বোয়ালখালীর ১৫ প্রার্থীর ভাগ্য নির্ধারণ কাল

17

রাজু দে, বোয়ালখালী

ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের ৩য় ধাপে আগামিকাল বুধবার অনুষ্ঠিত হবে বোয়ালখালী উপজেলা পরিষদ নির্বাচন। এ নির্বাচনে তিন পদে ১৫ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এরমধ্যে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে ৭ জন, ভাইস-চেয়ারম্যান পদে ৫ জন ও মহিলা ভাইস-চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৩ জন।
উপজেলার ২ লাখ ১০ হাজার ৩৬০ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ পাবেন। মূলত তাদের ভোটে নির্ধারিত হবে ১৫ উল্লেখিত ১৫ প্রার্র্থীর ভাগ্য।
গত ১৩ মে প্রতীক বরাদ্দের পর সাউন্ডবক্স বাজিয়ে, মাইকিং করে পাড়া-মহল্লার অলি-গলি মাতিয়ে রেখেছেন প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকরা। প্রার্থীরা উঠান বৈঠক, সভা-সমাবেশ করেছেন নিজ নিজ কর্মী-সর্মথকদের নিয়ে। গণসংযোগ করেছেন পথে-প্রান্তরে। ঝুলন্ত সাদা-কালো ও রঙিন পোস্টার-ব্যানারে ছেয়ে গেছে উপজেলার রাস্তা-ঘাট-গ্রাম-গঞ্জ। মাইক্রোবাসসহ বিভিন্ন বাহনে করে বিতরণ করা হয়েছে লিফলেট।
গতকাল সোমবার ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে সৃষ্ট প্রাকৃতিক দুর্যোগের মধ্যেও ব্যস্ত ছিলেন প্রার্থী ও তাদের কর্মী-সমর্থকেরা। গতকাল সোমবার ছিল প্রচার-প্রচারণার শেষ দিন।
এ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ৭ প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থীর সবাই আওয়ামী লীগের দলীয় নেতা। দলীয় প্রতীক না থাকায় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা বিভক্ত হয়ে যার যার পছন্দের প্রার্থীর পক্ষে প্রচার-প্রচারণা চালিয়েছেন। তবে ভোটারদের চেয়ে স্থানীয় তৃণমূল নেতা-কর্মীদের কাছে টানতে মরিয়া ছিলেন প্রার্থীরা। ভোট আসায় কদর বেড়েছে তৃণমূল নেতা-কর্মীদের- এমনটাই দাবি স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীদের।
নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. নুরুল আমিন চৌধুরী (মোটরসাইকেল), সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান রেজাউল করিম রাজা (দোয়াত-কলম), পৌরসভা আওয়ামী লীগের সভাপতি শফিউল আলম শফি (ঘোড়া), দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা ও বর্তমান উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা এসএম সেলিম (কাপ-পিরিচ), আরেক উপদেষ্টা ও স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক পরিচালনা পরিষদের নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ জাহেদুল হক (হেলিকপ্টার), বীর মুক্তিযোদ্ধা এসএম নুরুল ইসলাম (টেলিফোন) এবং প্রবাসী আওয়ামী লীগ নেতা সিআইপি মোহাম্মদ শফিক (আনারস)।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান রেজাউল করিম রাজা বলেন, বর্তমান সরকারের উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করতে ও ধারাবাহিকতার জন্য এ নির্বাচন গুরুত্বপূর্ণ। অবহেলিত বোয়ালখালীকে ঢেলে সাজাতে আমি আবারও নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছি। আমার ব্যক্তিগত চাওয়া পাওয়ার কিছু নেই। তবে একজন নাগরিক হিসেবে অবহেলিত বোয়ালখালীর উন্নয়নে কাজ করতে চাই।
জয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী আনারস প্রতীকে চেয়ারম্যান প্রার্থী সিআইপি মোহাম্মদ শফিক বলেন, ‘আমি গরীবের প্রার্থী, নির্বাচনী মাঠে নেমে গণমানুষের যে ভালোবাসা পেয়েছি তা ভোলার নয়। আমি একজন রেমিটেন্স যোদ্ধা। আমার কষ্টার্জিত অর্থে দেশের উন্নয়নে ভ‚মিকা রেখেছে। তেমনি অবহেলিত বোয়ালখালীর উন্নয়নে ও সাধারণ মানুষের জন্য কাজ করতে চাই’।
হেলিকপ্টার প্রতীকে চেয়ারম্যান প্রার্থী মোহাম্মদ জাহেদুল হক বলেন, এ উপজেলার শিক্ষা-সাহিত্য ও সংস্কৃতিতে গৌরবোজ্জল ইতিহাস রয়েছে। যোগ্য নেতৃত্বের অভাবে এ উপজেলা উন্নয়নে অনেক পিছিয়ে। কিন্তু সময় ফুরিয়ে যায়নি। অপার সম্ভাবনাময় এ উপজেলাকে এগিয়ে নিতে আমি উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছি।
এদিকে ভোটের প্রচারণায় পিছিয়ে নেই উপজেলা পরিষদের ভাইস-চেয়ারম্যন ও মহিলা ভাইস-চেয়ারম্যান প্রার্থীরাও।
এবারের নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান পদে লড়ছেন মো. সেলিম উদ্দিন (তালা), মো. শফিকুল আলম (টিয়া পাখি), মীর নওশাদ (টিউবওয়েল), রিদওয়ানুল হক টিপু (চশমা) ও সজল কান্তি চৌধুরী (উড়োজাহাজ)।
মো. সেলিম উদ্দিন বলেন, আমি বিগত নির্বাচনেও ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রার্থীতা করে জনগণের বিপুল সারা পেয়েছি। তখনকার নির্বাচনের প্রেক্ষাপট ভিন্ন থাকায় বিজয়ী হতে পারিনি। তবে এবারের নির্বাচনে জয়ের ব্যাপারে আমি শতভাগ আশাবাদী।
মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী রয়েছেন শামীম আরা বেগম (প্রজাপতি), মর্জিনা বেগম (কলস) ও উম্মে সালমা (ফুটবল)।
শামীম আরা বেগম বলেন, আমি দীর্ঘদিন রাজনীতির সাথে জড়িত এবং আমাকে বোয়ালখালীর জনগণ ভোট দিয়ে বর্তমান উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস-চেয়ারম্যান হওয়ার সুয়োগ করে দিয়েছেন। সে সুবাধে বোয়ালখালীর প্রতিটি অঞ্চলের মানুষের সাথে কাজ করার সৌভাগ্য আমার হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় নির্বাচনে আমাকে ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করবেন আবারও- এই প্রত্যাশা।