বৃষ্টির অজুহাতে দাম বেড়েছে সবজির

2

নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশের কিছু কিছু এলাকায় বৃষ্টি, মৌসুম পরিবর্তনসহ নানা কারণে কয়েকটি সবজির দাম গত সপ্তাহের তুলনায় বেড়েছে। বিপরীতে কিছু সবজির দাম এবং মাংসের দাম অপরিবর্তিত দেখা গেছে। গতকাল শুক্রবার নগরীর কয়েকটি বাজার ঘুরে এসব তথ্য পাওয়া যায়।
বাজারে দেখা গেছে, বিক্রি হওয়া সবজির মধ্যে ১০ থেকে ২০ টাকা বেড়েছে চার প্রকারের সবজির দাম। এর মধ্যে কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে শসা ও টমেটো ৫০ টাকা, কাঁকরোল ৬০ টাকা এবং ২০ টাকা বেড়ে পেঁপে ৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। অপরদিকে ১০ টাকা কমেছে তিন সবজির দামে। এর মধ্যে কেজিতে ১০ টাকা কমে বরবটি ৩০ টাকা, বেগুন ও কাঁচা মরিচ ৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। অন্যান্য সবজির মধ্যে ধুন্দল ৫০ টাকা, করলা ৫০ টাকা, পটল ৪০ টাকা, ঝিঙে ৫০ টাকা, ঢেঁড়শ ও বাঁধাকপি ৪০ টাকা, লতি ৫০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৩০ টাকা, চিচিঙ্গা ৫০ টাকা, লাউ পিস ৬০ টাকা কেজি দরে এবং পানি কচু পিস ৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
তবে অপরিবর্তিত রয়েছে মাংসের দাম। ব্রয়লার মুরগি ১৬০ টাকা, সোনালি ২৪০ টাকা, দেশি ৫৬০ টাকা এবং লেয়ার ৩১০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। মাছের মধ্যে তেলাপিয়া ১৮০ থেকে ২৬০ টাকা, পাঙ্গাস ১৮০ থেকে ২২০ টাকা, রুই ৩৫০ থেকে ৩৮০ টাকা, কাতলা ৩৮০ থেকে ৪০০ টাকা, পাবদা ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা, রূপচাঁদা এক হাজার টাকা, ছুরি মাছ ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা, স্যালমন ৭০০ টাকা, পোয়া ২৫০ থেকে ৪৫০ টাকা, মৃগেল ২৬০ টাকা, নারকেলি ২৮০ টাকা, বেলে ২৬০ টাকা এবং টুনাফিশ ২৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছে।
আবার কোরবানির ঈদ ঘিরে দেশে ভোগ্যপণ্যের অন্যতম বড় পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জে দাম বেড়েছে লবঙ্গ ও দারুচিনির। সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ৫৫ টাকা বেড়ে দারুচিনি ৪৪৫ টাকা এবং ১০ টাকা বেড়ে লবঙ্গ এক হাজার ৩৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। তবে কেজিতে ২০০ টাকা কমেছে এলাচের। খাতুনগঞ্জে ৪ হাজার ২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে পণ্যটি। এর বাইরে জিরা ৬০০ টাকা, ধনিয়া ১৫০ টাকা এবং গোলমরিচ এক হাজার ১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
সবজি ব্যবসায়ীরা বলছেন, গ্রীষ্মকালীন সবজির সরবরাহ এখনও পুরোপুরি শুরু না হওয়ায় দাম কিছুটা বেশি। তাছাড়া দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বৃষ্টিপাতের কারণে সবজি পরিবহনে বেগ পেতে হচ্ছে।
রিয়াজউদ্দিন বাজারের সবজি বিক্রেতা আলী হায়দার বলেন, গ্রীষ্মের কিছু সবজি বাজারে আসা শুরু করেছে মাত্র। আরেক সবজি বিক্রেতা মোমিনুর রহমান বলেন, বৃষ্টিপাত হলে সরবরাহ বিঘিœত হয়। ফলে সব ধরনের সবজির দামই একটু বেড়ে যায়। এদিকে দামের বিষয়ে প্রশাসনের নজর নেই জানিয়ে ক্রেতারা বলছেন, ব্যবসায়ীরা নানা অজুহাতে সিন্ডিকেট করে পণ্যের দাম বাড়াচ্ছেন। যার সরাসরি প্রভাব পড়ছে সাধারণ মানুষের পকেটে।
রহমত উল্লাহ নামের এক ক্রেতা বলেন, প্রশাসনের তদারকি শুধু রমজান মাসেই সীমাবদ্ধ। অন্যান্য সময়ে তারা এসবের দিকে নজর দেন না। বাজারে সবকিছুর দাম বাড়তি। আমাদের মতো সাধারণ মানুষের শুধু চেয়ে চেয়ে দেখা ছাড়া আর কিছুই করার নেই। বাজারে দাম নিয়ন্ত্রণে সরকারের কঠোর পদক্ষেপের দাবি জানাচ্ছি।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার ও সরক্ষণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. ফয়েজ উল্যাহ পূর্বদেশকে বলেন, ‘বাজার নিয়ন্ত্রণে আমরা প্রতিনিয়ত মনিটরিং করছি। কোনো সিন্ডিকেট তৈরি করতে দেওয়া হবে না। দ্রব্যমূল্য অতিরিক্ত নিলেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বাজার দর স্বাভাবিক রয়েছে, আশা করি এমন স্বাভাবিক থাকবে। তা ছাড়া বাজার দর স্বাভাবিক রাখার জন্য আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’