মানুষের ওপর টিকার পরীক্ষামূলক প্রয়োগ শুরু

23

বিশ্বজুড়ে মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়া নভেল করোনাভাইরাসের বিস্তারে লাগাম টানতে এর টিকার প্রথম পরীক্ষামূলক প্রয়োগ হল যুক্তরাষ্ট্রে। ওয়াশিংটন স্টেটের সিয়াটলের একটি গবেষণাগারে চারজনের শরীরে এই টিকার প্রথম ডোজ দেওয়া হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব এলার্জি অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস গত সোমবার মানুষের ওপর টিকার পরীক্ষামূলক প্রয়োগ শুরুর তথ্য জানিয়েছে। সিএনএন বলছে, ৪৫ জন স্বাস্থ্যবান প্রাপ্তবয়স্কের ওপর ছয় সপ্তাহ সময় নিয়ে এই পরীক্ষা চালানো হবে। প্রত্যেকের শরীরে দু’টি ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে এই টিকা দেওয়া হবে, দ্বিতীয় ইঞ্জেকশনটি দেওয়া হবে ২৮ দিন পর।
বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, পরীক্ষামূলক এই প্রয়োগ সফল হলেও সাধারণ মানুষের জন্য তা বাজারে আসতে ১৮ মাস পর্যন্ত লেগে যেতে পারে। সিয়াটলের দুই সন্তানের জননী ৪৩ বছরের এক নারীকে প্রথম এই টিকা দেওয়া হয়েছে। ‘এটা আমার জন্য দারুণ সুযোগ’, বলেছেন জেনিফার হলার নামের ওই নারী।
নভেল করোনাভাইরাসের টিকা আবিষ্কারে বিশ্বের অন্যান্য দেশেও জোর চেষ্টা চলছে। মানুষের ওপর প্রথম এই পরীক্ষামূলক প্রয়োগে টিকাটি প্রাণীদেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখে কি না সে বিষয়ে নজর রাখা হবে। এই টিকা আবিষ্কারের পেছনে রয়েছে যে বায়োটেকনোলোজি কোম্পানি, মডার্না থেরাপিউটিকস বলছে, পরীক্ষিত প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়েই এটি তৈরি করা হয়েছে।
হামের মতো প্রচলিত টিকাগুলো মৃত বা দুর্বল ভাইরাস ব্যবহার করে তৈরি করা হয়। তবে এমআরএনএ-১২৭৩ টিকাটি এই ভাইরাস থেকে তৈরি করা হয়নি। তার বদলে এখানে ভাইরাসটির জেনেটিক কোড ব্যবহার করা হয়েছে, যা গবেষণাগারেই তৈরি করেছেন বিজ্ঞানীরা। এই টিকা কভিড-১৯ রোগ সৃষ্টি করবে না, বরং ভাইরাস সংক্রমণ ঠেকাতে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াবে। খবর বিডিনিউজের
ইমপেরিয়াল কলেজ লন্ডনের সংক্রামক ব্যাধি বিশেষজ্ঞ ডা. জন ট্রেগোনিং বলছেন, ‘এই টিকায় বিদ্যমান প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে। এটা তৈরি করা হয়েছে খুবই উচ্চ মান বজায় রেখে, সেই সব জিনিসই ব্যবহার করা হয়েছে যেগুলো মানুষের জন্য নিরাপদ তা নিশ্চিত হয়ে। যাদের ওপর পরীক্ষামূলক প্রয়োগ হচ্ছে তাদের খুব কাছ থেকে মনিটর করা হবে। হ্যাঁ, এটা খুবই দ্রুত করা হচ্ছে। তবে এই প্রতিযোগিতা ভাইরাসের বিরুদ্ধে, বিজ্ঞানীদের একে অপরের বিরুদ্ধে নয়। এবং এটা করা হচ্ছে মানবতার কল্যাণে’।
যুক্তরাষ্ট্রের এই কোম্পানির মতো বিভিন্ন দেশের প্রায় ৩৫টি কোম্পানি ও প্রতিষ্ঠান নভেল করোনাভাইরাসের টিকা আবিষ্কারের জোর চেষ্টা চালাচ্ছে বলে ব্রিটিশ দৈনিক গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।