নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসির নিরীক্ষা দাবির ১২ হাজার ৫৭৯ কোটি ৯৫ লাখ টাকার মধ্যে গ্রামীণফোন ন্যূনতম কত টাকা দিতে পারবে, তা জানতে চেয়েছেন সর্বোচ্চ আদালত। হাই কোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে বিটিআরসির লিভ টু আপিলের শুনানি আগামী বৃহস্পতিবার পর্যন্ত মুলতবি রেখে ওই সময়ের মধ্যে গ্রামীণফোনের আইনজীবীদের তা জানাতে বলা হয়েছে।
সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ এ আদেশ দেয়।
আদালতে গ্রামীণফোনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী এএম আমিন উদ্দিন ও শেখ ফজলে নূর তাপস;সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী শরীফ ভূঁইয়া ও আইনজীবী তানিম হোসেইন শাওন। বিটিআরসির পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী মাহবুবে আলম ও খন্দকার রেজা-ই-রাকিব।
খন্দকার রেজা-ই-রাকিব পরে সাংবাদিকদের বলেন, “হাই কের্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে প্রথমে আমরা আবেদন করেছিলাম। পরে লিখিত আদেশ পাওয়ার পর বুধবার লিভ টু আপিল ফাইল করেছিলাম। আদালত আজ দুই পক্ষকেই শুনেছে, কোনো আদেশ দেয়নি। তবে কতগুলো পর্যবেক্ষণ দিয়ে আদালত বলেছে, নিম্ন আদালতে টাইটেল স্যুট (স্বত্ত চেয়ে মামলা) না করে স্যুট ফর অ্যাকাউন্টসে করা উচিৎ ছিল। এছাড়া গ্রামীণফোনের আইনজীবীদের নির্দেশনা নিতে বলেছে, এখন তারা ন্যূনতম কত টাকা দিতে পারবে। এরপর আগামী বৃহস্পতিবার আদালত আদেশ দেবে।”
গ্রামীণফোনের কাছে নিরীক্ষা আপত্তির দাবির ১২ হাজার ৫৭৯ কোটি ৯৫ লাখ টাকা এবং রবির কাছে ৮৬৭ কোটি ২৩ লাখ টাকা পাওনা রয়েছে বলে দাবি করে আসছে বিটিআরসি।
কয়েক দফা চেষ্টায় সেই টাকা আদায় করতে না পেরে লাইসেন্স বাতিলের হুমকি দিয়ে নোটিস পাঠানো হয়েছে দুই অপারেটরকে। বিটিআরসির দাবি করা টাকার ওই অঙ্ক নিয়ে আপত্তি রয়েছে গ্রামীণফোন ও রবির।
সালিশের মাধ্যমে বিষয়টির নিষ্পত্তিতে রাজি না হওয়ায় আদালতের দ্বারস্থ হয় দুই অপারেটর। তবে পরে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের উদ্যোগে বিষয়টি নিয়ে সমাধানে পৌঁছাতে গ্রামীণফোন ও বিটিআরসির কর্মকর্তাদের মধ্যে দুই দফা বৈঠকও করেন।
এরপর নিম্ন আদালতে টাইটেল স্যুট (স্বত্তের মামলা) মামলা করে গ্রামীণফোন। ওই টাইটেল স্যুট মামলাটি আদালত গ্রহণ করে। ওই টাইটেল স্যুটের অধীনেই গ্রামীণফোন বিটিআরসির পাওনা আদায়ের ওপর অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার আবেদন করে, যা গত ২৮ অগাস্ট নিম্ন আদালত খারিজ করে দেয়।
নিম্ন আদালতের খারিজ আদেশের বিরুদ্ধে পরে হাই কোর্টে আপিল করে গ্রামীণফোন।
গত ১৭ অক্টোবর সে আপিলটি গ্রহণ করে বিটিআরসির পাওনা আদায়ের ওপর দুই মাসের নিষেধাজ্ঞা দিয়ে আপিলটি শুনানির জন্য গ্রহণ করে হাই কোর্ট। আগামী ৫ নভেম্বর গ্রামীণের আপিল আবেদনটি শুনানির জন্য রাখা হয়েছে।
এ আদেশ স্থগিত চেয়ে বিটিআরসি আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে আবেদন করে। গত সোমবার চেম্বার বিচারপতি মো. নুরুজ্জামান সে আবেদনে সাড়া না দিয়ে বৃহস্পতিবার আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য রাখে।
এর মধ্যে বুধবার হাই কোর্টের আদেশর বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল করে বিটিআরসি। সে লিভ টু আপিলের আংশিক শুনানির পর আগামী বৃহস্পতিবার পর্যন্ত তা মুলতবি রাখা হয়।