বিশাল ঋণের বোঝা নিয়ে সরকার পরিচালনা কঠিন

9

পূর্বদেশ ডেস্ক

চীনের কাছ থেকে নেওয়া উচ্চ সুদের ঋণের সুদহার কমানো এবং ঋণ পরিশোধের রেয়াতকাল বা সময় বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছে বাংলাদেশ। চীনা রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন গতকাল মঙ্গলবার সচিবালয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গেলে উপদেষ্টা এ বিষয়ে তার সঙ্গে কথা বলেন।
সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, রেট অফ ইন্টারেস্ট নিয়ে আমরা তার সাথে কথা বলেছি, সে বলেছে দেখবে। রিপেমেন্ট পিরিয়ড আরো ১০ বছর বাড়ানোর জন্য বলেছি। খবর বিডিনিউজের।
অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সচিব মো. শাহরিয়ার কাদের ছিদ্দিকীও এ সময় উপস্থিত ছিলেন। চীনা ঋণের সুদ হার নিয়ে আলোচনার বিষয়ে তিনি বলেন, রেট অফ ইন্টারেস্ট নিয়ে উপদেষ্টা মহোদয় বলেছেন, এটা যত কমানো যায় এবং রিপেমেন্ট পিরিয়ডটা যেন বাড়ানো যায়। তারা সম্মত হয়েছে যে তারা বেইজিং হেডকোয়ার্টারে আমাদের কনসার্নটা পৌঁছে দেবে এবং তারা শীঘ্রই আমাদের জানাবে।
আওয়ামী লীগ সরকার ১৮ লাখ কোটি টাকা ঋণের বোঝা রেখে গেছে, অন্তর্বর্তী সরকার সেটা কীভাবে কমাতে চায়, সেই প্রশ্ন করেছিলেন সাংবাদিকরা।
জবাবে উপদেষ্টা বলেন, ওটা বড় প্রেশার, প্রচন্ড প্রেশার। কারণ এগুলো দিয়েছে ওরা চুক্তি করে। ডোনারদেরকে বলতে হবে এটা বিরাট প্রেশার। আমরা এগুলো রিভিউ করছি, দেখছি। আমরা এটা নিয়ে সতর্ক আছি। আমাদের নিজেদের মধ্যেও এটা নিয়ে কথা হচ্ছে। এত বড় ঋণের বোঝা নিয়ে শুরু করেছি, আমাদের জন্য খুব কঠিন। এগুলো আমরা সমাধানের চেষ্টা করব।
সৌজন্য সাক্ষাতের পর চীনা রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন সাংবাদিকদের বলেন, বাংলাদেশে অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর অর্থ উপদেষ্টার সঙ্গে এটা আমার প্রথম সাক্ষাৎ। আমাদের মধ্যে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক অব্যাহত থাকবে। আমরা একসঙ্গে কাজ করব।
চীনা অর্থায়নে বাংলাদেশে যেসব প্রকল্প চলমান রয়েছে, সেসব নিয়ে অর্থ উপদেষ্টার সঙ্গে কথা হয়েছে বলে জানান রাষ্ট্রদূত। তিনি বলেন, এসব প্রকল্প চলমান থাকবে। পাশাপাশি নতুন করে প্রয়োজনীয় সহযোগিতার বিষয়েও কথা হয়েছে।
চীনা ঋণের সুদ হার নিয়ে কোনো কথা হয়েছে কি না জানতে চাইলে রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশের দিক থেকে ঋণের সুদ হার নিয়ে যে আপত্তি উঠেছে তা নিয়েও কথা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে আলোচনার সুযোগ আছে।
গত আট বছরে ২৭ প্রকল্পে অর্থায়নের আগ্রহ দেখিয়েছিল চীন, তার মধ্যে ১০টি প্রকল্প বাংলাদেশ গ্রহণ করে। এর মধ্যে কর্ণফুলী টানেল, দাশেরকান্দি পয়ঃশোধনাগার, ফোর টায়ার জাতীয় ডেটা সেন্টার নির্মাণসহ চারটির কাজ শেষ হয়েছে।
পদ্মা রেল সংযোগ, চট্টগ্রামের সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিং বা এসপিএম, ঢাকা আশুলিয়া এক্সপ্রেসওয়ে, পিজিসিবির আওতায় বিদ্যুতের সঞ্চালন লাইন, ডিপিডিসির আওতায় বিদ্যুতের বিতরণ ব্যবস্থা, রাজশাহীতে ওয়াসার ভ‚-উপরিস্থ পানি সরবরাহ প্রকল্প চলমান আছে। চীনা রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েনের পর অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমদ এদিন কানাডার হাই কমিশনার লিলি নিকলসের সঙ্গেও বৈঠক করেন।