বেতার তরঙ্গ থেকেই ড্রোন বিস্ফোরণ হবে?

5

যুক্তরাজ্যের সামরিক বাহিনী এমন এক যুগান্তকারী অস্ত্র প্রযুক্তি বিকাশ করছে, যেখানে বেতার তরঙ্গ ব্যবহার করেই আকাশে ড্রোন বিস্ফোরণ করা সম্ভব। ‘রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি ডাইরেক্টেড এনার্জি ওয়েপন (আরএফডিইডবিøউ)’ নামের নতুন এ প্রযুক্তিতে রেডিও ওয়েভের মাধ্যমে প্রতিদ্ব›দ্বীদের গাড়ির ইলেকট্রনিক উপাদান ও ড্রোনে ব্যাঘাত বা বিস্ফোরণ ঘটানো যাবে। এতে করে আকাশ থেকে শত্রুপক্ষের ট্র্যাকিং করার প্রবণতাও কমে আসতে পারে। এ প্রযুক্তি মাটি, আকাশ ও সমুদ্রের এক কিলোমিটার পর্যন্ত ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে, ভবিষ্যতে এ সীমা বাড়তেও পারে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে ব্রিটিশ দৈনিক ইন্ডিপেন্ডেন্ট।
প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক ২০৩০ সাল নাগাদ যুক্তরাজ্যের সামগ্রিক জিডিপি’র আড়াই শতাংশ সামরিক খাতে খরচ করার প্রতিশ্রæতি দেওয়ার পরপরই নতুন অস্ত্র নিয়ে এ তথ্য প্রকাশ পেল।
নতুন এ প্রযুক্তিতে গুলি চালাতে রেডিও তরঙ্গপ্রতি আনুমানিক খরচ পড়বে ১০ পেনি করে, যা বিবেচিত হচ্ছে গতানুগতিক ক্ষেপণাস্ত্রের বিকল্প হিসেবেও। এ ছাড়া, বিপজ্জনক ড্রোনের ঝাঁক ধ্বংস করতেও এটি ব্যবহার করা যেতে পারে।
এ প্রযুক্তি বিভিন্ন ধরনের সামরিক যানে বসানো যাবে। আর একটি রশ্মিতে রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি’র স্পন্দন তৈরির জন্য বিশেষ এক ধরনের শক্তির উৎস ব্যবহার করা হয় এতে, যা দিয়ে কোনো একক লক্ষ্যবস্তুর ওপর ক্রমাগত গুলি করা বা একসঙ্গে একাধিক লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানার সুযোগ মিলবে। খবর বিডিনিউজের
যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষা বিপণন মন্ত্রী জেমস কার্টিজ বলেছেন, ‘আমরা এরইমধ্যে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি খাতের পরাশক্তি। আরএফডিইডব্লিউ’র মতো প্রযুক্তির বিকাশ শুধু আমাদের সামরিক বাহিনীকে শক্তিশালী করে তোলার পাশাপাশি যুদ্ধক্ষেত্রে আরও সুরক্ষিতই রাখে না, বরং বিভিন্ন উদ্ভাবনী সামরিক অস্ত্র বিকাশের বেলায় যুক্তরাজ্যকে বিশ্বের নেতৃস্থানীয় পর্যায়েও রাখে। আমাদেরকে এমন অপ্রচলিত অস্ত্র ব্যবস্থার গুরুত্ব দেখিয়েছে ইউক্রেইনের যুদ্ধ। তবে, এর বিরুদ্ধে আমাদের নিশ্চিতভাবেই দাঁড়ানোর সক্ষমতা থাকতে হবে। আসন্ন বছরগুলোতে প্রতিরক্ষা খাতের খরচ বাড়ানোর সঙ্গে আমাদের ‘ডিফেন্স ড্রোন স্ট্র্যাটেজি’ নিশ্চিত করবে, আমরা এমন যুদ্ধবিবর্তনের ক্ষেত্রে সম্মুখসারীতে আছি’।
ইন্ডিপেন্ডেন্টের প্রতিবেদন অনুযায়ী, এ গ্রীষ্মজুড়ে এইসব নতুন অস্ত্র ব্যবস্থার খুঁটিনাটি পরীক্ষা করবেন ব্রিটিশ সৈন্যরা।
‘প্রজেক্ট হেরসা’ নামে এক প্রকল্পের অধীনে, এই প্রযুক্তি বিকাশে যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন শিল্পের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করেছে দেশটির সরকারি সংস্থা ‘ডিফেন্স সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি ল্যাবরেটরি (ডিএসটিএল)’ ও ‘ডিফেন্স একুইপমেন্ট অ্যান্ড সাপোর্ট (ডিইঅ্যান্ডএস)।
ডিএসটিএল-এর প্রধান নির্বাহী পল হলিনশেড বলেন, ‘এইসব ‘গেইম-চেঞ্জিং’ সিস্টেম যুক্তরাজ্যের সামরিক বাহিনীর অপারেশনাল অগ্রগতিতে বড় ভ‚মিকা রাখবে, যার মাধ্যমে বিভিন্ন মারাত্মক হুমকি মোকাবেলার পাশাপাশি মানুষের জীবনও বাঁচানো যাবে’।