মাদক সন্ত্রাস দুর্নীতির বিরুদ্ধে একসাথে কাজ করতে হবে

35

দেশ থেকে মাদক, চোরাচালান, সন্ত্রাস-জঙ্গীবাদ ও দুর্নীতি রোধে সকলকে একসাথে কাজ করার আহবান জানিয়েছেন বিভাগীয় কমিশনার মো. আবদুল মান্নান। তিনি বলেন সড়ক, নৌ-পথ ও সীমান্তবর্তী এলাকা দিয়ে মাদকের সাথে অস্ত্রের চালান আসতে পারে। এ ব্যাপারে বিজিবি, কোস্টগার্ড, পুলিশ ও র‌্যাবসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে নজরদারি বৃদ্ধির পাশাপাশি পর্যাপ্ত চেকপোস্ট স্থাপনসহ ভ্রাম্যমাণ আদালতের কার্যক্রম বৃদ্ধি করতে হবে।
গতকাল বুধবার নগরীর সার্কিট হাউসে পৃথকভাবে অনুষ্ঠিত চট্টগ্রাম আঞ্চলিক টাস্কফোর্সের সভা, বিভাগীয় উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির সভা, জেলা প্রশাসকদের সঙ্গে সমন্বয় সভা ও বিভাগীয় রাজস্ব সম্মেলনে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার অফিস এই সভাগুলোর আয়োজন করেন।
বিভাগীয় কমিশনার বলেন, দেশের সীমান্তবর্তী এলাকার মার্কেটগুলোতে বিদেশি পণ্য বাদ দিয়ে দেশিয় পণ্য বিক্রয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদেরকে আগ্রহী করতে হবে। সকলের ঐকান্তিক প্রচেষ্টা ও আন্তরিক সহযোগিতায় সুষ্ঠু-শান্তিপূর্ণ পরিবেশে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সম্পন্ন করা হয়েছে। নির্বাচনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিরঙ্কুশ বিজয় অর্জনের মাধ্যমে আবারও সরকার গঠন করেছে। দেশের সার্বিক উন্নয়নে সততা, আন্তরিকতা ও নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালনের জন্য প্রধানমন্ত্রী যে ঘোষণা দিয়েছেন তা আমাদেরকে অবশ্যই পালন করতে হবে।
তিনি আরো বলেন, বিভাগের ১১টি জেলার জেলা প্রশাসন কর্তৃক প্রতিমাসে টাস্কফোর্স অভিযানের হার বৃদ্ধিসহ তথ্যাদি যথাসময়ে বিভাগীয় কমিশনার অফিসে প্রেরণ এবং অভিযান পরিচালনায় জেলা প্রশাসকগণকে আরো গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা পালন করতে হবে। সীমান্তবর্তী জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে চোরাচালান নিরোধ কমিটির অনুষ্ঠিত সভা ফলপ্রসূ হওয়ার ব্যাপারে জেলা প্রশাসকগণেরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। সরকার ভর্তুকি দিয়ে বিদেশ থেকে জ্বালানি তেল আমদানি করছে। পেট্রোল পাম্প থেকে ডিজেলসহ অন্যান্য জ্বালানি তেল যাতে পাচার না হয় সে বিষয়ে সীমান্তবর্তী জেলা প্রশাসকগণকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। ফিলিং স্টেশনের মালিকদের সাথে এ ব্যাপারে নিয়মিত যোগাযোগ রাখতে হবে। একইসাথে বিদ্যুতের অপব্যবহার, ব্যাটারি চালিত রিকশা ও ইজিবাইক বন্ধের বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন তিনি।
পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জ ডিআইজি খন্দকার গোলাম ফারুক বলেন, মাদক রোধে পুলিশের পক্ষ থেকে জিরো টলারেন্স থাকবে। অস্ত্র উদ্ধার, চোরাচালান রোধ, জঙ্গি-সন্ত্রাসী ও চিহ্নিত অপরাধীদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এজন্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সংশ্লিষ্ট সকলকে সমন্বয়ভাবে কাজ করতে হবে।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম) আমেনা বেগম বলেন, নগরীর আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি মোটামুটি ভালো। অস্ত্র ও মাদক উদ্ধারসহ অপরাধীদের গ্রেপ্তারে পুলিশ বাহিনী কাজ করে যাচ্ছে। দুর্ঘটনা রোধ, যানজট নিরসনে ড্রাইভিং লাইসেন্সবিহীন চালক ও অবৈধ যানবাহনের বিরুদ্ধে মোবাইল কোর্ট কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।
চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার মোহাম্মদ আবদুল মান্নানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত পৃথক সভাগুলোতে বক্তব্য রাখেন, অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) শংকর রঞ্জন সাহা, বিভাগীয় পরিচালক (স্থানীয় সরকার) দীপক চক্রবর্তী, পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জ ডিআইজি খন্দকার গোলাম ফারুক, বিজিবি’র চট্টগ্রাম রিজিয়নের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক কর্নেল আরেফিন, সিএমপি’র অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম) আমেনা বেগম, অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (উন্নয়ন) মো. নুরুল আলম নিজামী, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী মো. সামসুদ্দোহা, কুমিল্লার কাস্টমস কমিশনার মো. মাহবুবুজ্জামান, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইলিয়াস হোসেন (চট্টগ্রাম), তন্ময় দাস (নোয়াখালী), মো. মাজেদুর রহমান খান (চাঁদপুর), আবুল ফজল মীর (কুমিল্লা), মোহাম্মদ দাউদুল ইসলাম (বান্দরবান), অঞ্জন চন্দ্র পাল (ল²ীপুর), একেএম মামুনুর রশিদ (রাঙামাটি), মো. কামাল হোসেন (কক্সবাজার), মো. শহিদুল ইসলাম (খাগড়াছড়ি), হায়াত উদ-দৌলা খান (ব্রাহ্মণবাড়িয়া), র‌্যাব-৭ এর কোম্পানি অধিনায়ক মেজর মেহেদী হাসান, রেলওয়ে পুলিশ সুপার নওরোজ হাসান তালুকদার, চট্টগ্রাম চেম্বারের সাবেক পরিচালক মাহফুজুল হক শাহ, চট্টগ্রাম জেলা পিপি এডভোকেট একেএম সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, মহানগর পিপি এডভোকেট মো. ফখরুদ্দীন, এডিশনাল পিপি এডভোকেট তারাপদ প্রমুখ। এসময় বিভাগীয় কমিশনারের একান্ত সচিব ও সহকারী কমিশনার হাসান বিন মোহাম্মদ আলী এবং সহকারী কমিশনার মো. জাকারিয়া বিগত সভার সিদ্ধান্ত ও অগ্রগতি তুলে ধরেন। সভায় বিভাগের বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে কর্মরত কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।