পূর্বদেশ ডেস্ক
রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর ছুটিতে পাঠানো হাই কোর্টের বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামানকে অপসারণ করা হয়েছে। সংবিধান অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি তাকে বুধবার অপসারণ করেছেন বলে পরদিন এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য দিয়েছে আইন মন্ত্রণালয়। শেখ হাসিনা সরকারের সময়ে নিয়োগ পাওয়া বেশ কয়েকজন বিচারককে অপসারণের দাবি ওঠার পর গত ১৬ অক্টোবর ১২ বিচারপতিকে ছুটিতে পাঠান প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ। তাদের একজন ছিলেন খোন্দকার দিলীরুজ্জামান।
এর আগে গত ৬ জানুয়ারি সুপ্রিম কোর্ট কয়েকজন বিচারপতির বিরুদ্ধে ওঠা নানা অভিযোগ খতিয়ে দেখতে সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিলের তদন্ত নামার তথ্য দিয়েছিল। সেদিন বলা হয়েছিল, এ বিষয়ে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের নির্দেশনা পাওয়ায় কাউন্সিল পরের সপ্তাহে তা তদন্ত শুরু করবে।
তারও আগে গত ১৫ ডিসেম্বর সুপ্রিম কোর্ট আরেক বিজ্ঞপ্তিতে বলেছিল, হাই কোর্টের ‘কয়েকজন’ বিচারপতির বিষয়ে তদন্ত শেষে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের কাছে প্রতিবেদন পাঠিয়েছে সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিল। উভয় সময়েই তদন্তের আওতায় আসা বিচারকদের নাম প্রকাশ করা হয়নি। খবর বিডিনিউজের
ছুটিতে পাঠানো ১২ বিচারপতির মধ্যে আতাউর রহমান খান নভেম্বরে এবং আশীষ রঞ্জন দাস ৩১ জানুয়ারি অবসরে যান। স্থায়ী না হওয়ায় বিচারক আসন থেকে ১ ফেব্রæয়ারি বিদায় নেন আমিনুল ইসলাম ও এস এম মাসুদ হোসেন দোলন। কানাডা থেকে পদত্যাগ করেন শাহেদ নূরউদ্দিন। তারপর ২০ মার্চ অপসারণ করা হয়ে বিচারপতি খিজির হায়াতকে। এরপর বুধবার দিলীরুজ্জামানের বিরুদ্ধেও একই ব্যবস্থা নেওয়া হলো।
গত ২০ অক্টোবর বিচারপতি অপসারণে সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিল পুনরুজ্জীবিত করে রায় দেয় আপিল বিভাগ। এর ফলে বিচারপতি অপসারণ প্রক্রিয়া নিয়ে গত সরকারের সময় যে জটিলতা তৈরি হয়েছিল, তার অবসান ঘটে।
বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনীর মাধ্যমে বিচারপতি অপসারণ ক্ষমতা সংসদের হাতে ন্যস্ত করা হলে সর্বোচ্চ আদালতের সঙ্গে টানাপড়েন তৈরি হয়। এরপর এক রিট মামলার রায়ে ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করে আপিল বিভাগ।
২০১৭ সালের ওই রায়েই বিচারপতি অপসারণে সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিল পুনরুজ্জীবিত করার কথা বলা হয়। তখনকার প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার নেতৃত্বাধীন আপিল বেঞ্চের ওই রায় সরকারের সঙ্গে সর্বোচ্চ আদালতের টানাপড়েনে নতুন মাত্রা দেয়। রাষ্ট্রপক্ষ ওই রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন করলেও পরে আর শুনানির উদ্যোগ নেয়নি।
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর রিভিউ আবেদনটির শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগ বিচারপতি অপসারণে সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিল পুনর্বহাল করে।