নিজস্ব প্রতিবেদক
শীত আসার আগেই দেশে বায়ু দূষণের মাত্রা বেড়ে চলছে। গত এক সপ্তাহ ধরে বাংলাদেশের বায়ুর মান খুব অস্বাস্থ্যকর। গতকাল রাজধানী ঢাকার আইকিউএয়ারের বাতাসের মানসূচকে স্কোর ২১৭। এ মান খুব অস্বাস্থ্যকর হিসেবে গণ্য করা হয়। যা বিশ্বে বায়ুদূষণ শহরের মধ্যে চতুর্থ অবস্থান। ঢাকার বায়ুর মান জানা গেলেও বন্দরনগরী চট্টগ্রামের বায়ুদূষণের মান জানা যায় না। চট্টগ্রামে তিনটি বায়ুমান পরিবিক্ষণ কেন্দ্র থাকলেও মাসের অধিকাংশ সময় বন্ধ থাকে। গত চার মাসে অন্তত ৬৫দিন বন্ধ ছিল পরিবিক্ষণ কেন্দ্রগুলো। যান্ত্রিক গোলযোগ, বিদ্যুৎ বিভ্রাটসহ নানা কারণে বন্ধ থাকে এসব পরিবিক্ষণ কেন্দ্র। এসব কেন্দ্র তদারকির দায়িত্বে রয়েছে বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠান। পরিবেশ অধিদপ্তর বলছে, প্রতিষ্ঠানটিকে বার বার তাগাদা দিয়ে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা চলছে।
পরিবেশ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, চলিত নভেম্বর মাসে ১৮দিন বন্ধ ছিল বায়ুমান পরিবিক্ষণ কেন্দ্রগুলো। এসময় বায়ুমানের কোন তথ্য আদান প্রদান করেনি। এর আগে অক্টোবর মাস, সেপ্টম্বর মাসের ১৬দিন, আগস্ট মাসে টিভি স্টেশন পরিবিক্ষণ কেন্দ্র ৩০ দিন, আগ্রাবাদ পরিবিক্ষণ কেন্দ্র ৫ দিন তথ্য আদান প্রদান করেনি। পরিবেশ অধিদপ্তরের তত্বাবধানে সারাদেশে ১৬টি বায়ুমান পরিবিক্ষণ কেন্দ্র রয়েছে। এসব কেন্দ্রের মাধ্যমে সার্বক্ষণিক সারাদেশের বায়ুর মান সম্পর্কে জানা যায়। এছাড়াও আরো ১৫টি বায়ুমান পরিবিক্ষণ কেন্দ্র রয়েছে যা কয়েকটি বিষয়ে বাতাসের মান পরিবিক্ষণ করে তথ্য প্রদান করে। চট্টগ্রামে বায়ুমান পরিবিক্ষণ কেন্দ্র দেখাশোনার দায়িত্বে আছে ইউটেক সিস্টেম লিমিটেড নামে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। কোন ধরনের যান্ত্রিক গোলযোগ দেখা দিলে তারা সেটি দেখাশোনা করে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মানদন্ড অনুযায়ী, বাতাসের বায়ুমানের স্কোর ৫১ থেকে ১০০ হলে তাকে মাঝারি বা গ্রহণযোগ্য মানের বায়ু হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ১০১ থেকে ১৫০ স্কোরকে সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর ধরা হয়। সংবেদনশীল গোষ্ঠীর মধ্যে আছেন বয়স্ক, শিশু, অসুস্থ ব্যক্তি ও অন্তঃসত্ত্বা। স্কোর ১৫১ থেকে ২০০ হলে তা অস্বাস্থ্যকর বাতাস। স্কোর ২০১ থেকে ৩০০ হলে তাকে খুবই অস্বাস্থ্যকর বায়ু ধরা হয়। ৩০১ থেকে তার ওপরের স্কোরকে দুর্যোগপূর্ণ বা ঝুঁকিপূর্ণ ধরা হয়।
ইউটেক সিস্টেম লিমিটেডের ইঞ্জিনিয়ার জামাল উদ্দীন বলেন, ‘আমরা চট্টগ্রাম বিটিভি এবং বিএসআরএম বায়ুমান পরিবিক্ষণ কেন্দ্র বা ক্যামস দেখাশুনা করি। ক্যামস থেকে কেন্দ্রে আমাদের ডাটা আদান-প্রদান হয়। পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে আমাদের সমস্যার কথা জানালে আমরা এসে ঠিক করে দিই।’
পরিবেশ চট্টগ্রাম গবেষণাগারের পরিচালক নাসিম ফারহানা শিরীন বলেন, ‘যান্ত্রিক গোলযোগের কারণে বায়ুমান পরিবিক্ষণ কেন্দ্রের সাথে ইন্টারনেট সংযোগ ছুটে যাচ্ছে। বেসরকারি একটি কোম্পানি এগুলোর তদারকির দায়িত্বে আছে। সমস্যা সমাধানে বারবার তাগাদা দিয়ে যাচ্ছি।’