ব্যবসায়ী আব্দুল ওয়াদুদ হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেননকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচ দিনের হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ। ঢাকার মহানগর হাকিম আলী হায়দার আলী শুক্রবার এ আদেশ দেন। একই মামলায় মেননের সঙ্গে আরিফ আহমেদ নামে আরেকজনকেও পুলিশ ৫ দিনের রিমান্ডে পেয়েছে। কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালে গত ১৯ জুলাই নিউ মার্কেট এলাকায় গুলিতে আব্দুল ওয়াদুদ (৪৫) নামে এক ব্যবসায়ী নিহতের ঘটনায় মামলা দায়ের করেন নিহতের স্বজন আব্দুর রহমান। এ মামলায় বৃহস্পতিবার গুলশানের বাসা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকারের মন্ত্রী মেননকে। খবর বিডিনিউজের
গ্রেপ্তারের পরদিন মেননকে জিজ্ঞাসাবাদের আবেদন করলেও তার পক্ষের এক আইনজীবী রিমান্ড বাতিল চেয়ে বলেন, তিনি কোনো নির্যাতন-অত্যাচারের পক্ষে ছিলেন না। তার রাজনৈতিক জীবন পরিচ্ছন্ন ছিল। তিনি বয়স্ক। রিমান্ড না দিয়ে তাকে জামিন দেওয়া হোক।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ওমর ফারুক ফারুকী বলেন, উনি সাম্যের কথা বলতেন, শ্রেণিহীন সমাজের কথা বলতেন। কিন্তু বৈষম্যহীন আন্দোলনের সময় তিনি শেখ হাসিনার পতন ঠেকাতে তার সঙ্গে মিটিং করেন। কীভাবে আন্দোলন দমন করা যায়, সে বিষয়ে পরামর্শ দেন। এই সমস্ত হত্যার দায় তার রয়েছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ড মঞ্জুর করা হোক।
নিউ মার্কেট থানায় দায়ের করা ব্যবসায়ী আব্দুল ওয়াদুদ হত্যা মামলায় মেনন ছাড়াও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ১৩০ জনকে আসামি করা হয়েছে। এর আগে সিলেটে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মামলা করেন কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় আহত এক ছাত্রদল নেতা। সেখানেও আসামি করা হয়েছেন রাশেদ খান মেননকে। আন্দোলন চলাকালে মিরপুরে এক শিক্ষার্থীকে হত্যার ঘটনায় আরেক মামলায় শেখ হাসিনার পাশাপাশি রাশেদ খান মেননের বিরুদ্ধেও আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ জমা পড়েছে। অপরদিকে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানকে নিয়ে ‘আপত্তিকর মন্তব্যের’ অভিযোগে মেননের বিরুদ্ধে ঢাকার মহানগর হাকিম সাইফুল ইসলামের আদালতে আরেকটি মামলা করেছেন মো. জিয়াউল হক নামে এক আইনজীবী। এ মামলায় সুপ্রিম কোর্টের সাবেক বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক ও জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনুকেও আসামি করা হয়েছে। ‘মানহানির’ অভিযোগে বিবাদীদের কাছে ৩০০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দাবি করা হয়েছে।
আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের অন্যতম শরিক বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি। দলটির সভাপতি মেনন আওয়ামী লীগ সরকারের সময় বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রী এবং পরে সমাজকল্যাণমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। সবশেষ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বরিশাল-২ আসন থেকে (উজিরপুর-বানারীপাড়া) তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন।