মহেশখালীর মিষ্টিপান চাষিদের মুখে হাসি

177

এ বছর মহেশখালীর মিষ্টি পান চাষিদের মুখে হাসি ফুটেছে। বাজারে এক বিড়া পান (৮০টি) ৩শ থেকে ৪শ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এক বিড়া পান পূর্বে বিক্রি হতো ১শ থেকে ১৫০ টাকায়। বেশি মুনাফা হওয়ায় মহেশখালীর বিভিন্ন ইউনিয়নের প্রান্তিক চাষিরা পান চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন। উপজেলার কালামারছড়া, শাপলাপুর, হোয়ানক, ছোট মহেশখালী ও বড় মহেশখালীর পাহাড়ি এবং সমতল ভূমিতে বাড়ছে পানের চাষ। পানের গুণগত মান ভালো হওয়ায় স্থানীয় বাজারের চাহিদা মিটিয়ে পাইকারদের মাধ্যমে এসব মিষ্টি পান দেশের বাইরেও যাচ্ছে। চলতি মৌসুমে ভালো ফলনে হাসি ফুটেছে চাষিদের মুখে।
উপজেলার শাপলাপুর, ছোট মহেশখালী এবং হোয়ানক এলাকা ঘুরে দেখা যায়, গ্রামজুড়ে অর্থনীতির হাতছানি দিচ্ছে সারি সারি ‘পানের বরজ’। স্থানীয় বেশিরভাগ মানুষই পান চাষের সাথে জড়িত। চাষিরা বিক্রির জন্য বিড়া সাজাচ্ছেন। তবে কৃষি বিভাগ থেকে কোন সহযোগিতা না পাওয়ার অভিযোগ রয়েছে কৃষকদের। কোন কর্মকর্তা বা মাঠ পরিদর্শক পরিদর্শনেও আসেন না। কর্মকর্তাদের সহযোগিতার অভাবে রোগ-বালাইয়ের প্রতিকার পাচ্ছেন না চাষিরা। এতে কখনো কখনো লোকসান গুণতে হচ্ছে।
চাষিরা জানান, ৩০ শতক জমিতে পান চাষে ৬৫-৭৫ হাজার টাকা খরচ হয়। একটি সুস্থ পান গাছ থেকে ৯০-১৫০টি পর্যন্ত পান পাওয়া যায়। মানভেদে প্রত বিড়া পান ৩শ-৪শ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। ভালো ফলন এবং বাজারে দাম থাকলে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত আয় হবে।
শাপলাপুর ইউনিয়নের মুকবেকী গ্রামের বাসিন্দা পানচাষি নুরুল আমিন জানান, এখানকার পান বিক্রি করার জন্য বাজারে নিতে হয় না। গ্রামে এসেই বেপারিরা কিনে নিয়ে যান। সাপ্তাহিক হাটের দিন পান তোলার রীতি থাকলেও পাইকারি ব্যবসায়ীরা প্রতিদিনই পান নিয়ে যাচ্ছেন। পৌষ মাস পর্যন্ত এ পান সংগ্রহ চলবে। সাধারণত দুই ধরনের পান বরজ হয়ে থাকে, একটি পাহাড়ের ঢালুতে, অপরটি বিল বরজ। বিল বরজটি শুষ্ক মৌসুমে হয় এবং পাহাড়ের ঢালুর পান বরজ প্রায় বছর খানেক থাকে।
কালামারছড়া ইউনিয়নের নোনাছড়ি এলাকার বাসিন্দা পানচাষি রমজান আলী জানান, সার, জৈব সার, কীটনাশক না দিলে পানের বরজ নানা রোগে আক্রান্ত হয়। তাই পান চাষের স¤প্রসারণে সরকারি সহযোগিতা দাবি করেন তিনি।
ছোট মহেশখালী ইউনিয়নের লম্বা ঘোনা এলাকার বাসিন্দা পানের পাইকারি ব্যবসায়ী শহিদুল্লাহ জানান, দেশ ছেড়ে বিদেশেও মহেশখালীর পাহাড়ের মিষ্টি পানের ব্যাপক কদর রয়েছে। মহেশখালীর কালামারছড়ার উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা কাইছারুল ইসলাম জানান, মহেশখালীর সমতল ও পাহাড়ের মাটি এবং আবহাওয়া পান চাষের উপযোগী। মাঝে মধ্যে পানের পাতায় মড়কের কারণে চাষিরা ক্ষতির সম্মুখীন হন। সঠিক পরিচর্যা করলে কৃষক বেশি লাভবান হয়ে থাকেন এবং পান চাষিরা বিভিন্ন পরামর্শ নিতে কৃষি অফিসে আসলে কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হয় বলে জানান তিনি।