ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে ফটিকছড়ির নিম্নাঞ্চল প্লাবিত

1

ফটিকছড়ি প্রতিনিধি

কয়েকদিনের ভারী বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে চট্টগ্রামের ফটিকছড়ির বিভিন্ন নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হবার খবর পাওয়া গেছে। প্লাবিত এলাকার ফসলের ক্ষেতসহ ডুবে গেছে বহু রাস্তাঘাট, মৎস্য খামার। এতে ওই অঞ্চলের মানুষরা চরম দুর্ভোগে পড়েছেন।
রবিবার বেলা ২টায় হালদা নদী পানি বিপদ সীমার কাছাকাছি বলে মুঠোফোনে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের হাইড্রোলজির দায়িত্বে থাকা আরিফা নাজনিন। তিনি বলেন, ভারী বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকলে হালদা নদীর পানি বিপদ সীমানা অতিক্রম করবে।
তবে রবিবার সন্ধ্যায় একটি পয়েন্টে (নারায়ণহাট) এলাকায় হালদার পানি বিপদ সীমা অতিক্রম করেছে বলে জানান চট্টগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. সোহাগ তালুকদার। তিনি বলেন, ভারী বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকলে এবং পাহাড়ি ঢলে হালদা নদীসহ ফটিকছড়ি বিভিন্ন খালে নির্মিত বাঁধের ক্ষতিগ্রস্ত হবার আশাঙ্কা রয়েছে। জানা গেছে, পাহাড়ি ঢল ও অবিরাম বর্ষণের কারণে হালদা নদী ও ধুরুং, লেলাং, মানাইছড়ি, কুতুবছড়ি, বারমাসিয়া, ফটিকছড়ি, হারুয়ালছড়ি, গজারিয়া, শোভনছড়ি, রক্তছড়ি , সর্তা ও তেলপারাই খালের পানি বিপদ সীমার কাছাকাছি দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে । তবে অনেক এলাকায় বাঁধ বেয়ে লোকালয়ে পানি ঢুকে প্লাবিত হবার খবর পাওয়া গেছে। বিশেষ করে উপজলার দাঁতমারা, নারায়নহাট, ভূজপুর, পাইদং, হারুয়ালছড়ি, সুয়াবিল, রোসাংগিরী, নানুপুর, বক্তপুর, ধর্মপুর, সমিতিরহাট, জাফতনগর ও সুন্দরপুর ইউনিয়নের একাধিক এলাকা পানিতে নিমজ্জিত।
এছাড়া ফটিকছড়ি পৌরসভা ও নাজিরহাট পৌরসভার এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। কয়েকটি বাড়ি পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে।
দাঁতমারার বাসিন্দা একরামুল হক জানান, হাসনাবাদ, আকবর পাড়াসহ কয়েকটি এলাকা পানিতে নিমজ্জিত।
নারায়ণহাটের বাসিন্দা মাওলানা মো. মিনহাজ, ফজেলুল করিম, মো. বেলাল জানান, হালদার পানি বেড়ে গেয়ে লোকালয়ে ঢুকে হাপানিয়া, সুন্দরপুর, বলিপাড়া এলাকা প্লাবিত হয়েছে। রাতে হালদার পানি বেড়ে গেলে আরো নতুন এলাকা প্লাবিত হবার সম্ভাবনা রয়েছে।
ভূজপুর ইউনিয়নের মো. জাহেদ জানান, ৫ নং ওর্য়াডের বড়ুয়া পাড়ার হালদা নদীর পূর্বের বাঁধের ভাঙন দিয়ে পানি প্রবেশ করে এলাকা প্লাবিত হয়েছে। তাছাড়া সন্দ্বীপপাড়াও পানিতে নিমজ্জিত বলে তিনি জানান।
নানুপুর ইউপি প্যানেল চেয়ারম্যান তৌহিদুল আলম জানান, ভারী বৃষ্টিতে এলাকার ফসলি জমি ডুবে গেছে।
হারুয়ালছড়ি ইউপি চেয়ারম্যান মো. ইকবাল হোসেন চৌধুরী বলেন, আমার এলাকায় ফটিকছড়ি খালের একটি পয়েন্টে বাঁধ ভেঙে লোকালয়ে পানি ঢুকেছে। এতে এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ফটিকছড়ির বাসিন্দা, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপি যুগ্ম আহবায়ক সরোয়ার আলমগীর বানবাসীর পাশে থাকার জন্য দলীয় নেতা-কর্মীসহ বিত্তবানদের প্রতি আহবান জানান।
রবিবার রাত ৮টায় ফটিকছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে সকল ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। হালদা নদীর দুইটি স্থানের পানি বিপদসীমা অতিক্রম করেছে। নারায়নহাট পয়েন্টে ২০সেমি. ও এনায়েতহাট পয়েন্টে ৩০সেমি. বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। রাতে বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকলে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে। যদি বৃষ্টিপাত কমে যায় তাহলে পানি নেমে যাবে বলে আশা করছি। তারপরও নদী তীরবর্তী মানুষকে সতর্ক থাকতে বলেছেন তিনি।