ভারতে হাসিনাকে চুপ থাকতে হবে

5

পূর্বদেশ ডেস্ক

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে এনে সবার সামনে বিচার করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন দেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) ঢাকায় তার সরকারি বাসভবনে ভারতীয় রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম পিটিআই-কে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে এমন কথা বলেছেন তিনি। এসময় তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ ভারতের কাছে শেখ হাসিনাকে প্রত্যর্পণের অনুরোধ না করা পর্যন্ত তাকে চুপ থাকতে হবে।
পিটিআইয়ের বরাত দিয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ‘দ্য হিন্দু’ জানিয়েছে, ‘ড. ইউনূস বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার নৃশংসতার বিরুদ্ধে বাংলাদেশের জনগণের জন্য ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং ন্যায়বিচারের প্রয়োজনেই শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে আনতে হবে। খবর বাংলা ট্রিবিউনের।
এসময় তিনি জোর দিয়ে বলেন, তাকে ফিরিয়ে আনতেই হবে। তা না হলে বাংলাদেশের মানুষ শান্তিতে থাকবে না। তিনি যে ধরনের নৃশংসতা করেছেন, তাকে এখানে (দেশে) এনে সবার সামনে বিচার করতে হবে।
১৩ আগস্ট শেখ হাসিনার দেওয়া বক্তব্যে ‘ন্যায়বিচারের’ দাবি প্রসঙ্গে ড. ইউনূস বলেন, সাম্প্রতিক সন্ত্রাসী কর্মকান্ড, হত্যা ও ভাঙচুরের সঙ্গে জড়িতদের অবশ্যই তদন্তের মাধ্যমে চিহ্নিত করে শাস্তির আওতায় আনা হবে।
ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনার সময় ড. ইউনূস ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্কের আকাক্সক্ষা ব্যক্ত করেন। তবে তিনি জোর দিয়ে বলেন, দিল্লিকে এই বর্ণনাটি ত্যাগ করতে হবে যে শুধু শেখ হাসিনার নেতৃত্বই দেশের স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করে।
ড. ইউনূস বলেন, বাংলাদেশ যখন ভারতের সঙ্গে শক্তিশালী সম্পর্ককে মূল্য দেয়; দিল্লিকে তখন অবশ্যই ‘আওয়ামী লীগ ছাড়া অন্য সব রাজনৈতিক দল ইসলামপন্থি এবং শেখ হাসিনা ছাড়া দেশ আফগানিস্তানে পরিণত হবে’ এমন ধারণার বাইরে যেতে হবে।
ভারতে বসে দেশের বিষয়ে শেখ হাসিনার রাজনৈতিক মন্তব্য করাকে একটি ‘অবন্ধুসুলভ আচরণ’ হিসেবে অভিহিত করেছেন ড. ইউনূস। তিনি জোর দিয়ে বলেন, বাংলাদেশ থেকে তার প্রত্যর্পণের অনুরোধ না করা পর্যন্ত উভয় দেশকে অস্বস্তিতে না ফেলতে তাকে অবশ্যই রাজনৈতিক ইস্যুতে চুপ থাকতে হবে।
ড. ইউনূসের বক্তব্য, ভারতে তার অবস্থানের বিষয়টিতে কেউ স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে না। তিনি ভারতে আছেন এবং মাঝে মাঝেই দেশের বিষয়ে কথা বলছেন, যা সমস্যা সৃষ্টিকারী। যদি তিনি চুপ থাকতেন আমরা হয়তো ভুলে যেতাম। মানুষ এটিও ভুলে গেছে যে তিনি তার নিজের জগতে থাকতেন। তবে ভারত বসে তিনি যেসব কথা বলছেন, তা কেউই পছন্দ করছেন না।
বাংলাদেশ ভারতকে তার অবস্থান জানিয়ে দিয়েছে কিনা জানতে চাইলে ড. ইউনূস বলেন, মৌখিকভাবে এবং বেশ দৃঢ়ভাবে জানানো হয়েছে যে শেখ হাসিনার চুপ থাকা উচিত।
তিনি বলছিলেন, এটি আমাদের প্রতি একটি অবন্ধুত্বসুলভ আচরণ। তাকে সেখানে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে এবং সেখান থেকেই তিনি প্রচারণা চালাচ্ছেন। তিনি যে স্বাভাবিক নিয়মেই সেখানে গেছেন তা কিন্তু নয়। জনগণের অভ্যুত্থান এবং জনরোষের কারণে তিনি দেশ ছেড়েছেন।