ভারত-চীনে রুশ তেল সরবরাহ কমাতে কঠোর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা

2

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

ইউক্রেইন যুদ্ধের খরচ চালাতে রাশিয়ার ব্যবহার করা জ্বালানি রাজস্ব আয় কমাতে দেশটির তেলের ওপর নতুন কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। রাশিয়া-ইউক্রেইন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্র অনেক সময়ই নানা নিষেধাজ্ঞা দিলেও এবারই সবচেয়ে কঠোর নিষেধাজ্ঞা দিল। যুক্তরাষ্ট্রের অর্থমন্ত্রণালয় গত শুক্রবার রাশিয়ার তেল উৎপাদক কোম্পানি গ্যাজপ্রোম নেফট ও সার্গুটনেফতেগাস- এর ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। একইসঙ্গে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে রাশিয়ার তেলবাহী ১৮৩ টি জাহাজের ওপর। এই তেল ট্যাংকারগুলোর বেশিরভাগই ভারত ও চীনে তেল সরবরাহের জন্য ব্যবহার হয়ে আসছে। ২০২২ সালে পশ্চিমা দেশগুলোর আরোপ করা নিষেধাজ্ঞার পর রাশিয়া তাদের তেল ব্যবসা ইউরোপ থেকে সরিয়ে এশিয়ার দেশগুলোতে স¤প্রসারণ করে।
যুক্তরাষ্ট্রের নতুন নিষেধাজ্ঞার ফলে রাশিয়ার তেলের শীর্ষ ক্রেতা দেশ ভারত ও চীনে তেল সরবরাহ ব্যাহত হবে। এর ফলে চীন এবং ভারতের তেল পরিশোধক কোম্পানিগুলোকে এখন মধ্যপ্রাচ্য, আফ্রিকা এবং আমেরিকার দেশগুলো থেকে তেল আনতে হবে। এতে তাদের খরচ বাড়বে- বলছেন, ব্যবসায়ী ও বিশ্লেষকরা। ইরান থেকে তেল বহন করে আনা কয়েকটি রুশ ট্যাংকারও যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়েছে।
চীনের বাণিজ্য সংশ্লিষ্ট দুই কর্মকর্তা বলেছেন, নতুন মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কারণে রাশিয়ার তেল আমদানি মারাত্মকভাবে ব্যাহত হবে। সিঙ্গাপুর ভিত্তিক এক ব্যবসায়ী বলেন, নিষেধাজ্ঞা কবলিত তেল ট্যাংকারগুলো গত ১২ মাসে চীনে দৈনিক প্রায় ৯০০,০০০ ব্যারেল রুশ অশোধিত তেল সরবরাহ করেছে। এই তেল সরবরাহ এখন একলাফে অনেক কমে আসবে। ওদিকে, গতবছর প্রথম ১১ মাসে ভারতে রাশিয়ার অশোধিত তেল আমদানি বেড়েছিল ৪ দশমিক ৫ শতাংশ, যা ছিল বছরে দৈনিক ১. ৭৬৫ ব্যারেল বা ভারতের মোট আমদানির ৩৬ শতাংশ।
নিষেধাজ্ঞার ফলে এখন ভারতকে মধ্যপ্রাচ্য, আফ্রিকা এবং আমেরিকার দিকে ঝুঁকতে হলে দাম বেশি পড়ে যাবে বলেই জানিয়েছেন ভারতের তেল পরিশোধক কোম্পানির কর্মকর্তারা। এক কর্মকর্তা বলেন, ‘মধ্যপ্রাচ্যে দাম এরই মধ্যে বাড়ছে। আমাদের মধ্যপ্রাচ্যের তেল না নেওয়া ছাড়া বিকল্পও নেই। আমরা হয়ত যুক্তরাষ্ট্রের তেলের দিকে ঝুঁকতে পারি।’