ক্ষমতার পালাবদলের পরিস্থিতিতে পর্ষদ ভেঙে দেওয়ার সাত মাসের বেশি সময় পর তৈরি পোশাক খাতের উদ্যোক্তাদের সংগঠন বিজিএমইএ’র নেতৃত্ব নির্বাচনে ভোটগ্রহণ হতে চলেছে আজ শনিবার। ঢাকা ও চট্টগ্রামের দু’টি কেন্দ্রে সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত ভোট নেওয়া হবে। এর মধ্য দিয়ে উঠে আসবে সংগঠনটির ২০২৫-২৭ মেয়াদের নেতৃত্ব।
এবারের নির্বাচনে ৩৫ পরিচালকের বিপরীতে তিনটি প্যানেলের মোট ৭৬ প্রার্থী অংশ নিচ্ছেন। ফোরাম এবং সম্মিলিত পরিষদ প্যানেল সব পরিচালক পদে প্রার্থী দিলেও, আরেক প্যানেল ঐক্যজোট পরিষদ দিয়েছে ছয়টিতে।
ঢাকার র্যাডিসন বøæ ওয়াটার গার্ডেন হোটেল ও র্যাডিসন বøæ হোটেল চট্টগ্রাম বে ভিউতে ভোটগ্রহণ হবে। এরপর পরিচালকরা সংগঠনের সভাপতি, সহ-সভাপতিসহ সাংগঠনিক নেতৃত্ব ঠিক করবেন। খবর বিডিনিউজের
এবার তিন প্যানেলের প্রতিশ্রæতির মধ্যে রয়েছে সদস্য কারখানার স্বার্থরক্ষা, পোশাক খাতের জন্য আলাদা মন্ত্রণালয় গঠনের দাবি উপস্থাপন, ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের সহায়তা, শ্রমিক-মালিক অধিকার সংরক্ষণ, পোশাক শিল্পের নানা উন্নয়ন কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়ন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব সামাল দেওয়া ও গ্যাস-বিদ্যুতের সমস্যা সমাধানে চেষ্টা করা।
নির্বাচনি ইশতেহারে ১২ দফা প্রতিশ্রæতি দিয়েছে সম্মিলিত পরিষদ। এ প্যানেল লিডার আবুল কালাম। আর ফোরাম তাদের ইশতেহারে ১৪ দফা তুলে ধরেছে; এ প্যানেলের লিডার মাহমুদ হাসান খান। অপরদিকে মোহাম্মদ মহসিনের নেতৃত্বে ঐক্য পরিষদ প্যানেল ১৬ দফা ইশতেহার দিয়েছে।
গণআন্দোলনে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগের পতন হলে বিজিএমএইএ’র পর্ষদ ভেঙে দেওয়ার দাবি ওঠে। সে বছরের ২০ অক্টোবর পর্ষদ ভেঙে ইপিবির ভাইস-চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেনকে বিজিএমইএ’র প্রশাসকের দায়িত্বে বসায় সরকার। তার ওই দায়িত্বের ১২০ দিনের মধ্যে নির্বাচন আয়োজনের কথা থাকলেও ভোটার তালিকা হালনাগাদসহ তৈরি পোশাক খাতের শ্রম অসন্তোষ তৈরি হলে সেটি পিছিয়ে যায়। নির্দিষ্ট সময়ের পর আরও চার মাস পার হয়ে বিজিএমইএতে নির্বাচন হতে যাচ্ছে।
এবারের নির্বাচনে কেবল সচল কারখানার উদ্যোক্তাদের ভোটার করায় ভোটার সংখ্যা কমেছে। আগের নির্বাচনে ২ হাজার ৪৯৬ জন ভোটার হলেও এবার এ সংখ্যা ১ হাজার ৮৬৫। এর মধ্যে ঢাকায় ১ হাজার ৫৬১ জন ও চট্টগ্রামে ভোটার ৩০৩ জন।
প্রার্থী কারা
সম্মিলিত পরিষদের ঢাকার প্রার্থী হয়েছেন আবুল কালাম, ফারুক হাসান, খন্দকার রফিকুল ইসলাম, আবদুল্লাহ হিল রাকিব, আসিফ আশরাফ, মশিউল আজম সজল, মোস্তাজিরুল শোভন ইসলাম, আশিকুর রহমান, ফিরোজ আলম, মো. নুরুল ইসলাম, সৈয়দ সাদিক আহমেদ, মোহাম্মদ সোহেল সাদাত, মো. শাহদাৎ হোসেন, মহিউদ্দিন রুবেল, রেজাউল আলম মিরু, আবরার হোসেন সায়েম, মোহাম্মেদ কামাল উদ্দীন, সাইফুদ্দিন সিদ্দিকী সাগর, তামান্না ফারুক থিমা, মির্জা ফায়েজ হোসেন, হেলাল উদ্দিন আহমেদ, লিথি মুনতাহা মহিউদ্দিন, এ কে এম আজিমুল হাই, মাঞ্জুরুল ফয়সাল হক, এস এম মনিরুজ্জামান ও মোহাম্মদ রাশেদুর রহমান।
সম্মিলিত পরিষদের চট্টগ্রামের প্রার্থীরা হলেন এসএম আবু তৈয়ব, রাকিবুল আলম চৌধুরী, মোহাম্মদ মুসা, অঞ্জন কুমার দাশ, নাফিদ নবি, সৈয়দ মোহাম্মেদ তানভীর, মোস্তফা সারোয়ার রিয়াদ, মো. আবসার হোসেন ও গাজী মো. শহীদ উল্লাহ।
ফোরাম প্যানেলের ঢাকার প্রার্থী মাহমুদ হাসান খান, মোহাম্মদ আবদুস সালাম, কাজী মিজানুর রহমান, শিহাব উদ্দোজা চৌধুরী, ইনামুল হক খান, হাসিব উদ্দিন, মোহাম্মদ সোহেল, শেখ এইচএম মোস্তাফিজ, ভিদিয়া অমৃত খান, মোহাম্মদ আব্দুল রহিম, শাহ রাঈদ চৌধুরী, মিজানুর রহমান, মোহাম্মদ হোসনে কমার আলম, এবিএম শামছুদ্দিন, নাফিস উদ দৌলা, সুমাইয়া ইসলাম রোজালিন, আনোয়ার হোসেন চৌধুরী, মজুমদার আরিফুর রহমান, মোজাম্মেল হক ভ‚ঁইয়া, ফাহিমা আক্তার, আসেফ কামাল পাশা, রশীদ আহমেদ হোসাইনী, রুমানা রশীদ, সামিহা আজিম, রেজোয়ান সেলিম ও ফয়সাল সামাদ।
ফোরামের চট্টগ্রামের প্রার্থীরা হলেন সেলিম রহমান, মোহাম্মদ সাইফ উল্যাহ মানসুর, মোহাম্মদ রফিক চৌধুরী, এমডি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী, সাকিফ আহমেদ সালাম, এনামুল আজিজ চৌধুরী, মো. এমদাদুল হক চৌধুরী, মির্জা আকবর আলী চৌধুরী ও রিয়াজ ওয়াইজ।
অপরদিকে ঐক্যজোট পরিষদের প্রার্থী হলেন মোহাম্মদ মহসিন, দেলোয়ার হোসাইন, খালেদ এমডি ফয়সাল ইকবাল, একেএম আবু রায়হান, এমডি মহসিন অপু ও শেখ এরশাদ উদ্দিন।
বিজিএমইএ নির্বাচনি বোর্ডের চেয়ারম্যান বাংলাদেশ কেমিকেল ইন্ডাস্ট্রিজ কর্পোরেশনের (বিসিআইসি) সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ইকবাল।