ভারতের সঙ্গে প্রায় সব নদী নিয়ে সমস্যা রয়েছে উল্লেখ করে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, পানিবণ্টন নিয়ে প্রতিবেশী দেশটির সঙ্গে বাংলাদেশের নীরব থাকার দিন শেষ হয়ে গেছে। গতকাল রোববার দুপুরে ফেনীর পরশুরাম উপজেলার কালিকাপুর এলাকায় মুহুরী নদীর বাঁধের ভাঙন কবলিত বল্লামুখা অংশ পরিদর্শনে গিয়ে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।
রিজওয়ানা বলেন, ভারতের সঙ্গে সরকারি পর্যায়ে অতীতের সরকারের যদি নীরবতা বা নিষ্ক্রিয়তা থেকে থাকে; সেদিন শেষ হয়ে গেছে। বন্যার ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ভারত ও আন্তর্জাতিক স¤প্রদায়কে জানাতে হবে। নদীর পানি কেবলমাত্র রাজনীতি না, এটি কূটনীতি, অর্থনীতিও। সরকারের চশমা নয়, জনগণের চশমা দিয়ে দেখতে এখানে এসেছি। খবর বিডিনিউজের।
উজানের দেশ ভারতের সঙ্গে শুধুমাত্র একটি নদী কেন্দ্রীক সমস্যা এমন নয়, প্রায় সবগুলো নদী নিয়েই সমস্যা রয়েছে উল্লেখ করে পানিসম্পদ উপদেষ্টা বলেন, আমাদের ৫৪ বা ৫৭টি অভিন্ন নদী রয়েছে। কিন্তু আমরা এখনও চুক্তি স্বাক্ষর করতে পারিনি; তিস্তা নিয়েও পারিনি।
বন্যায় অভ্যস্ত না হওয়ার কারণে আপনাদের কাছে (ফেনীর মানুষদের) এটি অস্বাভাবিক মনে হচ্ছে। কিন্তু তিস্তা পাড়ের মানুষের এমন বন্যায় প্রতি বছর দুঃখ করতে হয়। স¤প্রতি বন্যায় আমরা ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কমিয়ে আনতে পারতাম, ফেনীর ২৯ জন মানুষের প্রাণহানি কমাতে পারতাম। সেসব বিষয় উজানের দেশের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক স¤প্রদায়কে বলতে হবে।
তিনি বলেন, তিস্তা চুক্তির খসড়া হওয়ার পরেও তারা (ভারত) স্বাক্ষর করেনি। তিস্তা নদী নিয়ে কী হচ্ছে, সেই বিষয়ে এত দিন আন্তর্জাতিক স¤প্রদায় জানত না। দীর্ঘদিনের সমস্যা নিরসনে সরকারিভাবে মাঠ পর্যায়ে কাজ শুরু করা হয়েছে। বিষয়গুলো আন্তর্জাতিক কনভেনশনে তুলে ধরা সহজ হবে। আগামীতে জাতিসংঘে নদীর বিষয়গুলো পৌঁছে দেওয়া হবে।
আন্তর্জাতিক আইনে বাংলাদেশ ও ভারতের স্বাক্ষর করার সুফল তুলে ধরে রিজওয়ানা বলেন, দুই দেশেরই আর কিছু না হোক, মানবিক কারণে পানি ব্যবস্থাপনা ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা নিয়ে এক জায়গায় বসতে হবে। এ বিষয়ে আমাদের দেশে রূপরেখা নির্ধারণ ও বিশেষজ্ঞ মহলে আলোচনা চলছে।