাহির জামান প্রিয় নিহতের ঘটনায় মামলা করতে গিয়ে বিরম্বনায় পড়ে পরিবার। আসামির তালিকায় নিউমার্কেট থানার সাবেক ওসি মো. আমিনুল ইসলাম এবং ডিএমপির সহকারী পুলিশ কমিশনার (নিউমার্কেট জোন) মো. রেফাতুল ইসলামের নাম থাকায় মামলা নথিভুক্ত করতে চায়নি পুলিশ।
মামলার বাকি আসামিদের মধ্যে শেখ হাসিনা ছাড়াও ছিলেন তার সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ-আল মামুন, রমনা জোনের সাবেক ডিসি মোহাম্মদ আশরাফুল ইসলাম ও রমনা জোনের সাবেক এডিসি হাফিজ আল-আসাদ। ২০ আগস্ট সকালে মামলা করার জন্য নিউমার্কেট থানায় যান নিহতের মা সামসি আরা জামান। মামলা না নেওয়ায় থানার সামনে প্ল্যাকার্ড হাতে অবস্থান নেন নিহত প্রিয়র স্বজন ও বন্ধুরা। পুলিশের ঊর্ধ্বতনদের মধ্যস্থতায় ১২ ঘণ্টারও বেশি সময় অপেক্ষায় রাখার পর মধ্যরাতে মামলাটি গ্রহণ করে থানা পুলিশ।
সরকারি চাকরিতে কোটা নিয়ে আন্দোলনের মধ্যে কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচি চলাকালে গত ১৯ জুলাই ঢাকার গ্রিন রোডে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান তরুণ আলোকচিত্রী তাহির জামান। তিনি এক সময় দ্য রিপোর্ট ডট লাইভ নামে একটি নিউজ পোর্টালের ভিডিও জার্নালিস্ট ছিলেন।