মডার্ন সিনটেক্সের শ্রমিকদের ১৪ দফা দাবি আদায়ে আন্দোলনে

1

মিরসরাই প্রতিনিধি

ন্যায্য মজুরিসহ ১৪ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে জাতীয় বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের সুতা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান মডার্ন সিনটেক্স লিমিটেডের শ্রমিকরা আন্দোলনে নেমেছে। ১০ মে সকাল ৮ টা থেকে মর্ডান সিনটেক্স কারখানার প্রধান গেইটে দাবি আদায়ে নানা শ্লোগানে তারা বিক্ষোভ শুরু করেন। এসময় কারখানা এলাকায় সেনাবাহিনী এবং ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ অবস্থান করতে দেখা যায়। বিক্ষোভকারী শ্রমিকরা জানান, বিভিন্ন অভিযোগ ও দাবি নিয়ে শনিবার সকাল থেকে কর্মবিরতি দিয়ে তারা কারখানার বাইরে আন্দোলন করেন। এসময় কারখানার কর্মকর্তারা আশ্বাস দেন, মালিকপক্ষের সাথে আন্দোলনরত শ্রমিকদের প্রতিনিধি নিয়ে বিষয়গুলো নিয়ে কথা বলবে।
শ্রমিকদের ১৪ দফা দাবিগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে- ইনক্রিমেন্ট বাড়িয়ে ইনক্রিমেন্টের এডজাস্ট টাকাগুলো দিতে হবে এবং জুনিয়র অপারেটর যারা আছে তাদের সকলের বেতন সর্বনি¤œ ১৮ হাজার করতে হবে ও ঈদ বোনাস দিতে হবে। সরকারি বন্ধের দিনগুলোতে কারখানা বন্ধ দিতে হবে। এছাড়া যদি ডিউটি করতেই হয় সেক্ষেত্রে হাজিরার দ্বিগুণ টাকা দিতে হবে। দুপুরের খাবার অফিস কর্তৃপক্ষ খাওয়াতে হবে। একজনকে দিয়ে তিন জনের কাজ করানো যাবে না, জনবল বাড়াতে হবে। শ্রমিকদের হেনস্তা বন্ধ করতে হবে। বেতন প্রতি মাসের ১-৫ তারিখের মধ্যে দিতে হবে। টিফিন টাইম ও লাঞ্চ টাইম পরিপূর্ণ কাটাতে দিতে হবে এবং লাঞ্চের সময় প্রত্যেকটা গেইট ১ ঘণ্টার জন্য উন্মুক্ত করে দিতে হবে। কেউ যদি চাকুরি থেকে বিদায় নিতে চায় তাহলে তাকে পরিপূর্ণ মর্যাদা দিয়ে বিদায় দিতে হবে, কোন হেনস্তা করা যাবে না। বৈষম্য দূর করে সবাইকে সমান মর্যাদা দিতে হবে। প্লান্টের ক্যান্টিনে পণ্যের বাড়তি দাম কমাতে হবে, সাশ্রয়ী মূল্যে পণ্য বিক্রি করতে হবে।
আন্দোলনরত কারখানার জুনিয়র অপারেটর তোফাজ্জেল হোসেন বলেন, এখানে কর্মক্ষেত্রে প্রতি পদে পদে বৈষম্যের সম্মুখীন হতে হয় শ্রমিকদের। আমরা ১৪ দফা দাবি উত্থাপন করেছি। আমাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাবো।
কারখানা শ্রমিক মেহেদী হাসান, এসএম মিলন সানি, আরাফাত আহমেদ জানান, শনিবার সকাল ৮ টা থেকে কারাখানার কাজে যোগ না দিয়ে আন্দোলনে প্রায় ৪ শতাধিক শ্রমিক অংশ নিয়েছে। আমাদের উত্থাপিত ১৪ টি দাবি পূরণে কর্তৃপক্ষ সাড়া না দিলে আন্দোলন চলমান থাকবে।
মর্ডান সিনটেক্স লিমিটেডের ম্যানেজার (এইচ আর) ইয়াসির আরাফাত বলেন, ‌তাদের অন্যতম দাবি হচ্ছে বেতন নিয়ে। কিন্তু আমাদের যখন ইন্টারভিউ হয় তখন আমরা শ্রমিকদের বলে দিই তোমাদের ৮ ঘন্টার স্যালারি প্লাস ডিউটি হবে ১২ ঘন্টা। টোটাল এমাউন্ট তখন বলে দেওয়া হয়। এখানে ওভারটাইমসহ এড করা। শ্রম আইন অনুযায়ী শ্রমিকদের পারফরম্যান্স অনুযায়ী বেতন বাড়বে। পারফরম্যান্স ভালো হওয়ার ভিত্তিতে বেতন বাড়ে।
মর্ডান সিনটেক্স লিমিটেডের জিএম সফল বড়ুয়া বলেন, আমাদের অফিসিয়ালি আগে এসব জানানো হয়নি। হঠাৎ আজ সকালে আন্দোলনে নেমেছে শ্রমিকরা। আমাদের সাথে তারা আগে বসেননি। সব দাবি একজন কর্মকর্তা হিসেবে ম্যানেজমেন্টের পক্ষ থেকে বলতে পারি হুট করে সিদ্ধান্ত নেওয়া যায় না। একসাথে দাবিগুলো মেনে নেওয়া সম্ভব না, এগুলোর জন্য বসার জায়গা আছে; আলোচনার বিষয় আছে। আমরা অনুরোধ করছি আমাদের সাথে বসার জন্য এবং একটি নির্দিষ্ট সময় দেওয়ার জন্য। শ্রমিকদের উচিত কোম্পানির অগ্রগতির পাশে থাকা।