ভুয়া নামে ১৪ বছর আনসারে চাকরি অবশেষে ধরা

0

রাঙ্গুনিয়া প্রতিনিধি

রাঙ্গুনিয়া উপজেলার শান্তিনিকেতন অগ্রণী ব্যাংক শাখায় সাধারণ আনসার হিসেবে কর্মরত ছিলেন ইমাম হোসেন প্রধান নামে এক ব্যক্তি। এই নামে তিনি বিভিন্ন জায়গায় ১৪ বছর চাকরি করেন। কিন্তু অবশেষে জানা গেলো ইমাম হোসেন প্রধান নামে চাকরি করা ব্যক্তির প্রকৃত নাম আনারুল হক ওরফে আনারুল (৪৩)। তিনি রংপুরের পীরগঞ্জ থানার রমনাথপুর ইউনিয়নের করিমপুর গ্রামের মো. ছালাম মিয়ার ছেলে। কিন্তু চাকরিতে তার ঠিকানা দেখিয়েছেন পটিয়া উপজেলার কুলাগাঁও এলাকায়। দীর্ঘ ১৪ বছর ভুয়া নাম-ঠিকানা ব্যবহার করে চাকরি করে সরকারের বেতন-ভাতাদি গ্রহণ করে আর্থিক সুবিধা ভোগ করেছেন।
তদন্তে তার প্রতারণার বিষয়টি প্রমাণিত হলে উপজেলা আনসার ও ভিডিপি কর্মকর্তা শামীমা আক্তার বাদী হয়ে রাঙ্গুনিয়া মডেল থানায় তার বিরুদ্ধে প্রতারণা মামলা করেন। পুলিশ অভিযুক্ত ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে শনিবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করে।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি রাঙ্গুনিয়া উপজেলা আনসার ও ভিডিপি অফিস কর্তৃক তার আওতাধীন সকল অঙ্গীভ‚ত আনসার সদস্যদের ব্যক্তিগত নথি ও কাগজপত্র যাচাই কার্যক্রম শুরু করে। এই যাচাইকালে অভিযুক্ত আনারুল এর দাখিলকৃত কাগজপত্র, নাম-ঠিকানা নিয়ে সন্দেহ হয়। এই নিয়ে তদন্ত করার একপর্যায়ে প্রাথমিকভাবে প্রতীয়মান হয় যে, তার দাখিলকৃত নাম-ঠিকানাটি তার নয়। পরে গত ৯ মে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে সে তার নাম-ঠিকানা ও চাকুরিতে যোগদানের সময় দাখিলকৃত কাগজপত্র সঠিক নয় বলে স্বীকারোক্তি প্রদান করে।
এ ব্যাপারে উপজেলা আনসার ও ভিডিপি কর্মকর্তা শামীমা আক্তার বলেন, ‘অভিযুক্ত আনারুল জ্ঞাতসারে ২০১১ সালে চাকুরিতে যোগদানকালে ভুয়া ও মিথ্যা তথ্য সম্বলিত কাগজপত্র দাখিল করেছে। এমনকি ২০১২ সালে চাকুরির স্মার্টকার্ডেও তিনি ভুয়া নামের সাথে তার নিজের ছবি জুড়ে দিয়েছেন। বাংলাদেশ আনসার বাহিনীতে অঙ্গীভূত আনসার সদস্য হিসেবে যোগদান করে সরকারি কর্মচারী সেজে প্রতারণার মাধ্যমে অপরাধমূলক বিশ্বাসভঙ্গ করে বিগত প্রায় ১৪ বছর অবৈধভাবে চাকুরি করেছেন। এসময় তিনি সরকারের বেতন-ভাতাদি গ্রহণ করে আর্থিক সুবিধা ভোগ করেছেন। যা দন্ডনীয় অপরাধ। পরে বিষয়টি আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে তাদের পরামর্শ এবং তাদের লিখিত আদেশমূলে ওই আনসার সদস্যের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করি। তার বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে রাঙ্গুনিয়া মডেল থানায় হস্তান্তর করি’।
রাঙ্গুনিয়া মডেল থানার ওসি ওমর আলী বলেন, ‘আনারুল অন্যের নাম-ঠিকানা ও কাগজপত্র ব্যবহার করে কোনো প্রশিক্ষণ ছাড়াই দীর্ঘ প্রায় ১৪ বছর চাকুরি করে সরকারি সুযোগ-সুবিধা ভোগ করে। জিজ্ঞাসাবাদে তার প্রতারণার বিষয়টি উঠে এলে উপজেলা আনসার ভিডিপি কর্মকর্তা বাদি হয়ে মামলা করেন এবং আমাদের কাছে তাকে হস্তান্তর করেন। আমরা মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করেছি।’