নিজস্ব প্রতিবেদক
চট্টগ্রাম সফরে এসে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উদ্দেশে পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের আসল কাজ হলো একটা ভালো নির্বাচন আয়োজন করা। সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভালো রাখা। যাতে জনগণের আকাঙ্খা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়। সরকার এখন যেগুলো করছে, সেগুলো হচ্ছে বাই প্রোডাক্ট। মন্ত্রণালয়ের যেসব সংস্কার করা হচ্ছে, তা সময়-সুযোগ পাওয়ায় করতে পারছেন। তবে আসল কাজ হলো- এখন থেকে নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নেওয়া।
নগরীর সার্কিট হাউজে গতকাল শনিবার দুপুরে চট্টগ্রামের সরকারি বিভিন্ন সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ। বিভাগীয় ও জেলা প্রশাসনের সমন্বয়ে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার উন্নয়ন শারমিন জাহান। সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেনও সভায় বক্তব্য দেন।
সভায় উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, আমরা কিছুদিন মাত্র আছি। এরপর চলে যাব। তবে কিছু ট্রেন্ড শুরু করেছি। সুশাসন একদিনে হয় না। তবে আমরা একদম আগের জায়গায় ফিরে যাব না। অতীত থেকে শিক্ষা নিয়ে আমরা সামনের দিকে এগিয়ে যাব। নির্বাচনের আগে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের তাগিদ দিয়ে উপদেষ্টা বলেন, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার শুরু করা জরুরি। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বজায় রাখতে হলে এটা করতে হবে। তবে অনেক রাজনৈতিক প্রভাবশালী আছেন, ক্যাডার আছেন, তারা অস্ত্র জমা দেবেন না স্বাভাবিক। তবে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করতে হবে। নির্বাচনকালীন বৈধ অস্ত্র জমা নিয়ে রাখতে হবে।
মতবিনিময় সভায় চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মিত দেশের প্রথম টানেলকে ‘শো-পিস’ হিসেবে আখ্যায়িত করেন উপদেষ্টা। তিনি বলেন, এই শো-পিস তো বেশি দিন দেখতে আসবে না মানুষ। টানেল দেখার জিনিস না। সভায় সড়ক ও জনপথ অধিদফতরের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী জাহেদ হোসেন টানেলের ভেতর দিয়ে গাড়ি চলাচলের পরিমাণ কম উল্লেখ করে এর পরিমাণ বাড়াতে একটি বিকল্প সড়ক প্রশস্ত করার প্রস্তাব দেন। এর জবাবে উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ টানেলকে ‘শ্বেতহস্তী প্রকল্প’ মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, টানেল করার পর কেন চিন্তা করছেন? আগে তো পরিকল্পনা করা দরকার ছিল। এটি এখন শ্বেতহস্তী প্রকল্পে পরিণত হয়েছে। টানেল চালু রাখতে প্রতিদিন লোকসান দিতে হচ্ছে। আবার আনোয়ারা প্রান্তে পাঁচ তারকা-সাত তারকা রিসোর্ট করা হয়েছে। বিরাট টাকা খরচ হয়েছে। রক্ষণাবেক্ষণ করতে হয়। তাতেও অনেক টাকা দরকার। আর এমন জনশূন্য জায়গায় কে বিনোদন করতে আসবে? এটা নিয়ে ভাবতে হবে। এসব রিসোর্ট বেসরকারি খাতে দেওয়ার চিন্তা আছে জানিয়ে উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, এগুলো দিয়ে দিতে হবে। যদিও কেউ নিতে রাজি হচ্ছে না। দিয়ে দিতে হবে। আয় না হলেও রক্ষণাবেক্ষণ করবে। দেখাশোনা করবে।