সাড়ে ১৫ বছর আগে পিলখানা হত্যাকান্ডের ঘটনায় বিস্ফোরক আইনের মামলায় দুই শতাধিক আসামি জামিন পেয়েছেন। কেরাণীগঞ্জের কেন্দ্রীয় কারাগারে স্থাপিত অস্থায়ী আদালতে গতকাল রোববার শুনানি শেষে এ আদেশ দেন ঢাকার বিশেষ ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক ইব্রাহিম মিয়া।
মামলাটির সাক্ষ্যগ্রহণ ও পাঁচ শতাধিক আসামির জামিন শুনানির জন্য গতকাল রোববার দিন ঠিক করা ছিল। বেলা সাড়ে ১১টার পর আদালতের কার্যক্রম শুরু হয়। রাষ্ট্রপক্ষ মেজর সৈয়দ মো. ইউসুফ নামে এক প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষীর হাজিরা দাখিল করে। আসামিপক্ষের আইনজীবী মোহাম্মদ পারভেজ হাসান সাক্ষ্য পেছানোর আবেদন করেন।
রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি বোরহান উদ্দিন সাক্ষ্য নেওয়ার জন্য আবেদন করেন। এ নিয়ে কিছুটা তর্ক-বিতর্কের পর ১১টা ৪৭ মিনিটে সৈয়দ মো. ইউসুফ সাক্ষ্য দেওয়া শুরু করেন। সেদিন পিলখানায় কী ঘটেছিল, তিনি কীভাবে বেঁচে ফিরেছেন- এসব বিষয় সাক্ষ্যে তুলে ধরেন। প্রায় দুই ঘণ্টা শেষে তার সাক্ষ্য শেষ হয়। খবর বিডিনিউজের।
এরপর প্রায় শতাধিক আসামির জামিন শুনানি হয়; যাদের মধ্যে হত্যা মামলায় খালাস পাওয়া ২৭৭ জন এবং ১০ বছরের সাজা শেষ হওয়া ২৫৬ জন ছিলেন। এছাড়া মৃত্যুদন্ড ও যাবজ্জীবন দন্ডপ্রাপ্ত কয়েকজন আসামির জামিন চেয়ে আবেদন করা হয়।
আসামিদের পক্ষে মোহাম্মদ পারভেজ হাসান, আমিনুল ইসলাম, ফারুক আহাম্মদ জামিন শুনানি করেন। রাষ্ট্রপক্ষে বোরহান উদ্দিন জামিনের বিরোধিতা করেন। বেলা আড়াইটার দিকে জামিন প্রশ্নে শুনানি শেষ হয়। বিচারক আধাঘন্টা বিরতি দিয়ে ৩টায় জামিনের বিষয়ে আদেশ দেবেন বলে জানান।
বিরতির পর ৩টা ১৩ মিনিটের দিকে আদালতের কার্যক্রম শুরু হয়। বিচারক বলেন, যখন কোনো ইনজাস্টিস হয়ে যায়, তখন আমাদের উচিত জাস্টিজ রিস্টোর করা। যারা হত্যা মামলায় খালাস পেয়েছেন, তাদের ছেড়ে দেওয়া উচিত বলে আমার অভিমত। তবে যারা এ মামলার আসামি তারা আপাতত কারাগারেই থাকবেন। সাক্ষী তো চলবেই। বিচার শেষ হতে আর বেশিদিন লাগবে না।
পরে আদালত আড়াই শতাধিক আসামির জামিনের আদেশ দেন, যারা নিম্ন আদালত, উচ্চ আদালত ও আপিল বিভাগ থেকে খালাস পেয়েছেন। এছাড়া আপিলে যে দুই আসামির এক বছর করে সাজা হয়েছে, তাদের জামিনের আদেশও দেয় আদালত। আগামী ১০ ফেব্রুয়ারি মামলার পরবর্তী সাক্ষ্য গ্রহণের তারিখ ঠিক করা হয়।