মহিমান্বিত শবে বরাত

1

সৈয়দ মোহাম্মদ জালাল উদ্দিন আল আযহারী

বহুল পরিচিত ‘শবে বরাত’ শব্দটি ফার্সি। পবিত্র কুরআনে যাকে ‘লাইলাতুম্ মুবারাকা’ আর হাদীস শরীফে “লাইলাতুন্ নিস্ফে মিন শা’বান” বা শাবানের মধ্য রজনী নামে আখ্যায়িত করা হয়েছে। আবার বিভিন্ন কিতাবে একে ‘শবে বরাত’ (ভাগ্যরজনী), ‘লাইলাতুল বরাত’ (বন্টনের রজনী), ‘লাইলাতুর রহমাহ’ (করুণার রজনী), ‘লাইলাতুছ্ ছাক্ব’ বা (মুক্তির সনদপ্রাপ্তির রজনী) ইত্যাদি নামেও অভিহিত করা হয়েছে। যে রাতটিকে প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম, সলফে সালেহীন এবং বিজ্ঞ মনীষীগণ অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে পালন করেছেন এবং যুগে যুগে মুসলমানগণও এ রাতটি পালন করে আসছেন।

পবিত্র কোরআনুল করীমের আলোকে শবে বরাত :
পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেন, হা-মীম। শপথ সুস্পষ্ট কিতাবের। আমি একে (কুরআন) এক বরকতময় রাতে নাজিল করেছি। নিশ্চয়ই আমি সতর্ককারী। এ রাতে প্রত্যেক প্রজ্ঞাপূর্ণ বিষয় স্থিরকৃত হয়। আমার পক্ষ থেকে আদেশক্রমে, আমিই প্রেরণকারী। আপনার পালনকর্তার পক্ষ থেকে রহমতস্বরূপ। তিনি সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ।’ (সুরা দুখান : আয়াত ১-৬)
হযরত ইকরামা রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু বলেন, লাইলাতুল মুবারাকাহ্ মানে এখানে ‘শবে বরাত’কে বুঝানো হয়েছে। এ রাতেই পবিত্র কোরআন একই সাথে সম্পূর্ণরূপে লাওহে মাহফুয থেকে প্রথম আসমানে বাইতুল ইয্যত নামক জায়গায় অবতীর্ণ হয় এবং পরবর্তীতে ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ধাপে ধাপে ২৩ বছর জুড়ে অবতীর্ণ হয়।

হাদীস শরীফের আলোকে শবে বরাত :
১. হযরত মুয়ায রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু থেকে বর্ণিত, ‘যখন শাবানের মধ্য রজনী (শবে বরাত) উপস্থিত হয় তখন এক আহবানকারী এ আহবান করতে থাকে, “কোনও ক্ষমা প্রার্থনাকারী আছো কি? আমি তাকে ক্ষমা করবো। কোন প্রার্থী বা ফরিয়াদী আছো কি? আমি তার প্রার্থনা ও ফরিয়াদ কবুল করব। ফলে যে যা প্রার্থনা করবে তাকে তা দেয়া হবে। একমাত্র যেনাকারী ও মুশরিক ব্যতিরেকে। (ছহীহ্ ইবনুল হিব্বান)
২. হযরত আলী রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন- যখন শাবানের মধ্য রজনী উপস্থিত হবে, তখন তোমরা এ রাতটিকে (ইবাদতের মাধ্যমে) উদ্যাপন কর এবং আগত দিনটিকে রোযার মাধ্যমে। কেননা আল্লাহ্ তা‘আলা ওই রাতের সূর্যাস্তের পরক্ষণ থেকেই পৃথিবীবাসীর প্রতি বিশেষ করুণার দৃষ্টি প্রদান করেন এবং এ ঘোষণা দেন- আছ কি কেউ ক্ষমা চাওয়ার? আমি তাকে ক্ষমা করবো। আছ কি কেউ রিযিক প্রার্থনা করার? আমি তাকে রিযিক দ্বারা ধন্য করবো। আছ কি কেউ অসুস্থ? আমি তাকে আরোগ্য দান করবো। আছ কি এমন কেউ? আছ কি এমন কেউ? সুবহে সাদেক উদিত হওয়া পর্যন্ত এভাবে বলা হবে। (সুনানে ইবন মাযা, হা-১৩৮৮, ১৩৯০)
৩. হযরত আয়েশা সিদ্দীক্বা রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহা থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, ‘এক রজনীতে আমি প্রিয়নবীকে বিছানায় খুঁজে পাচ্ছিলাম না। ফলে তাঁকে খোঁজার জন্য ঘর থেকে বের হয়ে পড়লাম। হঠাৎ দেখি তিনি জান্নাতুল বক্বীতে আসমানের দিকে দু’হাত তুলে দোয়া করছেন। আমাকে দেখে তিনি বললেন, তুমি কি এ ভয় করছো যে, আল্লাহ ও তাঁর রাসূল তোমার প্রতি অন্যায় করবেন? আমি বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ্! আমি ভেবেছিলাম আপনি হয়তো আপনার অন্য কোন স্ত্রীর গৃহে প্রবেশ করেছেন। তখন তিনি বললেন, নিশ্চয় আল্লাহ্ তা‘আলা শাবানের মধ্য রজনীতে প্রথমাকাশের দিকে বিশেষ কৃপাদৃষ্টি দান করেন এবং ’কলব’ গোত্রের ছাগলের পশমেরও অধিক পরিমাণ গুনাহগারকে ক্ষমা করেন। (তিরমিযী, হা-৭৩৯)
৪. হযরত আবু মুসা আশয়ারী থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন, নিশ্চয় আল্লাহ্ তা‘আলা শাবানের মধ্য রজনীতে রহমত ভরা দৃষ্টিতে গুনাহগারদের দিকে তাকান। ফলে সকল সৃষ্টিকে ক্ষমা করে দেন, একমাত্র মুশরিক ও অন্য মুসলমান ভাইয়ের প্রতি বিদ্বেষ পোষণকারী ব্যতিরেকে। (সুনান ইবন মাযা, হা: ৪৪৪-৪৪৫)
৫. হযরত আব্দুল্লাহ বিন আমর বিন আছ রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহুমা থেকে বর্ণিত। প্রিয় নবী এরশাদ করেন, সাবানের মধ্য রজনীতে আল্লাহ্ তা‘আলা তাঁর সৃষ্টির প্রতি বিশেষ করুণার দৃষ্টি প্রদান করেন এবং সকল বান্দাকে ক্ষমা করে দেন; কিন্তু দুই শ্রেণীর মানুষকে নয়; বিদ্বেষ পোষণকারী ও আত্মহত্যাকারী। (মুসনাদ আহমদ-৬৬০৪)
বিশ্বনন্দিত ওলামায়ে কেরাম ও তাঁদের কিতাবে শবে বরাত :
ইমাম শাফেয়ী (১৫০-২০৪ হি:) রাহমাতুল্লাহি আলায়হি ‘আল্ উম্ম’ নামক কিতাবে বলেন, ‘আমাদের নিকট এ সংবাদ পৌঁছেছে যে, পাঁচটি রহমতময় রজনীতে দো‘আ কবুল হয়। জুমার রাতে, ঈদুল আযহার রাতে, ঈদুল ফিতরের রাতে, রজব মাসের প্রথম রাতে এবং শাবানের মধ্যরাতে। আমি উপরোক্ত রাতগুলোকে উদ্যাপন করা মুস্তাহাব মনে করি, যদি ফরয মনে করা না হয়। ( আল উম্ম, কিতাবুস সালাত, বাবু সালাতিল ঈদাইন, আল ইবাদাহ ফী লাইলাতিল ঈদাইন)
ইমাম আন নববী (জন্ম ৬৩১ হি, ওফাত ৬৭৬ হি:) বলেনঃ “এ সব রাতে পূর্ববর্তীরা যা কিছু আমল করতেন বলে বর্ণনা করেছেন; আমি তা সবই মুস্তাহাব মনে করি, ফরয নয়।”(আল মাজমু ৫/৪৭)

আল্লামা ইবনুল হাজ্ব মালিকী: (ওফাত-৭৩৭হি:) বলেনঃ “সন্দেহ নেই, রাতটি একটি মুবারক ও মহান আল্লাহর নিকট মর্যাদাসম্পন্ন রাত। তার মহান ফযীলত, গুরুত্ব ও তাতে উম্মতের বিশাল কল্যাণ রয়েছে। সলফে-সালেহীন রাতটির যথেষ্ট মর্যাদা দিতেন এবং তার আগমনের পূর্ব থেকে প্রস্তুতি গ্রহণ করতেন। “ (আল মাদখালঃ খ-২, পৃ-২৫৭)
ইবনে নুজাইম মিসরী হানাফী (মৃঃ ৯৭০ হিঃ) বলেনঃ “রমযানের শেষ দশ রাতে, দুই ঈদের রাতে, পহেলা যিলহজ্ব রাতে, শাবানের পনের তারিখ রাতে জাগ্রত থেকে ইবাদত করা মুস্তাহাবের অন্তর্ভুক্ত। যেমনটি হাদীস সমূহে এসেছে। (বাহরুর রায়েক খ-০২, পৃ-৫৬)
ইমাম সুয়ুতী (৮৪৯-৯১১ হি:) বলেনঃ “শাবান মাসের মাঝ রাতের অনেক ফযীলত রয়েছে এবং এর কিছু অংশ অতিরিক্ত ইবাদতে কাটানো মুস্তাহাব।” (হাকীকত আল সুন্নাহ ওয়াল বিদাহ আও আল আমর বি আল ইত্তিবা ওয়া আল নাহি আনাল ইবতিদা: ১৪০৫/১৯৮৫ সংস্করণ, পৃ-৫৮)
মোল্লা আলী আলক্বারী (ওফাত-১০১৪ হি:-১৬০৬ খৃ) বলেন- এতে কোন বিরোধ নেই যে, শবে বরাতে বণ্টন কাজ সম্পন্ন হয়। আবার এমনও হতে পারে যে, এ বণ্টনটি উভয় রাতে (শবে বরাত ও শবে ক্বদর) সম্পন্ন হয়েছে। এক রাতে সংক্ষেপে এবং অন্য রাতে বিস্তারিতভাবে সম্পন্ন হয়েছে। অথবা এক রাতে পার্থিব বিষয়াদি এবং অন্য রাতে পরকালীন বিষয়াদির বণ্টন সম্পন্ন করা হয়েছে। (মিশকাত এর ব্যাখ্যা গ্রন্থ ‘মিরকাত’ ৩/৯১৯)
এছাড়াও ইবনে তাইমিয়াহ ্(৬৬১-৭২৬ হি: ১২৬৩-১৩২৮খৃ:) বলেন,“যদি মানুষ শবে বরাতে একাকী অথবা বিশেষ জামাত সহকারে নফল নামায আদায় করে, যেমনিভাবে সালফে ছালেহীনগণের অনেকেই করতেন, তাহলে তা খুবই ভাল কাজ।” (সিলসিলাহ-১১৪৪)
তিনি আরও বলেনঃ “এ রাতের ফযীলতে বেশ কিছু মরফূ হাদীস এবং আছার বর্ণিত আছে। যা প্রমাণ করে যে, এ রাতটি ফযীলতপূর্ণ। আর যেহেতু এ বিষয়ে একাধিক হাদীস বর্ণিত হয়েছে এবং পূর্ববর্তীদের আমল সে সকল হাদীসকে সত্যায়ন করে।” ( ইক্তিদাউস সিরাত আল মুস্তাকি-৩০২)
নাসির উদ্দীন আলবানী (মৃ-১৯৯৯খৃ:) বলেন: সারকথা হলো, এ সকল সূত্রের সমষ্টির কারণে (শবে বরাত সম্পর্কীয়) হাদীস নিঃসন্দেহে সহীহ। কোন হাদীস অত্যধিক দুর্বলতা থেকে নিরাপদ হলে এর চেয়ে কম সূত্রের মাধ্যমে সহীহ প্রমাণিত হয়। (সিলসিলাতুল আহাদিসা সহীহাঃ খ-৩, পৃ- ১৮৩)
আশরাফ আলী থানবী (১৮৬৩-১৯৪৩খৃ:) লিখেছেনঃ “ শবে বরাতের এতটুকু ভিত্তি আছে যে, এ মাসের পনের তারিখ দিবা-রাত্রি মহা সম্মানিত ও বরকতময়। আমাদের নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এই রাতে জেগে ইবাদত করার এবং দিনে রোযা রাখার প্রতি উৎসাহিত করেছেন। আর এ রাতে তিনি মদীনার কবরস্থানে গিয়ে মানুষদের জন্যে মাগফিরাতের দু’আ করেছেন।”
মুবারকপুরী: বলেন, জেনে রেখো, শাবানের মধ্যরাতের (শবে বরাতের) ফযীলত সম্পর্কে অনেক হাদীস বর্ণিত হয়েছে। সব হাদীস একত্রিত করলে প্রমাণিত হয় যে, এ রাতের ফযীলতের ক্ষেত্রে নির্ভরযোগ্য প্রমাণ রয়েছে। ’’(তুহফাতুল আহওয়াজীঃ খ-৩, পৃ-৪৪২, ১৩৫৩, দারুল ফিকির)
উপরোক্ত বর্ণনা দ্বারা প্রমাণিত হয়, প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লামই সর্বপ্রথম শবে বরাত উদ্যাপন করেন এবং তাঁরই অনুসরণে যুগে যুগে মুসলমানগণ এ রাতকে বরকতময় রজনী হিসেবে পালন করে আসছেন। বিশেষ করে তাবেয়ীনদের যুগে এ রাতকে আনুষ্ঠানিকভাবে মসজিদে সমবেত হয়ে জামাত সহকারে আদায়ের প্রচলন শুরু হয়। তাঁরা হলেন সর্বশ্রেষ্ঠ যুগের মানুষ। তাই প্রিয় নবীর প্রবর্তিত এ ইবাদতকে বিদ‘আত বলা প্রিয়নবীর বিরোধিতারই শামিল।
বিশ্বখ্যাত লেখক ও তাঁদের কিতাবে শবে বরাত :
মুসলিম বিশ্বের মহামনীষীগণ কুরআন করীমের নির্ভরযোগ্য তাফসীরগ্রন্থ, হাদীসের ব্যাখ্যাগ্রন্থ এবং বিশ্বখ্যাত আলেমগণ তাঁদের রচিত কিতাবাদিতে কেউ সংক্ষেপিত আকারে, কেউ বা সবিস্তারে শবে বরাতের ফযীলত ও গুরুত্ব সম্পর্কে লিপিবদ্ধ করে গেছেন। তাঁরা আপন আপন গ্রন্থে লিখেছেন এবং বাস্তব জীবনে রাতটিকে কীভাবে চর্চায় আনা হবে তার নমুনা দেখিয়ে গেছেন। যেমন :
১. ইমাম গাযালী রাহমাতুল্লাহি আলাইহি রচিত ‘এহইয়াউ উলুমিদ্দীন’।
২. হযরত বড়পীর আব্দুল ক্বাদের জ্বীলানী রাহমাতুল্লাহি আলাইহি’র ‘গুনিয়াতুত তালেবীন’।
৩. ইমাম মুহাম্মদ আল জাযারী রাহমাতুল্লাহি আলাইহি’র ‘আদদোয়াউ ওয়াস সালাত ফী দওইল কুরআন ওয়াস সুন্নাহ’।
৪. ইমাম নববী রাহমাতুল্লাহি আলাইহি’র ‘রিয়াদ্বুস সালেহীন’।
৫. শায়েখ আব্দুল হক্ব মুহাদ্দিসে দেহলভী রাহমাতুল্লাহি আলাইহি’র ‘মা ছাবাতা বিস সুন্নাহ’।
এছাড়াও আরো অসংখ্য মূল্যবান গ্রন্থে লাইলাতুল বারাআত এবং মাহে শাবান প্রসঙ্গে দীর্ঘ আলোচনা শবে বরাতের তাৎপর্য, মাহাত্ম ও মর্যাদার উপর সুস্পষ্ট প্রমাণ বহন করে।
মক্বা মুর্কারমা ও মদীনা মুনাওয়ারায় শবে বরাত উদযাপনের ইতিহাস :
আল্লামা ফাকিহী (ওফাত ২৭২-২৭৯ হি;) তদীয় ‘আখবারে মক্কা’ গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন: “অতীত থেকে বর্তমান কাল পর্যন্ত মক্কাবাসী নারী-পুরুষগণ শা’বানের মধ্যবর্তী রাতে মসজিদে গমন করে নামায ও তাওয়াফ করেন এবং মসজিদে হারামে কুরআন তিলাওয়াতের মাধ্যমে সারা রাত জেগে থাকেন। এমনকি তারা পূর্ণ কুরআন শরীফ খতম করেন। প্রতি রাকাআতে সূরা ফাতিহার সাথে দশবার সূরা এখলাস তিলাওয়াতের মাধ্যমে ১০০(একশত) রাকাত নামায আদায় করেন। যমযমের পানি পান করেন, এর দ্বারা গোসল করেন এবং অসুস্থদের জন্য তা জমা করে রাখেন। এ সব আমলের মাধ্যমে তারা উক্ত রাতের বরকত অন্বেষণ করে থাকেন।”(আখবারে মক্কা:৩/৮৩)

লেখক : বিভাগীয় প্রধান, ইসলামিক স্টাডিজ, সাদার্ন বিশ্ববিদ্যালয় খতীব, মুসাফিরখানা জামে মসজিদ