বিশ্ব এখনও বাস করছে করোনাভাইরাসের মহামারির মধ্যে। বিভিন্ন দেশে দৈনিক সংক্রমণও বাড়ছে নতুন করে। আর এসবের মধ্যেই বিজ্ঞানীরা ভারতের একটি দুর্গম সমুদ্র তীরে মারাত্মক একটি ছত্রাকের সন্ধান পেয়েছেন। একাধিক ওষুধ প্রতিরোধী এই ছত্রাকের (সুপারবাগ) কারণে পরবর্তী প্রাণঘাতী মহামারি হতে পারে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে। ক্যানডিডা অরিস বা সি. অরিস নামের এই ছত্রাকটির সন্ধান মিলেছে ভারতের আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম বিজনেস টুডে’র প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে। সুপারবাগ আবিষ্কারের গবেষণাটি গত ১৬ মার্চ এমবায়ো জার্নালে প্রকাশ হয়েছে। দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. অনুরাধা চৌধুরীর নেতৃত্বে এক দল গবেষক বঙ্গোপসাগরের আন্দামান দ্বীপের আটটি প্রাকৃতিক স্থান থেকে সংগ্রহ করা ৪৮টি নমুনা পরীক্ষা করে এই সুপারবাগের সন্ধান পেয়েছেন। গবেষক দল দুটি স্থানের নমুনায় সি. অরিসের সন্ধান পেয়েছেন। এর একটি স্থানে মানুষের চলাচল কম হলেও অপর একটি স্থানে মানুষের সমাগম রয়েছে। গবেষকরা বলছেন এটি মহামারি হয়ে ওঠার যথাযথ পরিস্থিতি রয়েছে। আর মহামারি হয়ে উঠলে বিশ্বজুড়ে ১ বছরেই প্রায় ১ কোটি ১০ লাখ মানুষের মৃত্যু হতে পারে।
গবেষক দলের প্রধান ড. অনুরাধা চৌধুরী জানান, সমুদ্র তীরে পাওয়া সি. অরিস একাধিক ওষুধ প্রতিরোধে সক্ষম। এছাড়া হাসপাতালে যে ধরনের সি. অরিস দেখা যায় তার সঙ্গে জলাভূমিতে পাওয়া ছত্রাকের মিল রয়েছে। গবেষকরা দেখেছে, লবণাক্ত এলাকায় যেসব সি. অরিস পাওয়া গেছে তা একাধিক ওষুধ প্রতিরোধে সক্ষম এবং বেশি তাপমাত্রায় খুব ধীর গতিতে বাড়ে। সুপারবাগ সম্পর্কে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, সি. অরিস ক্ষতের মাধ্যমে শরীরে প্রবেশ করার আগে কয়েক দিন পর্যন্ত ত্বকে থাকতে পারে। একবার রক্তে প্রবেশের পর এটি মারাত্মক অসুস্থতার কারণ হতে পারে। আর এ থেকে পচন হতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্র (সিডিসি) জানিয়েছে সুপারবাগ রক্তে মারাত্মক সংক্রমণের কারণ হতে পারে। বিশেষ করে যাদের মূত্রনিষ্কাশন যন্ত্র কিংবা শ্বাসপ্রশ্বাসের যন্ত্র ব্যবহারের দরকার পড়ে তাদের ক্ষেত্রে সুপারবাগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি।