ভোটের সহিংসতায় আহত বিএনপির গয়েশ্বর রায়

32

নির্বাচনী সহিংসতায় আহত হয়েছেন ঢাকা-৩ আসনে ধানের শীষ প্রার্থী বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কেরানীগঞ্জের চুনকুটিয়া এলাকায় এ ঘটনায় বিএনপির আরও বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন বলে দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
ঘটনার জন্য গয়েশ্বর শিবির আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের দায়ী করলেও তারা পাল্টা হামলার অভিযোগ তুলেছে বিএনপির বিরুদ্ধে। আর পুলিশ বলছে, দুই পক্ষের সংঘর্ষে গয়েশ্বরসহ কয়েকজন আহত হয়েছেন। খবর বিডিনিউজের
কেরানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক সুলতান নাসের বলেন, সারা দিন গয়েশ্বর রায়ের নির্বাচনী প্রচার শেষে বিএনপির ১০০ থেকে ১৫০ নেতাকর্মী কেরানীগঞ্জ সাবান কারখানার সামনে দিয়ে বের হন। তখন তারা দেখেন কিছু দূরে আওয়ামী লীগের অন্তত দেড়শ নেতাকর্মী অবস্থান করছেন। তখন তারা সংঘাতের আশঙ্কায় পশ্চিম পাশ দিয়ে অন্য পথে যান।
“আমরা চুনকুটিয়া এলাকায় গেলে পিছন দিক থেকে আওয়ামী লীগ সমর্থকরা আমাদের উপর ইটপাটকেল ও লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলা চালায়। এতে গয়েশ্বরসহ ১৫-২০ নেতাকর্মী আহত হন।”
তিনি বলেন, ইটের আঘাতে গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের মাথা ফেটে যায়। পরে তাকে লাঠি দিয়েও পেটানো হয়। তিনি নিজেও আহত হন। তাৎক্ষণিকভাবে আহত অপর নেতাকর্মীদের নাম জানাতে পারেননি তিনি।
গয়েশ্বর রাজধানীর কাকরাইলে ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে যান। সেখানে বক্তব্যে এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করেন গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।
তিনি বলেন, “আমি প্রধান নির্বাচন কমিশনার নূরুল হুদা সাহেবকে বলছি, আপনি এই ঘটনা তদন্ত করুন। তদন্ত করেন কে দোষী? আপনার এই ধরনের লাগামহীন অর্থাৎ দায়িত্ব পালন না করে সরকারকে সন্তুষ্ট করার যে আপনার চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য সেই কারণেই ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মী ও পুলিশের লোকেরা এতো দুঃসাহস দেখাচ্ছে। তা না হলে তারা এটা দেখাতে পারত না।
গয়েশ্বর ও তার অনুসারীরা তাদের ওপর হামলার অভিযোগ করলেও দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি মিরাজুল ইসলাম সুমন বলছেন, বিএনপি নেতাকর্মীদের হামলায় আওয়ামী লীগের ছয়জন আহত হয়েছেন।
ঘটনার বিবরণ দিয়ে তিনি বলেন, সন্ধ্যায় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা চুনকুটিয়া চৌরাস্তা দিয়ে নৌকার মিছিল নিয়ে যাচ্ছিলেন। এ সময় বিপরীত দিক থেকে আসা বিএনপির একটি নির্বাচনী মিছিল থেকে তাদের উপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে অতর্কিত হামলা চালায়। হামলায় আমাদের ছয়জন কর্মী আহত হয়েছেন।
আহত স্বেচ্ছাসেবক লীগের কর্মী নজরুল, সুজন, মিরাজ, পারভেজ, অপু ও ফালানকে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে জানান এই আওয়ামী লীগ নেতা।
দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার ওসি শাহ জামান বলেন, সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে এবং ঘটনার তদন্ত চলছে।
ঢাকা-৩ (কেরাণীগঞ্জের পাঁচ ইউনিয়ন) আসনে নৌকার প্রার্থী আওয়ামী লীগের নসরুল হামিদ এবং গণফোরামের প্রার্থী মোস্তফা মোহসীন মন্টু। এছাড়াও রয়েছেন বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ প্রার্থী ও স্বতন্ত্র দুইজন।