বে-টার্মিনাল নির্মাণে এখনো পতিত সরকারের চুক্তি!

1

মিঞা জামশেদ উদ্দীন

আকস্মিক ২৪/৬/২০২৫ইং দেখা হলো একসময়ের তুখোড় ছাত্রনেতা মিল্টন খন্দকারের সাথে। যুগপৎ আন্দোলন-সংগ্রামের সারথি-সহযোদ্ধাকে। সে বরাবরই বড়ভাই হিসেবে সমীহ করতেন। তখনকার রাজনীতিতে-এ কালচার বা বৈশিষ্ট্যগুলো বিদ্ধমান ছিল- আদর্শ, ত্যাগ, আচার-কৃষ্টি এবং প্রাজ্ঞতার ব্যাপারস্যাপার। তবে এভাবে মাসলম্যান বা টেরোরিস্ট হিসেবে কোন ছাত্রনেতার কদর বা প্রাধান্য ছিল না সাধারণ ছাত্রদের কাছে। এভাবে রাজনীতি চর্চা হতো। দেশের সকল শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানে, ৯০ দশক পর্যন্ত এভাবে রাজনীতি চর্চা হতো। মিল্টন খন্দকার ছাত্র দলের চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি এবং কেন্দ্রীয় ছাত্র দলের চট্টগ্রাম বিভাগীয় সহ-সভাপতি ছিলেন। সীতাকুন্ড ডিগ্রি কলেজে অধ্যায়ন কালে ছাত্র দলের কলেজ শাখার সভাপতিও ছিলেন। এখন তিনি চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপি’র রাজনীতির সাথে জড়িত। স্বভাবসুলভভাবে হঠাৎ দেখাতে এ বিস্ময় প্রকাশ। তখন আমিও সীতাকুন্ড উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা কার্যালয়ে যাওয়া হয়। ওইসময় এসিল্যান্ড আব্দুল্লাহ আল মামুন সাহেবও নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে উপস্থিত ছিলেন। তবে আমাদের যাওয়া ছিল পৃথক পৃথক কাজে। ছাত্রনেতা মিল্টন খন্দকার মাদকের ব্যাপকতা বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, এলাকার অলিতে-গলিতে মাদকের ছড়াছড়ি। বিকেল হলেই এলাকায় এলাকায় প্রাকাশ্য মাদক বিক্রয় শুরু হয়। এ মাদক আসক্তি মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়েছে, যার হাত থেকে স্কুলগামী ছাত্র ও যুব সমাজ পর্যন্ত রক্ষা পাচ্ছে না। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফখরুল ইসলাম মাদক নির্মূলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার আশ্বাস দেন। তবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জানান, এটি তাদের একা পক্ষে নির্মূল করা সম্ভব না। তারপরও যতটুকু সম্ভব, শীঘ্রই এলাকায় এলাকায় অভিযান চালানো হবে। সঙ্গে উপজেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত নির্বাহী ম্যাজিস্টেট ও এসিল্যান্ডকে অভিযানে ইঙ্গিত দিলেন। অতঃপর মিল্টন তার প্রয়োজনীয় কথা শেষে বের হয়ে গেলেন। এর মধ্যে আমার বিষয়টি উপস্থাপনা করা হলো। তবে দুঃখের সাথে জানাতে হয়, এ একটি বিষয় নিয়ে-এ পর্যন্ত তিনবার যেতে হলো ইউএনও মহোদয়ের কাছে। যতবার বলি, তিনি প্রত্যুত্তরে তা দেখবেন বলে আশ্বস্ত করেন। এটি যে শান্তনা প্রত্যুত্তর, তা বলার আর অপেক্ষা রাখে না। অথচ এ ইউপি”র ও স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের অধিনে একাধিক প্রকল্প নেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে ২১/০৮/২০২৪ইং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বরাবরে আবেদনটি করা হয়। এলাকার জলাবদ্ধতা ও আমার বাড়ির রাস্তার বেহাল দশা। বিগত ১৫ বছর ধরে এ যাতনা পোহাতে হয়। বর্ষা এলে-ই কাদা ও হাঁটুজল ভাঙিয়ে চলাচল করতে হয়। সম্ভবত সহসাই এর থেকে নিস্তার পাবো বলে মনে হয় না। এভাবে সব জায়গাই কেমন স্থবির- মন্থরগতি।
চামড়া নিয়েও কেমন প্রথম থেকে এলোমেলো ভাব সংগঠিত হয়। তবে ধারণা ছিল, ভিন্ন কিছু হবে বলে। বিগত কয়েক বছর ধরে সীমাহীন দুর্নীতি ছেড়ে যায়। পানির দরে চামড়া বিক্র করতে হয়। রীতিমতো অবিক্রীত চামড়া খালে ফেলে দিতে হয়। এবার হয়তো তার থেকে কিছুটা হলেও নিস্তার বা উত্তরণ হবে; তারপরও সংশয় কাটে না— অপেক্ষার প্রহর গুনতে হয়। সত্যি তাই হলো!
পরম করুনাময় আল্লাহ্ নামে পশু কোরবানি দেয়া। কোরবানি নিয়েও ঝুটঝামেলা কম হয়নি। পশু কেনাকাটা ছিল সেই এক মহা বিরক্তিকর কাজ। বড় বোনদের জন্যও একটি গরু কিনতে হয়। নিজের জন্য কিনতে হয় ছাগল। যথাযত ভাবগাম্ভীর্যে কোরবানি দেয়া হলো। এর মধ্যে একজন চামড়া ক্রেতাও এলেন। ক্রেতা গরুর চামড়া নিতে রাজি হলেও ছাগলের চামড়া নিতে রাজি নয়। তার মতে ছাগলের চামড়া নিলে ঝামেলায় পড়তে হয়, বিক্র হয় না। বললেন, লিল্লাহ বোড়িং-এ দান করতে। পরে স্থানীয় এক মাদ্রাসাকে দান করা হয়। গরুর চামড়া নিলেন মাত্র ৩শ” টাকা দিয়ে। তবে এর বেশি দিতে রাজি নয়। তাই অকথ্য হলেও এ মূল্যে বিক্রয় করতে হয়। অবশ্য তখনই বিষয়টি আঁচ করতে পেরেছি, এ ক্রেতা চলে গেলে দ্বিতীয় ক্রেতার নাগাল না-ও পাওয়া যেতে পারে; এখানেও চলছে সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ। এ বিষয়টি শতভাগ নিশ্চিত হলাম চলমান ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে । প্রথমে চামড়ার মূল্য ১৫০টাকা অগ্রিম দিলেন এবং বললেন, বাকী ১৫০ টাকা চামড়া নেয়ার সময় দিয়ে-ই নিয়ে যাবে। ঘণ্টা দুয়েক পরে ছোট্ট একটা ছেলে আসলো চামড়া নিতে। ছেলেটির থেকে বাকী টাকা চাইলে বলে, আমাকে কোন টাকা দেয়নি। আগামীকাল টাকা নিয়ে বাসায় দিয়ে যাবো। আমিও কেমন ভাবলাম, আগামীকাল হয়তো আর আসবে না, এসব কথা ছেলেটিকে শিখে দেয়া। কিন্তু রাতের মধ্যে খবর হয়ে গেল চামড়া বিক্রয় হচ্ছে না, দ্বিতীয় দিন পর্যন্ত চামড়া ব্যপারীরা অপেক্ষায় ছিল আড়তদারদের জন্য। এরমধ্য দুই-একজন আড়তদার-ক্রেতা এসে দাম হাঁকে কেনার চাইতে কম। কোথাও কোথাও ক্রেতাও যায়নি। সব মিলেই চামড়া ব্যপারীদের মাথায় হাত; তারা ক্ষুব্ধ হয়ে অবিক্রীত চামড়া খালে নিক্ষেপ করে! এ দৃশ্য ঢাকা-চট্টগ্রামসহ দেশব্যপী একাধিক স্থানে ঘটে। এর মধ্যে সংবাদপত্রের বরাতে জানাযায়, ঈদুল আযহার দ্বিতীয় দিন রবিবার রাতে জেলার ফেনী-পশুরাম এলাকার শুক্কর আলীকে চামড়া নদীতে ফেলে দেয়ার অভিযোগে গ্রেফতার করে পুলিশ। ওই ব্যবসায়ীর অভিযোগ, ৬০০ টাকা দিয়ে কেনা চামড়া বিক্রয় করতে না পারায় নদীতে ফেলে দিতে বাধ্য হয়। দিনাজপুর ফুলবাড়িয়াতে গরুর চামড়া বিক্র করতে হয়েছে মাত্র ৩০০ টাকা থেকে ৬০০টাকা। ছাগলের চামড়া বিক্রয় হয়েছে মাত্র ১০ টাকা। এমতাবস্থায় ব্যবসায়ীরা দাম না পেয়ে নদীতে ফেলে দেয়ার ঘটনা ঘটে। এভাবে সরকারের নির্ধারিত করে দেয়া দামও না পাওয়ায় দেশের একাধিকস্থানে চামড়া খালে ও নদীতে ফেলে দেয়। ব্যবসায়ীদের
অভিযোগ, আড়তদার মাত্র ৭০০ টাকা থেকে ৮০০টাকা দরে চামড়া কিনে। যার ফলে মাঠ- পর্যায়ে ব্যবসায়ীরা বড়ধরনের লোকসান দিতে হয়। এক কথায়, সিন্ডিকেটের কবলে ছিল কোরবানি চামড়া। যার ফলে-এ দশা হয়। সরকারও এতো চেষ্টা করার পরও এ মাফিয়া সিন্ডিকেট ভাঙতে ব্যর্থ হয়।
তবে সরকার কাঁচা চামড়ার দাম নির্ধারিত করে দেয়। ঢাকায় কাঁচা চামড়ার সর্বনিম্ন দাম ১৩৫০ টাকা এবং ঢাকার বাইরে সর্বনিম্ন ১২৫০টাকা। এ ক্ষেত্রে সরকারের নির্ধারিত মুল্যের তালিকাও নয়-ছয় হয়। শহরের চেয়ে মফস্বল এলাকায় চামড়া সংগ্রহের খরচ বেশি পড়ে। বিশেষ করে গ্রাম-পাড়া থেকে কাঁচা চামড়া সংগ্রহ করতে একাধিক হাত বদল ও পরিবহন খরচের মাশুল গুনতে হয়। সেখানে শহর ও রাজধানীতে চামড়া সংগ্রহে তুলনামুলকভাবে অর্থ ও সময় সাশ্রয় হয়। তাছাড়া বেশীরভাগ চামড়া শিল্প বা কারখানা শহর ও রাজধানী ঢাকা কেন্দ্রিক। এসব দিক বিবেচনা করে চামড়ার দাম নির্ধারণ করা উচিত ছিল। তা না করে উল্টো শহরে বাইরে মূল্য নির্ধারণ করা হয় তুলনামুলক কম। এতে করে মাঠ-পর্যায়ে বড় অংকের লোকসান গুনতে হয় প্রান্তিক ব্যবসায়ীদের।
তবে ট্যানারিগুলো লক্ষ্যমাত্রা ছিল, এবার ৮৯-৯০ লক্ষ চামড়া সংগ্রহ করার। বাস্তবে তারাও অতিতের মতো মাফিয়া হয়ে ওঠে। যার ফলে মাঠ-পর্যায়ে অস্থিতিশীল পর্যায়ে ঠেকে।
আরেকটি জনগুরুত্বপূর্ণ বিষয়, যা না বললে নয়। চট্টগ্রাম বন্দর হলো দেশের অর্থনীতির পাইব লাইন। দেশের মোট ৯০শতাংশ আমদানি-রপ্তানি হয় চট্টগ্রামে বন্দর কেন্দ্রিক। অথচ চট্টগ্রাম বন্দরেও অস্থিতিশীল অবস্থা বিরাজ করচ্ছে। ইতিমধ্যে বন্দরের ব্যবস্থাপনা বা হেন্ডলিং বিদেশিদের হাতে ছেড়ে দেয়ার প্রাথমিক সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এ ঘটনায় রাজনৈতিক দল, ব্যবসায়ীসহ স্বয়ং দেশের প্রতিরক্ষা বিভাগ চরম ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানান। এদিকে বন্দর কেন্দ্রিক চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউস সপ্তাহব্যাপী একাধিকবার কলম বিরতি-ধর্মঘট চালিয়ে যাচ্ছে। গত ২৫/৬/২০২৫ইং যথাযথভাবে কাস্টমস হাউসের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা কলম বিরতি-ধর্মঘট পালন করে। চলতি বছরে মে মাসের শেষের দিকে ও জুন মাসের ঈদুল আযহা-এর পূর্বে পর্যন্ত টানা ১৫ দিন কলম বিরতি-ধর্মঘট পালন করে কাস্টমস কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। তাদের দাবি ছিল অভিন্ন। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) বিলুপ্ত করে প্রণীত রাজস্ব অধ্যাদেশ বাতিল এবং টেকসই রাজস্ব ব্যবস্থা ও সংস্কার কমিশনে এনবিআর-এর একজন প্রতিনিধি সংযুক্ত করা। সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সাইফুল আলম সংবাদপত্রকে জানান, কাস্টমস কর্মকর্তা ও কর্মচারীরাদের দফায় দফায় এ আন্দোলনে বন্দরের কার্যক্রম অনেকটা স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। বলতে গেলে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ রয়েছে। অর্থাৎ কাস্টমসে শুল্কায়ন ও বিল এন্ট্রি দাখিল না হওয়ায় পণ্য ডেলিভারি নেওয়া সম্ভব হয় নি। যার ফলে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ থাকে। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংক, অর্থ ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় তড়িৎ প্রদক্ষেপ নেয়া উচিত। এতদ্বা তাদের যুক্তিসঙ্গত দাবি গুলোও মেনে নেয়া উচিত। এরমধ্যে চট্টগ্রাম বন্দরের নানাবিধ সমস্যা আরো প্রকট হয়ে ওঠেছে। চট্টগ্রাম বন্দরে ট্যারিফ বাড়ানোর প্রস্তাবে রীতিমতো বিব্রতকর অবস্থা হয় সংশ্লিষ্টদের। একটি বিদেশি গবেষণা সংস্থা শিপিং সেক্টরের ৫৬টি সেবাখাতের বিপরীতে ৬০ শতাংশ মূল্য বাড়ানোর কথা বলে। এ ঘটনায় বন্দর ব্যবহারকারীদের উদ্বেগ দেখা দেয়। তাদের কথা হলো, বন্দরে ট্যারিফ বাড়ানো হলে সামগ্রিকভাবে জনজীবনে প্রভাব পড়বে। যা কি-না রপ্তানিমুখি গার্মেন্টস সেক্টরসহ সকল প্রকার পণ্যের সাথে এ ট্যারিফ যুক্ত হবে। বর্তমানে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ যে ট্যারিফ আদায় করে, তা ১৯৮৬ সালে নির্ধারণ করা হয়েছিল। পরবর্তীতে ২০০৮ সালে বন্দরে অন্যান্য খাত স্থিত রেখে শুধু ৫টি খ্যাতে ট্যারিফ বাড়ানো হয়। অবশ্য বন্দরের অন্যখাতকে সেবামূলক হিসেবে সার্ভিস দিয়ে আসছিল বন্দর কর্তৃপক্ষ। স্পেনভিত্তিক গবেষণা ও পরামর্শক প্রতিষ্ঠান আইডিএম কনসাল্টিং ও লোকিক ফোরামের-এ প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে ফেরন করা হয়েছে। সরকার এনসিটি পরিচালনার ক্ষেত্রেও নীতিগত কিছু পরিবর্তন এনেছে মনে হয়। এনসিটি পরিচালনায় বেসরকারি সংস্থা সাইফ পাওয়ারটেকের সাথে চুক্তিপত্র পুনর্মূল্যায়ন করা হচ্ছে না। আগামী ৬ জুলাই সাইফ পাওয়ারটেকের চুক্তিপত্রের মেয়াদ শেষ হবে। বিপরীতে নতুন করে এজন্য বন্দর কর্তৃপক্ষ মন্ত্রণালয় থেকে ৭ কোটি টাকা চেয়েছেন। তা আবার ৬ মাসের জন্য-এ এনসিটি পরিচালনার দায়িত্ব নেবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানায়। তবে সরকার ও বন্দরের এ কর্মপন্থা কয়দিন বা স্থায়ী হবে। এ নিয়ে আন্দোলনকারীরা সন্দিহান প্রকাশ করেন।
গত ২৩ জুন ২০২৫ইং চট্টগ্রামের আগ্রাবাদ-বাদামতলী ও চৌমোহনি এলাকায় কিছু বাম রাজনৈতিক সংগঠনের নেতা-কর্মী গাড়িসহকারে মাইক ও লিফলেট প্রচারণা চালাচ্ছেন চট্টগ্রাম বন্দর বেসরকারি করণ ও বিদেশিদের হাতে তুলে দেয়ার সকলপ্রকার চক্রান্তের বিরুদ্ধে। আগামী ২৭ ও ২৮ জুন (২০২৫ইং) বাম দলগুলো লাংমার্চ করবেন বন্দর অভিমুখে। এ প্রচার ও পথসভা তাদের এ আন্দোলনের অংশ। তবে বলতে হয়, বর্তমান অন্তর্র্বর্তীকালীন সরকারের বিরুদ্ধে-এ সর্বপ্রথম এসকল রাজনৈতিক দলগুলো প্রকাশ্য কর্মসূচি দেয়। এবার যা বলবো পতিত সরকারের বিরুদ্ধ; গত ৭ আগস্ট ২০২৪ইং চট্টগ্রাম বন্দরের বে-টার্মিনাল নির্মাণ নিয়ে দৈনিক ভোরের কাগজে আমার একটি কলাম প্রকাশিত হয়। কলামটির শিরোনাম ছিল ‘বে-টার্মিনাল নির্মাণে বিশ্বব্যাংকের ঋণ পুনর্মূল্যান করা উচিত।’ কলামটির সারাংশ ছিল চট্টগ্রাম বন্দরের উপক‚লের হালিশহের বরাবরে প্রস্তাবিত চট্টগ্রাম বন্দরের বে-টার্মিনাল নির্মাণে। ২০২৪ সালে প্রকল্পটি অনুমোদন দেয়ার ওইবছর, অর্থাৎ ২০২৪ সালের ২৯ জুন বিশ্বব্যাংকের বোর্ড অব এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর ৬৫০ মিলিয়ন ডলার অর্থাৎ ৬৫ কোটি ডলার ঋণ অনুমোদন দেয়। বিশ্বব্যাংক এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিশ্বব্যাংক বে-টার্মিনাল, মেরিন ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট প্রকল্পের অর্থায়নের যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, ওই প্রকল্পের অধীনে সমুদ্র¯্রােত ও চরমভাবাপন্ন আবহাওয়া থেকে বন্দরের বে-টার্মিনাল রক্ষায় দীর্ঘ ৬ কিলোমিটার জলবায়ুসহিষ্ণু আড়াআড়ি সন্দ্বীপের সাথে বাঁধ নির্মাণের প্রস্তাব করা হয়। কথা হলো, পতিত সরকারের সাথে বে-টার্মিনাল নির্মাণে বিশ্বব্যাংকের এ ঋণ প্রস্তাবনা চুক্তি ছিল অসামঞ্জস্যপূর্ণ। এ ঋণ চুক্তিতে দেশের স্বার্থকে বিকিয়ে দেয় পতিত ও পালিয়ে যাওয়া সরকার। তখনও বিশ্বব্যাংকের এ ঋণ প্রস্তাবনা নিয়ে বাদপ্রতিবাদে একাধিক কলামও লেখা হয়।
লেখক : কবি, গবেষক ও কলামিস্ট