মহেশখালীতে স্বামীর নির্যাতনে স্ত্রীর মৃত্যু

1

মহেশখালী প্রতিনিধি

নিজ শয়নকক্ষেই পড়েছিল নারীর নিথর দেহ। সকালে উঠোনে খেলছিল দুই বছর বয়সী মেয়ে। পার্শ্ববর্তী নূরানী মাদ্রাসায় পড়ুয়া ৭ বছরের ভাই ভাত খেতে এসে বোনের কাছ থেকে ভাত চাইলেও বোনের সাড়া শব্দ পায়নি। প্রতিবেশীদের ডেকে আনলে সবাই দেখতে পায় খাটে পড়ে আছে গৃহবধূর লাশ। ততক্ষণে পালিয়ে গেছে ঘাতক স্বামী।
গত শুক্রবার দুপুরে মহেশখালী উপজেলার হোয়ানক ইউনিয়নের পূর্ব জামালপাড়া গ্রামের মৌলভী কাটা’র পাহাড়ি এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। স্বামীর নির্যাতনে ওই নারীর মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে। নিহত গৃহবধূর নাম সুমাইয়া আক্তার (২২)। খবর পেয়ে মহেশখালী থানার পুলিশ গিয়ে ওই গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করে।
লাশটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ। ঘটনার পর থেকে পলাতক ছিল স্বামী রমজান আলী। মহেশখালী থানার পুলিশ অভিযান চালিয়ে রমজান আলীকে গ্রেপ্তার করে।
নিহত গৃহবধূর দাদা মোহাম্মদ ছৈয়দ কবির বলেন, তিন বছর আগে সুমাইয়া আক্তারের সঙ্গে একই ইউনিয়নের পূর্ব জামালপাড়ার বাসিন্দা আজিজুল হকের ছেলে নির্মাণ শ্রমিক রমজান আলীর বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই বিভিন্ন সময় সুমাইয়ার ওপর নির্যাতন করে আসছিলেন স্বামী রমজান। শুক্রবার সকাল সাতটার দিকে সুমাইয়ার শ্বশুরবাড়ির পাশে নূরানী মাদ্রাসায় পড়ুয়া ছোট ভাই সাইফুল ইসলাম বোনের শ্বশুরবাড়িতে ভাত খেতে গিয়ে খাটের ওপর লাশটি দেখতে পায়। এ সময় সুমাইয়ার দুই বছরের মেয়ে শিশুটি উঠোনে খেলছিল। সুমাইয়ার ছোট ভাই সাইফুল বিষয়টি তাৎক্ষণিকভাবে প্রতিবেশীদের জানালে তারা গিয়ে গৃহবধূ সুমাইয়ার লাশ দেখতে পান। তারা সুমাইয়ার আত্মীয়-স্বজনদের খবর দেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসেন তারা। তাদের দাবি, শুক্রবার ভোররাতে স্বামী সুমাইয়াকে নির্যাতনের পর হত্যা করে পালিয়ে যান।
খবর পেয়ে দুপুরে মহেশখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ কাইছার হামিদের নেতৃত্বে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশটি উদ্ধার করেন।
মহেশখালী থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ কাইছার হামিদ বলেন, লাশের গলায় আঘাতের চিহ্ন দেখা গেছে। নির্যাতনের পর ওই গৃহবধূকে গলা টিপে হত্যা করা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর আসল রহস্য উদ্ঘাটন করা সহজ হবে। গৃহবধূর স্বামী রমজানকে আটক করা হয়েচে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বলে জানান ওসি।