নিজস্ব প্রতিবেদক
চট্টগ্রাম কলেজে একাদশ শ্রেণিতে কলেজ পরিবর্তনের মাধ্যমে শিক্ষার্থী ভর্তিতে শিক্ষক-কর্মকার্তার সন্তানদের সুযোগ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে অধ্যক্ষ মোহাম্মদ মোজাহেদুল ইসলাম চৌধুরীর বিরুদ্ধে। তুলনামূলক বেশি নম্বর পেয়েও ভর্তির সুযোগ পায়নি অনেক শিক্ষার্থী। অন্যদিকে কম নম্বর পেয়ে ভর্তির ভর্তির জন্য নির্বাচিত হয়েছেন কেউ। এ বিষয়ে প্রতিকার চেয়ে চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ড চেয়ারম্যান প্রফেসর রেজাউল করিমের কাছে অভিযোগ দিয়েছেন অভিভাবকরা। তাদের অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় চট্টগ্রাম কলেজে একাদশ শ্রেণির ৯টি খালি আসনে শিক্ষার্থী ভর্তির কার্যক্রম স্থগিত করেছেন বোর্ড চেয়ারম্যান।
সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রাম কলেজে একাদশ শ্রেণিতে ৯ খালি আসনে কলেজ পরিবর্তনের মাধ্যমে ভর্তির জন্য আবেদন করে শিক্ষার্থীরা। গত বছরের ১৮ ডিসেম্বর কলেজ পরিবর্তনের আবেদন শেষ হয়। কিন্তু চট্টগ্রাম কলেজে ওই ৯টি আসনে ভর্তির জন্য নির্বাচিত হয় তুলনামূলক কম প্রাপ্ত শিক্ষার্থীরা। এসএসসিতে মোট নম্বর ১০০০ হাজারের কম পেয়েও ভর্তির জন্য নির্বাচিত হয়েছে। আবার এসএসসিতে মোট নম্বর ১১০০ নম্বরের বেশি পেয়েও ভর্তির সুযোগ পায়নি। এসব বিষয়ে প্রতিকার চেয়ে চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যানের কাছে অভিযোগ করেন ভর্তি বঞ্চিত শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা। তাদের আবেদন প্রেক্ষিতে চট্টগ্রাম কলেজে ভর্তি কার্যক্রম স্থগিত করে বোর্ড।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মো. রেজাউল করিম নামে একজন অভিভাবক পূর্বদেশকে বলেন, আমার মেয়ে এসএসসিতে ১১৯৬ নম্বর পেয়ে পাস করে। কিন্তু কলেজ পরিবর্তনের মাধ্যমে চট্টগ্রাম কলেজে ভর্তির তালিকায় এর চেয়ে কম নম্বর পাওয়া শিক্ষার্থী রয়েছে। আমি কলেজে অধ্যক্ষকে বিষয়টি জানালে তিনি বলেন, এখন আর সিট খালি নাই। পরে আমি জানতে পারি কলেজের সাথে সম্পৃক্ত শিক্ষক-কর্মকর্তাদের সন্তানদেরকে সুযোগ দিতে এই তালিকা করা হয়েছে। এ বিষয়ে প্রতিকার চেয়ে আমি বোর্ড চেয়ারম্যানের কাছে আবেদন করি। আমাদের আবেদনে প্রেক্ষিতে ওই ৯টি খালি আসনে ভর্তি কার্যক্রম স্থগিত করেছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. মোজাহেদুল ইসলাম চৌধুরী পূর্বদেশকে বলেন, একাদশ শ্রেণির ৯টি খালি আসনে শিক্ষার্থী ভর্তির জন্য আবেদন নেওয়া হয়। আবেদনের ক্ষেত্রে জিপিএ-৫ প্রাপ্তিকে যোগ্যতা হিসেবে ধরা হয়। সে অনুযায়ী আবেদন করা শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে এসএসসিতে জিপিএ-৫ পেয়েছে এমন জন শিক্ষার্থীর তালিকা করে বোর্ডে প্রেরণ করেছি।
তুলনামূলক কম নম্বর প্রাপ্তদের তালিকা বোর্ডের পাঠানোর বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বোর্ডের নির্দেশনায় আবেদন বাছাইয়ের ক্ষেত্রে জিপিএ-৫ প্রাপ্তির ভিত্তিতে তালিকা করার জন্য বলা হয়েছে। মোট নম্বর বা মেরিটের ভিত্তিতে বাছাইয়ের নির্দেশনা নেই। যাদের বাছাই করেছি তারা সবাই জিপিএ-৫ প্রাপ্ত এবং চট্টগ্রাম চট্টগ্রাম কলেজের শিক্ষক-কর্মকর্তাদের সন্তান। প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মকর্তারা এক্ষেত্রে একটু প্রাধান্য পেতেই পারেন।
এদিকে চট্টগ্রাম কলেজের একাদশ শ্রেণিতে ৯টি খালি আসনে ভর্তি স্থগিত রাখার বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর রেজাউল করিম পূর্বদেশকে বলেন, একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি কিংবা কলেজ পরিবর্তনের ক্ষেত্রে আমরা সব সময় মেধাকেই বিবেচনা করি। এখানে কারো প্রতি কোনো ধরণের সহানুভূতি দেখানোর সুযোগ নেই। চট্টগ্রাম কলেজ একাদশ শ্রেণিতে কলেজ পরিবর্তনে ৯টি আসনে ভর্তির বিষয়ে অনিয়মের অভিযোগ করেছেন বেশ কয়েকজন অভিভাবক। পরে কলেজ শাখায় খোঁজ নিয়ে জানতে পারি সবকটি আসনেই তুলনামূলক কম নম্বর প্রাপ্ত শিক্ষার্থীরা ভর্তি সুযোগ পেয়েছে। মেধাবীরা এখানে বঞ্চিত হয়েছেন। তাই আমি চট্টগ্রাম কলেজের ৯টি আসনে ভর্তি কার্যক্রম স্থগিত করেছি। আমি চাই মেধার ভিত্তিতে শিক্ষার্থীরা সুযোগ পাক। আগামী কয়েকদিনের মধ্যে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিব।