যুক্তরাজ্যের ইউরোপীয় ইউনিয়ন ত্যাগ (ব্রেক্সিট) ইস্যুতে ফের গণভোট চায় বেশিরভাগ ব্রিটিশ নাগরিক। এমনটাই উঠে এসেছে নতুন এক জনমত জরিপে। এটি পরিচালনা করেছে ব্রেক্সিট বিরোধী সংগঠন ‘বেস্ট ফর ব্রিটেন’ এবং ডাটা কনসালটেন্সি গ্রুপ ফোকালডাটা। জরিপে দেখা গেছে, যুক্তরাজ্যের সব অঞ্চলের মানুষই এ ইস্যুতে দ্বিতীয় আরেকটি গণভোট চায়। বুধবার এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে তুরস্কভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আনাদোলু এজেন্সি। জরিপে দেখা গেছে, এ মুহূর্তে ব্রেক্সিট ইস্যুতে দ্বিতীয় দফায় গণভোট হলে আগের দফার ফল উল্টে যাবে। এতে যুক্তরাজ্যের ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে থাকার পক্ষে রায় দেবেন ৫৬ শতাংশ ভোটার। বিপরীতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ত্যাগের পক্ষে ভোট দেবেন ৪৪ শতাংশ ভোটার। অর্থাৎ, এখন ভোটাভুটি হলে ১২ শতাংশের ব্যবধানে এগিয়ে থাকবেন ব্রেক্সিটবিরোধীরা।
এদিকে পার্লামেন্টে ব্রেক্সিটের ইস্যুতে নতুন তারিখের প্রস্তাব দিয়েছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে। জানুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে পার্লামেন্টে চূড়ান্ত হবে কিভাবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে যাবে যুক্তরাজ্য। থেরেসা মে বলেন, ৭ জানুয়ারি এ বিষয়ে পুনরায় আলোচনা শুরু হবে। যুক্তরাজ্যের ইইউ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার জন্য হাতে খুব বেশি সময় না থাকায় দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে হবে বলে পার্লামেন্টের অনেক সদস্যই চিন্তিত। মে’র দাবি, ব্রেক্সিট চুক্তির বিতর্কিত বিষয়গুলো নিয়ে চিন্তার কোনও কারণ নেই। গত সপ্তাহে ইইউ সম্মেলনে গিয়ে তিনি নতুন করে আশ্বাস এবং নিশ্চয়তা পেয়েছেন।থেরেসা মে বলেন, ১৪ জানুয়ারিতে শুরু হওয়া সপ্তাহেই এমপি’রা ব্রেক্সিট চুক্তি নিয়ে ভোটাভুটি করবেন।
এ ভোট গত সপ্তাহে হওয়ার কথা থাকলেও মে তা পিছিয়ে দিয়েছিলেন। ভোটাভুটিতে ব্রেক্সিট চুক্তিটি পাস না হওয়ার আশঙ্কার কারণেই মে ওই পদক্ষেপ নেন বলে ধারণা করা হয়।
এই ঘটনায় তার বিরোধীপক্ষরা সন্তুষ্ট নয়। বিরোধী দলীয় নেতা জেরেমি করবিন তার প্রতি অনাস্থা জ্ঞাপন করেছেন। এই ঘটনায় মে ব্যক্তিগতভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হলেও তার সরকার পতন সম্ভব নয়। তবে আস্থাভোটে প্রধানমন্ত্রিত্ব টিকে গেলেও থেরেসা মে’র শাসন করা কঠিন হবে বলে মনে করছেন অনেক টরি এমপি। কারণ আস্থাভোটের মধ্য দিয়ে থেরেসা মে’র কর্তৃত্ব ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এই অবস্থায় ব্রেক্সিট সংকট থেকে উত্তরণে সম্ভাব্য বিকল্প দ্বিতীয় গণভোটের কথা অনেক এমপিই বিবেচনা করছেন। এজন্য পার্লামেন্টে কোনও প্রস্তাবের মত জানানোর সময় তারা মুক্ত ভোট অর্থাৎ তাদের স্বাধীন ইচ্ছামতো ভোট দেওয়ার অধিকার দেওয়ার আহব্বান জানিয়েছেন।