রাঙ্গুনিয়া প্রতিনিধি
বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য হুম্মাম কাদের চৌধুরী বলেছেন, ‘সামনের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের অংশগ্রহণ বিষয়ে অনেকে অনেক মতামত দিচ্ছেন। আমার কথা হচ্ছে, ১৬ বছর ধরে আমরা যতগুলো ভাই হারিয়েছি, সন্তান হারিয়েছি, আমাদের অনেক ভাই গুম হয়েছে, খুন হয়েছে, আমি আমার বাবা হারিয়েছি, এসবের বিচার যতদিন না হয়, ততদিন পর্যন্ত আমার মনে হয় আওয়ামী লীগকে মাঠে ফিরতে দেয়া উচিত হবে না’।
গতকাল শুক্রবার বিকালে রাঙ্গুনিয়া উপজেলা বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের আয়োজনে দক্ষিণ রাঙ্গুনিয়া এম শাহ আলম চৌধুরী ডিগ্রি কলেজ মাঠে আয়োজিত ইফতার ও দোয়া মাহ্ফিলে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের অনেক আত্মীয়-স্বজন আওয়ামী লীগ করেন। যারা আওয়ামী লীগের সাথে আছে, তাদের সাথে আমাদের কোনো সম্পর্ক নেই। অনেকেই সমর্থন করেন, তাদের মাফ করা যায়। কিন্তু তার আগে তাদের ক্ষমা চাইতে হবে। আওয়ামী লীগের মানুষরা যারা রাঙ্গুনিয়ায় আছে তারা ঘোমটা পরে লুকিয়ে আছে। শোনা যাচ্ছে এখনো রাতের আঁধারে তারা হামলা করছে বিএনপির নেতাকর্মীদের উপর।তার একটাই কারণ, আমাদের মন বড়, মোমবাতির আলো দিয়ে তাদের খুঁজছি না, তাদের বিরুদ্ধে আমরা মামলা করছি না। তবে তাদের সতর্ক করছি, তারা যদি ভালো না হয়ে যায়, মামলা আরও আসবে, হামলা এবার তারা করবে না, হামলা কোথা থেকে হবে সেটা আপনারা বুঝে নেন। আমরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে কাজ করতে চাই, রাজনীতি করতে চাই।’
হুম্মাম কাদের চৌধুরী বলেন, ‘আমাদের দলের মধ্যে কিছু মানুষ আছে, যারা উষ্কানি দিচ্ছে। আমাদের মধ্যেই কিছু কিছু মানুষ আছে, যারা অবৈধ কাজের সাথে জড়িয়ে যাচ্ছে, চাঁদাবাজির সাথে জড়িয়ে যাচ্ছে। তাদের সতর্ক করে বলছি, তারেক রহমান সাহেবের নির্দেশ, যারা এসব অবৈধ কাজের সাথে জড়িত থাকবে, তাদের দল থেকে বহিষ্কার করে দেয়া হবে। এখানে গ্রæপিং দেখা হবে না, সে আমার ঘরের মানুষ হলেও ছাড় দেয়া হবে না’।
হুম্মাম বলেন, ২০০৮ সালের নির্বাচনে হাছান মাহমুদ বলেছিলো- তার মতো আমার বাবার কোনো ডিগ্রি নেই। আমি তখন বলেছিলাম, আমার বাবা ৩৩ বছর রাঙ্গুনিয়া রাউজান আর ফটিকছড়ির গোলামী করে ডিগ্রি নিয়েছেন তাদের থেকে। আমিও একই ডিগ্রি আপনাদের থেকে নেবো। সামনের নির্বাচনে বেগম জিয়া; তারেক রহমান সাহেব যে সিদ্ধান্ত দেবেন সেই অনুযায়ী কাজ করবো।
বাবার কবর প্রসঙ্গে হুম্মাম কাদের চৌধুরী বলেন, আমার বাবার শেষ ইচ্ছে ছিল রাঙ্গুনিয়াতে যেনো তার কবর দেয়া হয়। কিন্তু আওয়ামী লীগ তা করতে দেয়নি। আমার দাদা মরহুম ফজলুল কাদের চৌধুরীর একটা আত্মার সম্পর্ক ছিলো রাঙ্গুনিয়ার মানুষের সাথে। রাঙ্গুনিয়াতে আমার বাবা বাড়ি করেছেন। আমি ওয়াদা করছি, সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর পরিবারের পারিবারিক কবরস্থান রাঙ্গুনিয়ার মাটিতেই হবে। এখন থেকে প্রতি ঈদ রাঙ্গুনিয়ার মানুষের সাথে করবো। আমার দুঃখের সময় আপনারা আমার পাশে ছিলেন, ভালো দিনেও আপনারা আমার পাশে আছেন। যতদিন বেঁচে আছি আমিও সুখে-দুঃখে রাঙ্গুনিয়ার মানুষের সাথে থাকবো।
দোয়া ও ইফতার মাহ্ফিলে সভাপতিত্ব করেন উত্তর জেলা বিএনপি নেতা লায়ন শওকত আলী নূর। হেলাল উদ্দিন আহমেদ ও আবুল হোসেন চৌধুরীর যৌথ সঞ্চালনায় এতে প্রধান বক্তা ছিলেন উপজেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহব্বায়ক প্রফেসর মোহাম্মদ মহসিন। বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহব্বায়ক অ্যাড. কামাল হোসেন চৌধুরী, উত্তরজেলা যুবদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি মো. ইউসুফ চৌধুরী, জাহাঙ্গীর চৌধুরী, পৌর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহব্বায়ক খোরশেদ আলম, পৌর বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব হেলাল উদ্দিন শাহ, পৌরসভা বিএনপির যুগ্ম আহব্বায়ক এখতিয়ার হোসেন, সাবেক পৌর মেয়র নুরুল আমিন, উত্তরজেলা ছাত্রদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি ভিপি মো. আনছুর উদ্দিন, বিএনপি নেতা রফিকুল ইসলাম, ইউসুফ শিকদার, উপজেলা ছাত্রদলের আহব্বায়ক আবু বক্কর প্রমুখ।