ভোক্তা হিসাবে প্রতিনিয়তই জনগণ ভোগান্তি ও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, অনেকেই এটাকে নিয়তির নিয়ম হিসাবে মেনে নিচ্ছে। আর ভোক্তারা ক্ষতিগ্রস্ত হলেও নিরবেই অনেকে প্রতিকারের জন্য আইনী সহায়তা নিতে আগ্রহী না হয়ে নিষ্ক্রীয় থেকে যাচ্ছে। ফলে ব্যবসায়ী ও সরকারি সেবা সংস্থাগুলোর স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত হচ্ছে না। অন্যদিকে আইনী দীর্ঘসূত্রিতা ও জটিলতার কারণে জনগণ হয়রানির শিকার হলেও সরকারি অফিস বা আদালতের দ্বারস্থ হতে তেমন আগ্রহী নয়।
বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের একে খান মিলনায়তনে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন ২০০৯ এর অধীনে অভিযোগ দাখিল ও নিষ্পত্তি নিয়ে আয়োজিত সেমিনারে উপরোক্ত অভিমত ব্যক্ত করা হয়।
বক্তারা বলেন, ভোক্তা হিসাবে ক্ষতিগ্রস্ত ও ভোগান্তির শিকার হলে একজন ভুক্তভোগী ক্ষতিপূরণ ও প্রতারিত হলে সরাসরি অতি সহজে বিনা কোর্ট ফি ও অ্যাডভোকেট নিযুক্তি ছাড়াই মোবাইল, ফেসবুক, ইন্টারনেট, চিঠির মাধ্যমে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন ২০০৯ আইনে অভিযোগ দাখিল করে ক্ষতিপূরণ দাবি করতে পারেন। আর অভিযোগ প্রমাণিত হলে জরিমানারও পঁচিশ শতাংশ অভিযোগকারী পাবেন। প্রতি সপ্তাহে জাতীয় ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তরের কেন্দ্রিয়, বিভাগীয় ও জেলা কার্যালয়ে গণশুনানী ও মাঠ পর্যায়ে বাজার অভিযানের মাধ্যমে অভিযোগগুলো দ্রæত নিস্পত্তি করা হচ্ছে। ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইনের সংশোধনী এনে খাদ্য ও ওষুধে কঠিন শাস্তির বিধান সংশোধন করা প্রয়োজন। বাড়ী ভাড়া, চিকিৎসা, আর্থিক লেনদেন এই আইনে প্রতিকার যুক্ত করা দরকার।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদ ও কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) চট্টগ্রামের যৌথ আয়োজনে অনুষ্ঠিত এ সেমিনারে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবরার সালামের সঞ্চালনায় সভাপতিত্ব করেন আইন অনুষদের ডীন অধ্যাপক এবিএম আবু নোমান। বিশেষ অতিথি ছিলেন আইন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. সাজেদা আকতার, ক্যাব কেন্দ্রিয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন, ক্যাব চট্টগ্রাম মহানগরের সভাপতি জেসমিন সুলতানা পারু। সেমিনারে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো. হাসানুজ্জমান, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক সৈয়দ আহসান খালিদ ও ক্যাব চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাধারণ সম্পাদক কাজী ইকবাল বাহার ছাবেরী।
আলোচনায় অংশ নেন ক্যাব যুব গ্রপের সভাপতি চৌধুরী কে এন এম রিয়াদ, যুব গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক নিপা দাস, ক্যাব ফিল্ড অফিসার শম্পা কে নাহার ও জেড এইচ শিহাব প্রমুখ। প্রশ্নোত্তর পর্বে অংশ নেন মুনতাসিুরুল আলম, তুলাচিং মার্মা, ফাহিদা আকতার মজুমদার, অনিক দাস, হামিম আল সাদাত, দ্রুপদি, মুমতাহিম ইসলাম তানজীল, ফাতিমা আল শাহারা আসহান রাইসা, তানভীর কায়সার অনিন্দ, আনিকা আনতারা রিয়া প্রমুখ।
সেমিনারে জানানো হয়, ভোক্তা অধিকার লংঘনের যে কোন ঘটনায় তার প্রমাণসহ লিখিতভাবে সরাসরি বা ডাকযোগে বা সেলফোনে এসএমএস করে, ফ্যাক্সযোগে, ই-মেইলযোগে, সামাজিক যোগাযোগের অন্য মাধ্যমে, অন্য কোন উপায়ে অভিযোগকারীর পূর্ণাঙ্গ নাম, পিতা ও মাতার নাম, ঠিকানা, ফোন, ফ্যাক্স, ও ই-মেইল (যদি থাকে) উল্লেখ করে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয় বা ক্যাব বিভাগীয়, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে অভিযোগ দাখিল করতে পারবেন। প্রয়োজনে নিম্নোক্ত ইমেইলেও অভিযোগ দাখিল করা যাবে। বিজ্ঞপ্তি